Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

কোথাও রান্না বন্ধ, কোথাও ঘরে খিচুড়ি

খাবার বিলির প্রক্রিয়া সম্পর্কে এখনও কোনও সরকারি নির্দেশিকা নেই। তার উপর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীর অপ্রতুলতা।

খোলা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। মঙ্গলবার ঝিটকিপোতায়। নিজস্ব চিত্র

খোলা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। মঙ্গলবার ঝিটকিপোতায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২০ ০২:৫০
Share: Save:

সরকারি নির্দেশে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ থাকাকালীন শিশু ও প্রসূতিদের খাবার কী ভাবে দেওয়া হবে তা নিয়ে মঙ্গলবার জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিভ্রান্তি ছিল চরমে।

খাবার বিলির প্রক্রিয়া সম্পর্কে এখনও কোনও সরকারি নির্দেশিকা নেই। তার উপর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীর অপ্রতুলতা। পরিকাঠামো নড়বড়ে। তা সম্বল করে কী ভাবে বাড়ি-বাড়ি খাবার পৌঁছনো যাবে তা নিয়ে সোমবারই প্রশ্ন উঠেছিল। সরকারি তরফে এর স্পষ্ট কোনও উত্তর না-মেলায় মঙ্গলবার কোথাও অঙ্গলওয়াড়ি থেকে কোনও খাবারই মেলেনি, কোথাও আবার কেন্দ্রে এসে শুধু খাবার নিয়ে গিয়েছেন মা ও শিশুরা। আবার কিছু জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা নিজেরা খাবার রান্না করে শিশু ও প্রসূতিদের বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন।

আইসিডিএস-এর জেলা আধিকারিক ভাস্কর ঘোষ বলেছেন, “লিখিত নির্দেশের অপেক্ষায় আছি। যেমন নির্দেশ আসবে সেই মতই পদক্ষেপ করা হবে। আশা করছি বুধবার থেকেই আমরা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া চালু করে দিতে পারব।” সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছিল, শিশু-প্রসূতি ও গর্ভবতী মহিলাদের একসঙ্গে দু’ কেজি করে চাল ও ২ কেজি করে আলু বাড়িতে দিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু মঙ্গলবার কোথাও সেটা করা হয়নি। আইসিডিএস কর্মীদের একাংশের কথায়, মাসের অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রগুলিতে যে পরিমাণ চাল সঞ্চিত আছে তাতে সবাইকে দু’ কেজি করে চাল দেওয়া সম্ভব না। এর জন্য আরও চাল পাঠাতে হবে। আবার এত আলু কেনার টাকাও তাদের হাতে নেই।

চাল-আলু যথেষ্ট পরিমাণে জোগাড় করা গেলেও কি এক-একটি কেন্দ্রের দু’ জন করে কর্মীর পক্ষে এলাকার বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব? পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য আইসডিএস কর্মী সমিতিক জেলা সম্পাদিকা সাহানারা আহমেদ বলেন, “সমস্যা হবেই। এটা সত্যিই কার্যত অসম্ভব। আমরা চাইছি, সমস্ত দিক বিচার করে যেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।” জেলাশাসক বিভু গোয়েল অবশ্য মঙ্গলবার মন্তব্য করেন, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকেই খাবার বিলি করা হবে। যাঁরা একান্ত কেন্দ্রে আসতে পারবেন না তাঁদের ক্ষেত্রে কর্মীরা বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সবটাই হবে লিখিত নির্দেশিকা আসার পর।’’

করিমপুর-১ ও ২ নম্বর ব্লকের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অনেক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেই এ দিন খাবার না পেয়ে শুকনো মুখে ফিরে গিয়েছে শিশু ও প্রসূতিরা। করিমপুরের তারাপুর, চাকদহের শিমুলিয়া তেমাথা এলাকার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এ দিন সেটাই হয়েছে। তারাপুরের কর্মী পূর্ণিমা খামারু হোক বা শিমুরালির অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী পার্বতী মণ্ডল, সকলেরই বক্তব্য, “আমাদের নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তাই আমরা কেন্দ্রে রান্না করে খাবার দিতে পারিনি।”

পলাশির জানকিনগর কেন্দ্রে আবার রান্না করা খাবার দেওয়া হয়েছে। এই কেন্দ্রের ১১৪ জন শিশু ও প্রসূতিকে খিচুরি, অর্ধেক ডিম ও কলা দেওয়া হয়েছে। এই কেন্দ্রের কর্মী সাহানারা আহমেদ বলেন, “নির্দেশিকা না পাওয়ায় আমরাও বুঝতে পারছিলাম না যে, ঠিক কি করা উচিৎ। তবে খাবার থেকে শিশু ও প্রসূতিদের বঞ্চিত করলে ওদের পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে। তাই ঠিক করলাম, কোনও নির্দেশ না আসা পর্যন্ত রান্না করা খাবারই দিয়ে যাব।”

তেহট্টের মাঝেরপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীরা আবার সকালেই কেন্দ্রে খাবার রান্না করে বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে দিয়ে এসেছেন। কেন্দ্রের কর্মী মিঠুন ঘোষ বলেন, “শিশু ও প্রসূতিদের কেন্দ্রে আসতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু খাবার থেকে তাদের কোনও ভাবে বঞ্চিত করা যায় না। তাই রান্না করে বাড়ি-বাড়ি দিয়ে এসেছি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Anganwadi Centres
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy