পতাকা তুলছেন রঞ্জনা। নিজস্ব চিত্র
করোনা নিয়ে অহেতুক আতঙ্কে রাজ্যের অনেক জায়গায় করোনা-যোদ্ধা চিকিৎসক-নার্স এবং অন্যদের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে পড়শিদের একাংশের বিরুদ্ধে। এ বার তার উল্টো ছবি দেখা গেল বহরমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থ এলাকায়। সহ-আবাসিক তথা ‘‘করোনা-যোদ্ধা’ এক নার্সকে আবাসনে স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলনের সুযোগ দিয়ে সম্মান জানালেন ইন্দ্রপ্রস্থের একটি আবাসনের বাসিন্দারা।
কিছুদিন আগে বহরমপুরেই এক আবাসনে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কর্মরত এক নার্সকে ‘হেনস্থা’র ঘটনা ঘটেছিল। তিনি করোনা হাসপাতালে কাজে যুক্ত। তাই তাঁর থেকে করোনার সংক্রমণ ঘটতে পারে এমন অদ্ভূত অভিযোগ করে ওই আবাসনের আবাসিকদের একাংশ তাঁকে হেনস্থা করেছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশি হস্তক্ষেপে সে সময় বিষয়টি মিটে গেলেও ওই মহিলা দিনকয়েকের মধ্যেই অন্যত্র বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলে যান। সেখানে ইন্দ্রপ্রস্থের ওই আবাসনের বাসিন্দারা নজির সৃষ্টি করলেন।
ওই আবাসনে প্রতি বছরই স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন আবাসিকরা। অন্য বার আবাসন কমিটির সভাপতি বা আবাসনের কোনও প্রবীণ ব্যক্তির হাত দিয়ে পতাকা উত্তোলিত হয়। এ বার সেই সুযোগ দেওয়া হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নার্স হিসেবে কর্মরত, রামপুরহাটের বাসিন্দা রঞ্জনা মুখোপাধ্যায়কে। আবাসনের কয়েক জন আবাসিক জানান, তাঁরা ওই প্রস্তাব রঞ্জনাকে জানানোর পর প্রথমে সামান্য ইতস্তত করেছিলেন তিনি। কোনও প্রবীণ ব্যক্তিকে সেই সুযোগ দেওয়ার জন্য বলেন। পরে অবশ্য তিনি সম্মত হন। শনিবার অনুষ্ঠান শেষে রঞ্জনা বলেন, “করোনা-যোদ্ধাদের হেনস্থার ঘটনাগুলি বিচ্ছিন্ন। অধিকাংশ মানুষই করোনার সংক্রমণ কী ভাবে ঘটতে পারে সে ব্যাপারে সচেতন। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সুযোগ দিয়ে আমার পড়শিরা যে সম্মান দিলেন তা সারা জীবন মনে রাখব।’’ ওই আবাসনের বাসিন্দা, পেশায় শিক্ষক জগন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “করোনা নিয়ে অনেকে অযথা আতঙ্কে ভুগছেন। বিপদ তুচ্ছ করে যে সমস্ত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ করোনার বিরুদ্ধে মাঠে নেমে লড়াই করছেন, আমরা তাঁদের সম্মান জানানো, উৎসাহ দেওয়া আমাদের কর্তব্য। তা না হলে এই সমস্ত করোনা যোদ্ধাদের মনোবল ভেঙে যেতে পারে। সে কথা মাথায় রেখেই আমাদের এই সিদ্ধান্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy