প্রতীকী ছবি।
তখন বর্ধমান জেলা দু’ভাগ হয়নি। বর্ধমানের কাটোয়ার কাছে গঙ্গাটিকুরির মজুমদার পদবিধারী ব্রাহ্মণ বংশ একটি কালী পুজোর সূচনা করেন। এই পরিবারের পুজো ধুমধাম করে হতো। পুজোর পর বিসর্জন। গঙ্গায় ভাসানের জন্য প্রতিমা নিয়ে আসার রীতি ছিল মুর্শিদাবাদের শক্তিপুরে গঙ্গার ঘাটে।
এমনই কালীপুজোর শেষে প্রতিমা আনা হয়েছে শক্তিপুর ঘাটে। কিন্তু বিসর্জনের পর কাঠামো নড়াতে পারেননি একশো জন মানুষ মিলেও। কথিচ রয়েছে, দেবী সেই সময় স্বপ্নাদেশ দেন। স্বপ্নাদেশে জানান তিনি আর ফিরবেন না, তিনি চান তাঁর পুজো শক্তিপুরেই দেওয়া হোক। সেই শুরু। প্রায় ৩০৫ বছরের প্রাচীন কালী এই দেবী পূজিত হন শক্তিপুরের পোড়ামাতলা মন্দিরে। বর্তমানে ভাগীরথী নদী তীরে মন্দিরে দেবীর পুজো। তারপর অনেক বছর কেটে গিয়েছে প্রচুর ভক্ত মাকে ঘিরে পুজো দেখছে। পুজো শেষে আরতি শুরু হয়েছে। চলছে মহানন্দে আরতি। জোড়াল বাদ্যযন্ত্র, কাঁসর ,ঘন্টা বাজছে। চারি দিকে ধুপের ধোঁয়া। এর মাঝে পুরোহিতের আরতির আগুন থেকে দেবীর সাজে আচমকা আগুন ধরে যায়। দাউদাউ করে সব সাজ ও প্রতিমার চুল পুড়ে যায়। প্রতিমার শরীরের অনেক অংশ পুড়ে যায়। এই ঘটনার পর গ্রামের মানুষ ও ভক্তরা আরতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন। তারপর থেকে পাকাপাকি ভাবে বন্ধ আরতি। শক্তিপুরের পোড়ামাতলা মন্দিরে আরতি হয় না। এই ঘটনার পর শক্তিপুরের এই কালী পোড়ামাতলার কালী নামে পরিচিত হয়। এই পুজো এলাকার প্রাচীন পুজো। পুজোয় কোন চাঁদা নেওয়া হয় না। পুজোর মানসিক ও পুজোর অর্ঘ থেকেই এই পুজো চলে। নতুন মন্দির ও নাট মন্দির তৈরি হয়েছে গত ১৫ বছর আগে। সেখানেই এখন পুজো হয়।
পোড়ামা নামটি কোথা থেকে এসেছে তা নিয়ে এলাকায় নানা কথা প্রচলিত রয়েছে। নবদ্বীপে পোড়ামাতলা রয়েছে। সেখানকার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রয়েছে, না কি আগুন লেগে গিয়েছিল বলে দেবীর নাম পোড়ামা হয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
শক্তিপুর পোড়ামাতলা পুজো কমিটি সম্পাদক বামদেব দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘এবছর এই প্রতিমা ৩০৫ বছরে পা দিল। জেলা ও জেলার বাইরের প্রচুর মানুষ এই পুজোয় অংশ গ্রহন করে। প্রচুর মানুষ এই পুজোতে যোগ দেন। তবে এই বছর কোভিড বিধি মেনে পুজোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, মন্দিরে এ বার বড় প্যান্ডেল হচ্ছে না। মন্দিরের প্রবেশ পথে স্যানিটাইজ়ারের গেট রাখা হবে। মন্দিরে প্রাঙ্গণে বড় গ্রামীণ মেলাও বসেছে না। প্রচুর মানুষকে প্রসাদ খাওয়ানো হয়। সেই মহোৎসব এ বার বন্ধ। সঙ্গে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ। প্রসাদ বিতরণ, অঞ্জলি এবার বিধি মেনে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy