ফাইল চিত্র
পুরভোটের ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছিল। আর তার পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল ঘর গোছানোর পালা। আসন সংরক্ষণের তালিকা বেরোনোর পরে কোন হেভিওয়েট নেতাকে নিজের ওয়ার্ড ছাড়তে হবে, আর কোথায় তাঁর পুনর্বাসন হবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছিল তৎপরতা। আর তখনই প্রকাশিত হয়ে পড়ছিল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এ বার করোনা ভাইরাসের জেরে ভোটের উৎসাহে আপাতত জল পড়ায় তাই সব দলেই এক রকম স্বস্তি। বাড়তি সময় পাওয়ায় এ বার দ্বন্দ্ব সামাল দেওয়ার সুযোগ মিলবে। সব থেকে বড় সুযোগ পেল জেলার বাম এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাদের আসন সমঝোতা নিয়ে জট অনেক জায়গাতেই কাটছিল না।
অনেক নেতারই কথায়, করোনা নিয়ে আতঙ্ক এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, এখন ভোটের প্রচারও জমত না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাস্ক পরে জনসংযোগেও ভাটা পড়ত। সব কাজই করতে হত ভয়ে ভয়ে। তার থেকে রেহাই মিলল এ বার।
সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ জেলার ৭টি পুরসভায় নির্বাচন হওয়ার কথা। সব পুরসভায় শাসক দলের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে। কোথাও প্রার্থী কাকে করা হবে তা নিয়ে, কোথাও বা দলের দুই নেতার প্রকাশ্যে লড়াই রয়েছে। বিশেষ করে জঙ্গিপুর ও বহরমপুরে পুরসভা এলাকায় তৃণমূলের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। এই পরিস্থিতি ভোট কুশলী পিকের দল মুর্শিদাবাদের পুরসভাগুলি ঘুরে গিয়েছে। ভোট পিছিয়ে যাওয়ায় শাসকদলের ঘর গোছাতে সুবিধা হবে।
যদিও জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, ‘‘আমাদের কোনও গোষ্ঠীকোন্দল নেই। আমাদের ঘর সব সময় গোছানো থাকে।’’
বাম-কংগ্রেস রাজ্য নেতৃত্ব এ বারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের সর্বত্র বিজেপি-তৃণমূলকে ঠেকাতে জোট করতে হবে। সেই নির্দেশে পেয়ে বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব স্থানীয় স্তরে পুরসভা ভিত্তিক বৈঠকে বসেছিল। এখনও বেলডাঙা ছাড়া জেলার বাকি পুরসভাগুলিতে বাম-কংগ্রেসের জোট নিয়ে জটিলতা থেকে গিয়েছে। যদিও সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য জামির মোল্লা বলেন, ‘‘আমরা নির্বাচনের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। জোট নিয়ে ঠিক মতোই এগোচ্ছিলাম।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ভোট পিছোনের ফলে রাজনৈতিক কাজকর্মে খামতি হবে না। তবে এখন মানুষকে করোনাভাইরাসের বিষয়ে সচেতন করব।’’
জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘যে ছাত্র সারা বছর পড়াশোনা করে, তার কাছে পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়া বা এগিয়ে যাওয়াটা কোনও বিষয় নয়। যারা সারা বছর পড়াশোনা করে না, পরীক্ষা পিছোলে তাঁরা অানন্দ পায়। আমরা ভোটের জন্য সব সময় প্রস্তুত।’’ তিনি করোনাভাইরাস রুখতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘‘মনে রাখতে হবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে পৃথিবী জুড়ে লড়াই চলছে। তাই করোনাভাইরাসকে রুখতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে থাকবে হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সচেতন থাকতে হবে।’’
তবে ভোট পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে বিজেপি যেমন রাজ্য সরকারের সমালোচনা করছে, তেমনি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে তাঁরা সতর্ক। বিজেপির মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘এর আগেও পরাজয়ের ভয়ে ভোট পিছিয়ে ছিল শাসকদল। এবারেও এই সময় ভোট হলে তাঁদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে ছুতো খোঁজ করছিল। করোনাভাইরাসকে সামনে পেয়ে তাঁদের আশা পূর্ণ হল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্য করোনাভাইরাস রুখতে নানা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরা সতর্কতকামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy