ব্যারিকেড রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র
সালারের গ্রামে এক বৃদ্ধের করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে আতঙ্কের ছায়া পড়ল পড়শি জেলার গাঁ-গঞ্জেও। মঙ্গলবার তাই ভূশণ্ডির গা ঘেঁষা বীরভূমের বেশ কিছু গ্রামের বাঁশের ব্যারিকেড তুলে চলাচল স্তব্ধ করে দেয় বীরভূম জেলা পুলিশ ও প্রশাসন। তাতে ওই সব গ্রামীণ মানুষের পাশাপাশি ঘোর সমস্যায় পড়েছেন মুর্শিদাবাদ জেলার খড়গ্রাম ব্লকের ঝিল্লি পঞ্চায়েতের ২২টি গ্রামের বাসিন্দারাও। কারণ, তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের অনেকটাই নির্ভর করে পড়শি জেলার ওই গ্রামের বাজার-হাটের উপরে। আনাজপাতি থেকে চিকিৎসা কোনও কিছুই আর তেমন সাবলীল নয় বলে দাবি করেছেন ওই সব গ্রামের মানুষজন।
১৭ এপ্রিল সালারের ভূশণ্ডি গ্রামের বাসিন্দা এক বৃদ্ধের লালারস ও রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাস পজ়িটিভ হয়। তারপর থেকেই সালার এলাকা ছাড়াও সমগ্র জেলা জুড়েই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে কম বেশি। ছায়া ছড়িয়েছে লাগোয়া জেলার গ্রামেও। পূর্ব বর্ধমান থেকে বীরভূম— পিছিয়ে নেই দু’জেলার গ্রামগুলিও। সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন খড়গ্রাম ব্লকের ঝিল্লি পঞ্চায়েতের ২২টি গ্রামের বাসিন্দারা। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতটি খড়গ্রাম ব্লক এলাকার মধ্যে হওয়ার পরেও ওই এলাকার বাসিন্দারা হাট বাজার থেকে চিকিৎসা— সমস্ত কিছুর জন্যই বীরভূমের রামপুরহাট শহরের উপর নির্ভর করেন। এমনকি, বাজার থাকলেও সেখানে নিয়মিত মাড়গ্রাম থেকে ব্যবসায়ীরা আনাজ নিয়ে আসেন। এই অবস্থায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাঁদের আনাগোনাও। বাসিন্দাদের দাবি, আনাজপাতির অভাবে খারাপ আলুও ৩০-৩৫ টাকা প্রতি কেজি কিনতে হচ্ছে। পটল, কুমড়ো, ঝিঁঙে, ঢ্যাঁড়শ, পেঁয়াজ প্রায় অমিল।
বাসিন্দাদের বড় ধরনের কোনও রোগে হলে অ্যাম্বুল্যান্সে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াই ছিল এ যাবত রেওয়াজ। কারণ ওই অঞ্চল থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরে রামপুরহাট শহর। অন্য দিকে খড়গ্রাম ব্লক হাসপাতালে রোগীদের নিয়ে আসতে হলেও বীরভূমের বিষ্ণুপুর হয়ে আসতে হচ্ছে। তাতেও প্রায় ৩৮ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে হচ্ছে। লকডাউনে এতটা পথ ভাঙা সহজ নয়। ঝিল্লির বাসিন্দা জসিমুদ্দিন শেখ ও মইনূল হক বলেন, “সড়ক পথে খড়গ্রামে যাতায়াতের কোনও রাস্তা নেই আমাদের অঞ্চলে। পোড়াডাঙা এলাকায় ব্রাহ্মণী ও দ্বারকা নদী মিলিত হয়েছে। ওই নদী পার হয়ে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু নদীতে সেতু না থাকায় বর্তমানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এই অঞ্চল।” যদিও ঝিল্লির অঞ্চল প্রধান তৃণমূলের কামরুজ্জামান সরকার বলেন, “পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বারবার সেতুর দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু আশ্বাস পেলেও কাজ হয়নি। মানুষ তাই বড় অসহায়।’’ কান্দির মহকুমাশাসক রবি আগরওয়াল বলেন, “বীরভূম জেলা প্রশাসন তাদের সীমানায় ব্যারিকেড দিয়েছে। আমাদের হাত-পা বাঁধা। তবে আনাজপাতি ও আশঙ্কাজনক রোগীকে যাতে রামপুরহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়, সেই ছাড়পত্র পাওয়ার ব্যবস্থা করা যায় কি না দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy