যাত্রা থমকে। নিজস্ব চিত্র
নাগপুর থেকে হাঁটতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। টানা ন’দিন কখনও রাতের আঁধারেও— পায়ে হেঁটে ওড়িশা সীমান্তে পৌঁছে আচমকা আটকে গিয়েছেন ওঁরা। গত আড়াই দিন ধরে খোলা আকাশের নীচে অর্ধাহারে কাটাচ্ছেন তাঁরা।
মাস দুয়েক আগে নাগপুরে রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছিলেন হরিহরপাড়ার ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা এই ন’জন শ্রমিক। দেশ জুড়ে জারি হয় লকডাউন। এর ফলে সেই প্রবাসেই থমকে গিয়েছিল তাঁদের দিন যাপন। প্রায় মাসখানেক কোনওক্রমে চলার পরে শেষে হেঁটেই ঘরে ফেরা মনস্থ করে ফেলেছিলেন তাঁরা।
৯ দিন পায়ে হাটার পর ছত্তীশগঢ় হয়ে ওড়িশা প্রবেশ করেন তাঁরা। সেখানে একটি ম্যাটাডর ভাড়া করে বাড়ি আসার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু কিছুটা পথ আসার পর ওড়িশার শোলে থানার লুহুরাছাতি টোল প্লাজার কাছে নাকা চেকিংয়ে আটকে পড়েন তাঁরা। ঠাঁই হয় স্থানীয় একটি স্কুল বাড়ির অস্থায়ী ক্যাম্পে। তিন দিন সেখানে থাকার পর রবিবার দুপুরে সেই ক্যাম্পটি উঠে যায়। স্থানীয় পঞ্চায়েতের লোকজন তাঁদের ক্যাম্প ছাড়তে বলেন। এ দিকে সীমানা সিল রয়েছে। তা ছাড়া রাস্তাঘাট তাঁদের অচেনা। ফলে রবিবার দুপুর থেকেই তাদের ঠাঁই হয়েছে খোলা আকাশের নিচে। কাছে না আছে পর্যাপ্ত টাকা, না খাবার। শুকনো মুড়ি, চিঁড়ে খেয়েই কোনওক্রমে দিন কাটছে তাঁদের। ঘরে ফেরানোর আর্তি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে ভিডিয়ো বার্তা পাঠিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের ঘরে ফেরানোর আর্জি জানিয়ে বিডিও’র দ্বারস্থ ওড়িশা আটকে পড়া শ্রমিকদের পরিবারের লোকজন। মুর সেলিম মণ্ডল, রাজেশ মণ্ডল, শরিফুল শেখ, আব্দুল বারি, হুমায়ুন শেখ, রাজিবুল শেখ, মুরসালিম শেখ, ইকবাল হোসেন, বাবলু দফাদার নামে এই নয় শ্রমিক ভিডিয়ো-বার্তায় তাঁদের উদ্ধার বা খাবার বন্দোবস্ত করার জন্য আর্তি জানিয়েছেন। টেলিফোনে মুর সেলিম মণ্ডল বলেন, ‘‘লকডাউনে প্রায় এক মাস আটকে থাকার পর পায়ে হেঁটেই আমরা বাড়ির দিকে রওনা দিই। টানা ন’ দিন হাঁটার পর ওড়িশায় ঢুকে একটি ম্যাটাডর পাই। তাতে চড়ে আসতেই আমরা আটকে পড়ি। এখানে খাবারটুকুও জুটছে না।’’
রুকুনপুর অঞ্চলের তৃণমুল অঞ্চল সভাপতি সাপিনুল ইসলাম আটকে পড়া শ্রমিকদের পরিবারের লোকেদের নিয়ে হরিহরপাড়ার বিডিও’র দ্বারস্থ হন। হোসেন আলি নামে আটকে পড়া এক শ্রমিকের বাবা বলেন, ‘‘আমার ছেলে-সহ ওরা ৯ জন না খেয়ে খোলা আকাশের নিচে আছে। ওদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।’’ হরিহরপাড়ার বিডিও পূর্ণেন্দু স্যানাল বলেন, ‘‘খবর পেয়েই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের অন্তত নিরাপদে রেখে খাবার বন্দোবস্ত করা হয় তার জন্য সেখানকার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy