ভাগীরথীর পাড়ে। নিজস্ব চিত্র।
ঐতিহাসিক পলাশি মনুমেন্ট থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই তেজনগর শ্মশান। শ্মশানের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ভাগীরথী। অপর প্রান্তে, মুর্শিদাবাদের রামনগর ঘাট। ওই তেজনগর শ্মশানঘাটের উপরে কালীগঞ্জের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ তো বটেই, পড়শি ব্লক, পলাশিপাড়া, তেহট্টের মানুষও ভরসা করেন।
বর্তমানে শ্মশানঘাটে বৈদ্যুতিক চুল্লির কাজ চলছে। দাহ করার জন্য যে চুল্লি রয়েছে তা ভাগীরথী থেকে কিছুটা দূরে হওয়ার কারণে ভাগীরথীর ধারেই বাঁশ ও কাঠ দিয়ে অস্থায়ী ঝিল তৈরি করে দেহ সৎকারের কাজ চালানো হচ্ছে। ওই শ্মশান ঘাটে কে, কখন, কার শব দাহ করতে আসছেন, তা দেখার কেউ নেই। চিকিৎসকের দেওয়া মৃত্যু শংসাপত্র খতিয়ে দেখার তো প্রশ্নই নেই! তবে দাহ কাজ শেষে তেজনগর শ্মশান উন্নয়ন কমিটির পক্ষ থেকে একটি রসিদ দেওয়া হয়। ওই রসিদ দেখিয়ে সপ্তাহখানেক পর ডোমের টিপ ছাপ দেওয়া একটি শংসাপত্র দেওয়া হয়। ওই শংসাপত্র দেখিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে দেওয়া হয় সরকারি নথিভুক্ত মৃত্যু শংসাপত্র।
প্রশ্ন উঠেছে, ব্লকের পরিচিত ব্যস্ততম শ্মশানে কাগজপত্র দেখভাল করার কেউ নেই কেন?
যদিও ওই শ্মশান-কমিটির দাবি, কেউ দাহ করাতে নিয়ে এলে কমিটির তরফ কাগজ চাওয়া হয়। অনেকেই কাগজ আনেন না। তবে সপ্তাহখানেক পরে যখন মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে দাহকার্যের প্রমাণ নিতে আসে, সেই সময়ে যে পঞ্চায়েতের বাসিন্দা, সেই পঞ্চায়েতের প্রধানের শংসাপত্র অথবা ডাক্তারি নথি আনতেই হয়।
ওই শ্মশান কমিটির সম্পাদক অনুপম মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা অনেক বার চেষ্টা করেছি। তবে গ্রামাঞ্চলে কেউ শুনতে চায় না। আমরা আলোচনা করে চিকিৎসকের শংসাপত্র আনা আবশ্যিক করব।’’
পঞ্চায়েত সদস্য ধর্মরাজ মণ্ডল বলেন, ‘‘মৃতদেহ আনার সময় অনেকেই কাগজ আনেন না। তবে আমরা কড়াকড়ি করার চেষ্টা করছি। জেলায় একটা ঘটনা শুনেছি। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে নিয়ম কড়া করব।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, অনেক ক্ষেত্রে আত্মহত্যা বা অন্য কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় মৃত ব্যক্তির পরিবার আইনি বিষয় এড়াতে পুলিশকে না জানিয়ে গ্রামের মাতব্বরদের জানিয়ে দাহ করে দেয়। কিছু দিন আগেই কালীগঞ্জ এলাকায় এক মহিলার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কয়েক মাস পরে মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে অভিযোগ করা হয়। পরবর্তীতে কবর থেকে দেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
পলাশি দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বেবি বিবি বলেন, ‘‘বাইরে পঞ্চায়েত বা এলাকা থেকে দেহ এলে কমিটি আমাদের কিছু জানায় না। তাই আমাদের কাছে কেউ কাগজ চাইতে এলে আমরাও শংসাপত্র দিই না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy