নিজস্ব চিত্র
করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের জেরে মানুষ ঘরবন্দি। কাজ বন্ধ থাকায় গরিব মানুষেরা ভবিষ্যতের রুজিরোজগারের চিন্তায় দিশেহারা। যথেষ্ট টাকাপয়সা হাতে না-থাকায় অনেকেই প্রয়োজনীয় খাবার বা আনাজ কিনতে পারছেন না। তাই বুধবার থেকে উপভোক্তাদের রেশনে জিনিসপত্র দেওয়া শুরু করেছে সরকার।
এ দিন সকাল থেকেই জেলার প্রায় সর্বত্র রেশন দোকানে প্রচুর মানুষ লাইন দেন। কয়েকটি জায়গায় পুলিশ এসে লাইনে দাঁড়ানো মানুষকে নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করে। রেশন বিলি নিয়ে ডিলারদের বিরুদ্ধে কেউ-কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। করিমপুরের মুছাকলিম শেখের কথায়, “এক মাসের জন্য আমার পরিবারের ছ’টি কার্ডে বারো কেজি চাল মিললেও গম বা আটা দেওয়া হয়নি।” মুরুটিয়ার পিপুলবেড়িয়ার শাহরুখ মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী রেশনে মাথা-পিছু পাঁচ কেজি চাল দেওয়ার কথা বললেও দুই কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের রেশন কার্ড নেই তাঁদেরও জিনিসপত্র দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না।’’
করিমপুর ২ ব্লক খাদ্য আধিকারিক তাপস কুমার দাস জানান, খাদ্য দফতরের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী, যে কার্ডে যেমন প্রাপ্য সেই মতোই রেশনের মাল দেওয়া হয়েছে। বেশির ভাগ রেশন দোকানে চাল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এবং তাঁরা সেগুলি বিলি শুরু করেছেন। তবে গম বা আটার সরবরাহ এখনও হয়নি। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে গম আটা চলে এলে তা দেওয়া হবে। আর বিনা কার্ডে নয়, যাঁরা রেশন কার্ডের জন্য ইতিমধ্যে আবেদন করেছেন এখনও হাতে কার্ড পায়নি ও দফতরের কাছে নথিবদ্ধ রয়েছে তাঁদের একটা তালিকা দফতর পাঠাবে। সেই তালিকাভুক্ত মানুষদের একটা কুপন দেওয়া হবে এবং তার পরে কুপনের বিনিময়ে মাল দেওয়া হবে।
করিমপুর ১ ব্লক খাদ্য দফতরের আধিকারিক অমিত কুমার পাল জানান, সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনায় এক মাসের জন্য এক দিনে পরিবার পিছু পনেরো কেজি চাল ও ২০ কেজি আটা, অগ্রাধিকার প্রাপ্ত পরিবার এবং বিশেষ পরিবার কার্ডে প্রাপ্ত বয়স্কদের মাথা পিছু দুই কেজি চাল ও তিন কেজি আটা , রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা ১ কার্ডে মাথা পিছু দুই কেজি চাল ও তিন কেজি গম বিনামূল্যে দেওয়া হবে। রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা ২ কার্ড হোল্ডারদের ১৩ টাকা কেজি দরে মাথা পিছু এক কেজি চাল ও ৯ টাকা কেজি দরে এক কেজি করে গম দেওয়া হবে। অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনায় সাড়ে তেরো টাকা কেজি মুল্যে পরিবার পিছু এক কেজি চিনি দেওয়া হবে।
খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, করিমপুর ১ ব্লকে ৪৫ টি রেশন দোকান থেকে প্রায় এক লক্ষ তিরানব্বই হাজার ও করিমপুর ২ ব্লকে ৫৯টি রেশন দোকান থেকে প্রায় দুই লক্ষ পঁয়ত্রিশ হাজার মানুষকে তাঁদের প্রাপ্য দ্রব্য সরবরাহ করা হবে। করিমপুরের বিপুল সাহা জানান, করোনা সংক্রমণ রুখতে বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা মানা হচ্ছে না রেশন দোকানে। তাঁর দাবি, দোকানে ধাক্কাধাক্কি হচ্ছে। আগামী ক’দিন রেশন দেওয়া হবে তা অনেক মানুষ জানেন না বলেই সবাই এক সঙ্গে ভিড় করছেন।
যদিও খাদ্য দফতর জানিয়েছে, সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত দুপুরে দুই ঘণ্টা বাদে প্রতিদিন সকাল আটটা রাত আটটা পর্যন্ত ও রবিবার সকালে এক বেলা সমস্ত রেশন দোকান খোলা থাকবে। মাল না পৌঁছনোয় নবদ্বীপ এলাকায় বুধবার সকালে ৮০টি রেশন দোকানের কোথাও মাল সরবরাহ করা যায়নি। নবদ্বীপ এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ দেবনাথ জানান, প্রয়োজনীয় চাল না আসার কারনে সকালে মাল দেওয়া না গেলেও বিকেলে কিছু কিছু দোকান থেকে রেশন দেওয়া হয়েছে। রেশনের জিনিসের দাম নিয়ে এ দিন গ্রাহকেরা বিক্ষোভ দেখান ধানতলা থানার আড়ংঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের নারায়ণপুরের একটি রেশন দোকানে। ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy