নিজের এলাকায় সংগঠন ঢেলে সাজাচ্ছেন মহুয়া মৈত্র। ফাইল চিত্র
নয়াদিল্লি থেকে ফিরে সংগঠন গোছাতে মাঠে নেমেছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ তথা দলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহুয়া মৈত্র। কিন্তু তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ভাল না থাকায় পক্ষপাত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে নাকাশিপাড়ায়।
জেলায় ফেরা ইস্তক মহুয়া জোর দিয়েছেন বুথ স্তরের সংগঠনের উপর। দল সূত্রের খবর, তিনি কোথায় কখন যাবেন, তার খবর অনেক সময়েই ব্লক স্তরের নেতাদের কাছে থাকছে না। লোকসভা ভোটের প্রচারে সময়েও মহুয়া বুথস্তরের কর্মীদের উপরেই বেশি জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু সংগঠন ঢেলে সাজাতে যে সব পরিবর্তন করা হচ্ছে, তাতে নাকাসিপাড়ায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
তৃণমূল সূত্রের দাবি, ব্লকভিত্তিক নতুন কমিটি তৈরি করে সংগঠন চাঙ্গা করার কাজ জেলায় শুরু হয়েছে। যাঁরা কাজ করেন না, তাঁদের কমিটিতে জায়গা দেওয়া হবে না। গত বুধবার মহুয়া কালীগঞ্জ ব্লকের নানা অঞ্চলের প্রধান, অঞ্চল সভাপতি এবং বুথ সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করেন। পরে নাকাশিপাড়াতেও ব্লক কমিটি নিয়ে আলোচনায় বসেন। ঠিক হয়েছে, নাকাশিপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কালীগঞ্জ ব্লকের মধ্যবর্তী দু’টি অঞ্চল রাজারামপুর ঘোড়াইক্ষেত্র ও পালিতবেঘিয়া অঞ্চলের দায়িত্বে থাকবে কালীগঞ্জের ব্লক কমিটি। অন্য দিকে, নাকাশিপাড়া ব্লকের অন্তর্গত চারটি অঞ্চল বিক্রমপুর, ধনঞ্জয়পুর, হরনগর ও বিলকুমারী এই চারটি পঞ্চায়েতের সংগঠন দেখার দায়িত্বে থাকবে পলাশিপাড়া বিধানসভা কেন্দ্র।
নাকাশিপাড়া নেতাকর্মীদের একটি অংশের প্রশ্ন, যদি বিধানসভা-ভিত্তিক সংগঠন হয়, তা হলে কালীগঞ্জ ব্লকের দুই অঞ্চলের দায়িত্ব কেন দেওয়া হল না? আবার যদি ব্লকভিত্তিক সংগঠন হয়, চারটি পঞ্চায়েতের দায়িত্ব কেন নেই? যে নাকাশিপাড়া বিধানসভা কেন্দ্র গত লোকসভা ভোটে মহুয়া মৈত্রকে প্রায় পাঁচ হাজার ভোটে লিড দিয়েছে, সেখানকার নেতাকর্মীদের কি তবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না? তা ছাড়া, প্রায় সর্বত্র যেখানে ব্লক ধরে সংগঠন হচ্ছে, নাকাশিপাড়ার থেকে চারটি পঞ্চায়েত কেড়ে নেওয়া হল কেন?
তৃণমূলের একাংশের দাবি, এর অন্যতম কারণ স্থানীয় বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির সঙ্গে সাংসদের দূরত্ব। গত লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার আগেই যখন মহুয়াকে কৃষ্ণনগর কেন্দ্র এলাকা দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়, সেই সময় থেকেই ব্লক সভাপতি অশোক দত্তের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। এক বার প্রকাশ্য সভায় কথা কাটাকাটিও হয়। সাংসদ হওয়ার পরে আবার মহুয়া যখন টানা দিল্লিতে ছিলেন, নাকাশিপাড়ার বিধায়ক বিধায়ক কল্লোল খাঁ তাঁর ফোন না ধরা নিয়ে প্রকাশ্যেই মুখ খোলেন। জেলা পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যখন জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন, কল্লোল সেখানেও মহুয়ার বিরুদ্ধে মুখ খোলেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।
ব্লক সভাপতি ও বিধায়কের সঙ্গে সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহুয়ার এ হেন সম্পর্কের জেরেই তাঁদের ক্ষমতা ছাঁটা হয়েছে বলে নাকাশিপাড়ার বহু নেতাকর্মীর ধারণা। নাকাশিপাড়া ব্লক সভাপতি অশোক দত্ত অবশ্য বলেন, ‘‘মহুয়ার সঙ্গে আমার সম্পর্ক কেন খারাপ হবে? আর সংগঠনের বিষয়টি দলীয় সিদ্ধান্ত, দলের মধ্যে বসেই মিটিয়ে নেওয়া হবে।’’ আর বিধায়ক কল্লোল খাঁ বলেন, ‘‘উনি জেলা সভাপতি। উনি যদি মনে করেন, এই ভাবেই সংগঠনের ভাল হবে, আমি বাধা দেব না।’’ বারবার ফোন করেও মহুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠিয়েও তার জবাব মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy