Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

সান্ধ্য উল্লাস ভুলে গিয়ে বিষণ্ণ পানীয়ের গেলাস

পথের ধারে ধাবা কিংবা শহরের বারে ভিড় অনেকটাই কম। যাঁরা আসছেন তাঁদের ‘চিয়ার্স’-এর বহরও আগের মতো নেই। নিট ফল, গত এক মাসে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে মদ বিক্রি এক ধাক্কায় অনেকটা কমে গিয়েছে।

শুভাশিস সৈয়দ ও সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর, কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০৬
Share: Save:

নোট বাতিলের কোপ পড়েছে পানীয়ের গেলাসেও।

পথের ধারে ধাবা কিংবা শহরের বারে ভিড় অনেকটাই কম। যাঁরা আসছেন তাঁদের ‘চিয়ার্স’-এর বহরও আগের মতো নেই। নিট ফল, গত এক মাসে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে মদ বিক্রি এক ধাক্কায় অনেকটা কমে গিয়েছে।

সন্ধ্যা নামলেই জাতীয় সড়ক লাগোয়া ছোট-বড় ধাবার খাটিয়াতে লোকজনের ভিড় লেগে থাকত। দিশি কিংবা বিলিতির সঙ্গে চানাচুর, ভুজিয়ার জোগান দিতে হিমশিম খেতেন কর্মীরা। গমগম করত শহরের বারগুলোও। কিন্তু ৮ নভেম্বরের পরে ধাবা কিংবা বারে সেই ভিড় এখন অনেকটাই পাতলা।

রাজ্যের ‘ফরেন লিকার, কান্ট্রি লিকার অফ অ্যান্ড অন শপ, হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর নদিয়ার জেলা সম্পাদক মিহির চক্রবর্তী বলছেন, “নোট বাতিলের ফলে মানুষের হাতে নগদের জোগান কম। আর সেই কারণেই মদ বিক্রি প্রায় চল্লিশ শতাংশ কমে গিয়েছে।”

রাজ্য ফরেন লিকার সিএস অফ এবং অন শপ অ্যান্ড হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গৌতম মুখোপাধ্যায় জানান, যে দোকানে প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকার মদ বিক্রি হতো, সেই দোকানে বিক্রি নেমে আসে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকায়। মদ ব্যবসায়ীদের অনেকেই পাঁচশো ও এক হাজার টাকার নোট নিতে রাজি না হওয়ায় ক্রেতার সংখ্যা কমেছে। তেমন ক্রেতা না থাকায় অনেকেই তাড়াতাড়ি মদের দোকান ও বার বন্ধ করে দিচ্ছিলেন।

এমন খুচরো ঝামেলায় বেজায় চটেছেন পান রসিকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, দেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে, কালো টাকা থাকবে না, সে তো ভাল কথা। কিন্তু বরফের বদলে সেই ঝক্কিটাই যদি ঝপাং করে মদের গেলাসে ভাসে, তাহলে কারই বা ভাল লাগে? কৃষ্ণনগর শহর লাগোয়া ধাবা থেকে বেরিয়ে এক যুবক বলছিলেন, ‘‘আর ভাল্লাগে না মশাই। দিনভর খাটাখাটনির পরে রাতে এসে যে শান্তিতে একটু গলা ভেজাব, সে উপায় নেই। ধাবাতে ঢুকতে না ঢুকতেই শুনতে হচ্ছে—‘বড় নোট দেবেন না। খুচরো দিতে পারব না।’ কী বেরসিক কারবার বলুন তো!’’

জেলা আবগারি দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, গত বছরের ডিসেম্বর মাসের তুলনায় এ বছর ডিসেম্বর মাসে মদ বিক্রির পরিমাণ কমেছে। কৃষ্ণনগরের এক মদ ব্যবসায়ী আবার জানাচ্ছেন, খুচরো সমস্যায় তাঁর অনেক বাঁধা ক্রেতা ‘ফরেন’ ছেড়ে দিশিতে ঝুঁকেছেন।

আবগারি দফতরের জেলা আধিকারিক দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, ‘‘নোট বাতিলের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে মদ বিক্রিতে। তুলনামূলক ভাবে দেখলে প্রতি মাসে যে হারে মদ বিক্রি হয়ে থাকে, তার তুলনায় গত নভেম্বরে দিশি ও বিদেশি মদ বিক্রি অনেক কমে গিয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Liquor Demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy