Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

শ্মশানযাত্রায় টাকা, মানহািন ঠিকাদারের

অভিযোগের ভিত্তিতে ঠিকাদার রজত মণ্ডলকে শো-কজ় করা হয়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

অমিত মণ্ডল
কল্যাণী শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২১ ০৫:০৬
Share: Save:

বেশ কিছু দিন ধরেই কল্যাণীর কোভিড হাসপাতালে এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ তুলছেন রোগী, তাঁদের পরিবার-পরিজন, স্থানীয় নেতা, এমনকি হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ। সে সব জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের অনেকের কানেও উঠেছে। তাতে অবশ্য বিশেষ কিছু যায় আসেনি রজত মণ্ডল নামে ওই ঠিকাদারের। কিন্তু মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি মোটা টাকা দাঁও মেরেছেন বলে লিখিত অভিযোগ হওয়ার পরে কর্তারা খানিক নড়ে বসেছেন। কল্যাণী মহকুমাশাসকের দফতর সূত্রের খবর, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ঠিকাদার রজত মণ্ডলকে শো-কজ় করা হয়েছে। তিনি অবশ্য উল্টে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেই মানহানির মামলা করার হুমকি দিচ্ছেন।

হাসপাতালের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, রজত মণ্ডল নামে ওই ঠিকাদার অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের হর্তাকর্তা তো বটেই, সেই সঙ্গে আরও নানা বিষয়ে তিনি মাতব্বরি করেন। এর আগে ফেসবুকেও তাঁর নাম করে অবৈধ কাজকর্মের অভিযোগ তোলা হয়েছে রোগীর পরিজনের তরফে। কিন্তু নির্দিষ্ট ভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ না হওয়ায় তার কোনও মান্যতা ছিল না।

এ বার মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিজনদের কাছ থেকে চাপ দিয়ে তিনি টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার চাকদহের পূর্ব বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা রামপ্রসাদ দত্ত কল্যাণীর মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর মায়ের দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য অন্তত ১৮ হাজার টাকা দিতে হবে বলে দাবি করেন রজত মণ্ডল। তাঁর বিরুদ্ধে ডোমেদের নাম করে হাজার-হাজার টাকা লোটার অভি‌যোগ কানে এসেছে হাসপাতালের ডাক্তার ও কর্তাদের একাংশেরও। যার জেরে আড়ালে-আবডালে তাঁকে ‘শ্মশানবন্ধু’ বলে কটাক্ষ করাও হচ্ছে কিছু মহলে। শুধু শ্মশানযাত্রা নয়। হাসপাতালের মধ্যেই তাঁর চড়া ভাড়ায় নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবসা চালানোর অভিযোগও অনেকেই শুনেছেন। তার সত্য-মিথ্যা অবশ্য তদন্তসাপেক্ষ। ত ১৩ মে হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মীরা রজতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন, তাঁদের প্রাপ্য টাকা দেওয়া হচ্ছে না। অনেকের অভিযোগ ছিল, চুক্তি মাফিক ১০ হাজার টাকা দেওয়ার পরিবর্তে আট হাজার টাকা দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর পরেও অবশ্য স্বাস্থ্য দফতর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। এক জন ঠিকাদার কী ভাবে, কাদের প্রশ্রয়ে একটি সরকারি হাসপাতালে অবৈধ কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারে, ওয়াকিবহাল মহলে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এত দিন কেউ ওই ঠিকাদারের নাম করে লিখিত অভিযোগ না করায় সব জেনেশুনেও চোখ-কান বুজে বসে থাকার সুবিধা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট অভিযোগ সামনে আসায় তা সহজ হবে না, এমনকি কেঁচো খুঁড়তে কেউটেও বেরিয়ে যেতে পারে বলে কোভিড হাসপাতাল তথা স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের একাংশের দাবি।

রবিবার রাতে রজত মণ্ডল অবশ্য দাবি করেন, “মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি কারও কাছে টাকা চাইনি। মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে। যিনি এই অভিযোগ করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আমি মানহানির মামলা করব।” তাঁকে কি শো-কজ় করা হয়েছে? রজত বলেন, “শনিবারই আমি একটি চিঠি পেয়েছি। সোমবার তার জবাব দেব।”

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা আমাদের মত করে এই বিষয় নিয়ে এগোচ্ছি।”

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy