প্রতীকী ছবি
আশঙ্কা ছিল এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের উদ্বেগ বাড়িয়ে সেটাই সত্যি প্রমাণিত হল। করোনা পজিটিভ হল শান্তিপুরের বাগআঁচড়ার ন’মাসের এক শিশু।
এই শিশুটিকে নিয়েই গত সোমবার কৃষ্ণনগর সারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে টানাপড়েন চরমে উঠেছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের।
এই শিশুটি অসুস্থ হয়ে প্রথমে কলকাতার এক বেসরকারি শিশু হাসপাতালে ভর্তি ছিল। কিন্তু সেখানে বেশ কয়েক জন নার্স করোনা-আক্রান্ত হওয়ায় তাকে সেখান থেকে বাগআঁচড়ার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তার অবস্থার উন্নতি না-হওয়ায় নিয়ে আসা হয় জেলা সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগে। স্বাস্থ্যকর্তাদের অভিযোগ, এই ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও এবং শিশুটির দেহে করোনার বেশ কিছু উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও সারি হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করার বদলে তাকে জেলা হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি করে প্রায় আধ ঘন্টা রেখে তার পর কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। এ বার তার করোনা পজিটিভ আসায় জেলা হাসপাতালের শিশু বিভাগের সামনে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে। সেখানে এ বার অনেক চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এমনকি ভর্তি থাকা অন্য শিশুদের লালারস পরীক্ষা করতে দেওয়া হবে। প্রয়োজন পড়লে শিশুবিভাগ বন্ধ করে দেওয়া বতে পারে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। গোটা বিষয়টির জন্য তারা সারি হাসপাতালের কিছু চিকিৎসকের দায়িত্বজ্ঞানহীনতাকে দায়ী করছে।
বুধবার সকালে শিশুটি করোনা পজেটিভ হওয়ার খবর আসার সঙ্গে-সঙ্গে জেলা হাসপাতালের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। কারা-কারা কোথায় ওই শিশুর সংস্পর্শে এসেছেন তার তালিকা তৈরি করা হয়।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগআঁচড়়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যে চিকিৎসক শিশুটিকে পরীক্ষা করেছিলেন সেই মেডিক্যাল অফিসার, এক জন নার্স, এক জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ও দু’জন অ্যাম্বুল্যান্স চালককে কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি জেলা সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগের এক জন শিশু বিশেষজ্ঞ, তিন জন নার্স, এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, এক সাফাই কর্মীকে কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা হয়েছে। জেলা হাসপাতালের শিশুবিভাগে ভর্তি থাকা এক শিশুর লালারসও সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
জেলা স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি, ওই শিশু জেলা হাসপাতালে থাকাকালীন অন্য যে শিশুরা সেখানে ছিল তাদের মধ্যে ওই একটি ছাড়া বাকিরা সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গিয়েছে। আপাতত সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগটি ব্ন্ধ করে দিয়ে তা শক্তিনগর ক্যাম্পাসে সরিয়ে আনা হয়েছে। সেখানে যে ৭ জন শিশু ভর্তি ছিল তাদেরও শক্তিনগরে সরিয়ে আনা হয়েছে।
অন্য দিকে, জেএনএমের চিকিৎসকদের একাংশ শঙ্কিত। তাঁরা জানাচ্ছেন, ওই শিশুটিকে একাধিক চিকিৎসক পিপিই ও এন-৯৫ মাস্ক ছাড়াই পরীক্ষা করেছিলেন। ফলে তাঁদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। হাসপাতালের সুপার অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘বুধবার হাসপাতালের একাধিক জায়গা জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। কয়েক জন চিকিৎসকের লালারসের নমুনা আজ বৃহস্পতিবার সংগ্রহ করা হবে।’’
নাকাশিপাড়ার রাজাপুরের বাসিন্দা কলকাতা পুলিশের তিলজলা থানার এক সাব ইন্সপেক্টরের করোনা ধর পড়েছে। তবে তিনি শেষবার বাড়ি এসেছিলেন মাস দেড়েক আগে। তখনও করোনা সে ভাবে ভারতে শুরু হয়নি। তিনি রোগাক্রান্ত হয়েছেন কলকাতায়। এবং এর মধ্যে তাঁর পরিবারের কেউ কলকাতায় তাঁর সঙ্গে দেখাও করেননি। ফলে তাঁকে নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর খুব একটা চিন্তিত নয়। তাঁর মাধ্যমে রাজাপুর এলাকায় সংক্রমণ ছড়ানোর কোনও আশঙ্কা নেই বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর মনে করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy