—প্রতীকী ছবি।
কেরলে গেলে পেটের ভাত জুটবে, আর এখানে থাকলে কপালে অশান্তি জুটবে। ভোট নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই এমন কথা শোনালেন ডোমকলের কুপিলা গ্রামের পরিযায়ী শ্রমিক মতিন মণ্ডল। মতিন বললেন, "আর নয় বাপু, কেরলেও ভোট দেখেছি। সেখান থেকে অনেক শিক্ষা হয়েছে। ভোট নিয়ে মাতামাতি করে পাটের জমিতে শুয়ে থেকে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কোনও লাভ নেই। আমরা আর ভোটের ঝামেলায় নেই।"
ডোমকলে ভোট এলেই মানুষ সিঁটিয়ে যান। ভোট মানেই রক্ত। বোমা-গুলির লড়াই। একটা সময় রাজনৈতিক দলগুলির হয়ে একেবারে প্রান্তিক এলাকার সাধারণ মানুষই সেই লড়াই চালাতেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। গ্রাম আড়াআড়ি ভাবে ভাগ হয়ে যেত রাজনৈতিক ভাবে। ভাগ হয়ে যেত মাচা থেকে চায়ের দোকান। আর সন্ধ্যা নামলেই বোমা-গুলির শব্দে কেঁপে উঠত এলাকা। কিন্তু প্রায় এক যুগ ধরে এই লড়াই অনেকটাই কমে গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, এর পিছনে যেমন রাজনৈতিক সমীকরণের একটা ভূমিকা রয়েছে, তেমনই ভাবে বড় ভূমিকা আছে গ্রাম থেকে হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ভিন্ রাজ্যে চলে যাওয়া। সেখানে গিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে সচ্ছল হওয়ার পরেই লড়াইয়ের ময়দানে থাকা তরুণ-যুবকের মনোভাবের বদল ঘটেছে। কেবল মনোভাব নয়, ভিন রাজ্য থেকে আয় করা টাকায় বদলে যাচ্ছে তাঁদের সংসারের চেহারা। টিনের চাল হয়েছে ছাদ। বাড়িতে ঢুকেছে টিভি, মোটরবাইক এবং আরও আধুনিক সরঞ্জাম।
আমিনাবাদের সমীর মোল্লা যেমন বলেন, ‘‘একটা সময় দেখতাম আমাদের গ্রামে রাজনৈতিক লড়াইয়ে উভয়পক্ষ একেবারে ধর্মযুদ্ধের মতো মাঠে নেমে পড়ত। ভাই ভাইয়ের দিকে বোমা ছুড়ত। আর সেই লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে আমাদের মতো অনেকেই বোমা বাঁধত, কেউ বা তাদের সহযোগিতা করত। আবার গুলি-বন্দুকের কারবারেও নেমে পড়ত যুবকেরা।’’ মন্টু মণ্ডল বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন কেরলে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করছি। সেখানেও বেশ কয়েকটি নির্বাচন দেখেছি। নির্বাচনের দিন শাসক-বিরোধীরা যে ভাবে মিলেমিশে থাকে সেটা প্রথমে দেখে অবাক হয়েছি। কিন্তু পরে বুঝতে পেরেছি এটাই হওয়া উচিত।"
পরিযায়ীদের দাবি, ভোট নিয়ে মাতামাতি করার আর সময় নেই। যদি সুষ্ঠু পরিবেশ থাকে ভোটটা দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy