Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Lockdown

ক’দিন পরে ইদ, কাজ নেই দর্জির  

এমনিতেই হাল ফ্যাশনের রেডিমেড পোশাকের কারণে রোজগার কমেছে দর্জিদের।

একাই বসে কাজ করছেন শরিফুল। নিজস্ব চিত্র

একাই বসে কাজ করছেন শরিফুল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২০ ০১:১০
Share: Save:

সামনেই ইদ। কিন্তু কাজ নেই দর্জিদের। প্রায় দেড় মাস পর কিছু এলাকায় দর্জির দোকান খুললেও হাতে নেই কাজ। রোজগার হারিয়ে বিপাকে বেশ কয়েক জন দর্জি। একে লকডাউন, তার মধ্যে ঝড়ের আশঙ্কা। মানুষের হাতে টাকা কম, ইদের ভরা মরসুমেও দর্জিদের কাছে তাঁরা যাবেন কি না, তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এমনিতেই হাল ফ্যাশনের রেডিমেড পোশাকের কারণে রোজগার কমেছে দর্জিদের। অনেকে অন্য পেশায় ঝুকলেও অধিকাংশ দর্জি নিজেদের পুরনো পেশাকেই আঁকড়ে ধরে আছেন। তবে লক ডাউনের গেরোয় রুজিতে তালা পড়েছে তাঁদেরও। রেডিমেড পোশাকের রমরমায় হাতে সেলাই করা পোশাকের চাহিদা কমেছে অনেকটাই। তবুও মধ্য বয়স্ক বা প্রবীণদের পছন্দ তৈরি করা পোশাকই। ফলে দর্জিরা মুখিয়ে থাকেন ইদ বা পুজোর মতো উৎসবের দিকে। অন্য বছর ইদের আগে হরিহরপাড়া, নওদা, ডোমকলের মতো জায়গার দর্জি দোকানে কাজ ভালই থাকে। অনেক দর্জি নাওয়াখাওয়া পর্যন্ত ভুলে যেতে বাধ্য হন।

কিন্তু এবছর সেসব অতীত। করোনার আবহে ম্লান দর্জিদের কারবার। তা ছাড়া পরিবারে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য আনতে অনেক মহিলারাই টেলরিং-এর কাজ শিখে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। কেউ কেউ আবার দোকান খুলেও বসেছেন। সেই দোকানে অন্য মহিলারাও কাজ করে কিছুটা রোজগার করেন। কিন্তু এ বছর উৎসবের মরসুমে লকডাউনের কারণে অর্ডার নেই দর্জি দোকানে।

স্বামী এবং এক ছেলেকে নিয়ে অভাবের সংসার হরিহরপাড়া মণ্ডলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আঞ্জিয়ারা বিবির। সেলাইয়ের কাজ শিখে হরিহরপাড়া বাজারেই বিগত বছর পাঁচেক ধরে খুলে বসেছেন একটি টেলারের দোকান। আরও আট-দশ জন মহিলা কাজ করেন তার তত্ত্বাবধানে। অন্য বছর ইদের আগে কাজের জোগান দিতে হিমসিম খেতে হয় তাঁদের। কিন্তু এ বছর কাজ নেই তাদের হাতে। সংসার চলবে কী করে সেই চিন্তা কুড়ে খাচ্ছে আঞ্জিয়ারা বিবি, নাফিসা বিবিদের। আঞ্জিয়ারা বিবি বলছেন, ‘‘অন্য বছর ইদের মাস খানেক আগে থেকে নাওয়াখাওয়া খাওয়ার সময় থাকে না। আর এবছর দেড় মাস পর দোকান খুললেও হাতে তেমন কাজ নেই। মেয়েদের সংসার চলবে কী করে?’’ শরিফুল ইসলাম নামে হরিহরপাড়ার এক দর্জি বলেন, ‘‘সারা বছর তিন জন দর্জি নিয়ে কাজ করলেও ইদের আগে আরও চার-পাঁচ জন কারিগর নিয়ে কাজ করতে হয়। আর এ বছর ফাঁকা হাতেই বসে আছি।’’

হরিহরপাড়ার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলছেন, ‘‘লকডাউনের কারণে প্রায় দু’মাস ধরে অধিকাংশ মানুষের রোজগার বন্ধ। ফলে মানুষের হাতে টাকা নেই পোষাক তৈরি করবে কি দিয়ে?’’ কবে সুদিন ফিরবে, সংসারে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য ফিরবে সেই চিন্তায় আঞ্জিয়ারা, শরিফুলের মতো অসংখ্য দর্জির।

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Eid Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy