এই দোতলা বাড়িতেই থাকেন ওহায়িদা এবং তাঁর শাশুড়ি চন্দ্রভান বিবি। নিজস্ব চিত্র।
পূর্ব বর্ধমানের পর এ বার মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা। ফরাক্কার আবাস যোজনার তালিকায় নাম রয়েছে অর্জুনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের শাশুড়ির! পঞ্চায়েত প্রধান ওহায়িদা খাতুনের শাশুড়ি চন্দ্রভান বিবির নামে রয়েছে আলিশান দোতলা বাড়ি। একই বাড়িতে থাকেন ওহায়িদাও। অথচ সেই চন্দ্রভানেরই নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকার ৭৫৩ নম্বরে। এই ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েত প্রধান ওহায়িদার বিরুদ্ধে। যদিও তাঁর দাবি, এই তালিকা থেকে শাশুড়ির নাম বাদ দেওয়ার কথা ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে।
প্রধানের শাশুড়ির নাম আবাস যোজনার তালিকায় থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত প্রধান ওয়াহিদার সঙ্গেই দোতলা বাড়িতে থাকেন তাঁর শাশুড়ি চন্দ্রভান। প্রশ্ন উঠছে, এত বড় ইমারতের মালিকানা থাকা সত্ত্বেও কেন চন্দ্রভানের নাম রয়েছে আবাস যোজনার ঘরের তালিকায়?
স্থানীয়দের অভিযোগ, যাদের ঘর পাওয়ার কথা তাঁদের নাম তালিকায় নেই। অথচ প্রধানের শাশুড়ির নাম সেই তালিকায় জ্বলজ্বল করছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বিরোধীরাও। সিপিআইএম নেতা দিলীপ মিশ্রের দাবি, শুধু অর্জুনপুরের প্রধানের শাশুড়ির না, উপপ্রধানের নামও তালিকায় রয়েছে। অথচ তাঁদের প্রত্যেকেরই পাকা বাড়ি। পঞ্চায়েতে লুটেপুটে খেতেই এ সব করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছেন দিলীপ।
অন্য দিকে, আবাস যোজনার তালিকায় শাশুড়ির নাম প্রকাশ্যে সামনে আসতেই অস্বস্তিতে পড়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান ওহায়িদা। যদিও তাঁর দাবি, তিনি দেখার পরেই এই নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন আবাস যোজনার দায়িত্বে থাকা তত্ত্বাবধায়ককে।
তিনি বলেন, “যখন সমীক্ষা চলছিল তখন কোনও ভাবে আমার শাশুড়ির নাম ওই তালিকায় চলে আসে। আমি বুঝতে পারিনি। তালিকা আসার পর দেখলাম শাশুড়ির নাম রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই তত্ত্বাবধায়ককে নাম সরিয়ে দেওয়ার কথা বলি। সেই নাম সরিয়ে দেওয়া হবে। মানুষ মাত্রই ভুল হয়। কী করে নাম চলে এল সত্যিই বুঝতে পারছি না।’’ বিরোধীদের তরফে আনা দুর্নীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সামনে পঞ্চায়েত ভোট তাই আমার নাম খারাপ করার চেষ্টা চলছে। তবে মানুষ আমাকেই ভালবাসে।’’
পুরো বিষয় নিয়ে ফরাক্কার বিডিও জুনায়েদ আহমেদ বলেন, ‘‘কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ পাইনি। তবে এই ধরনের একটি অভিযোগ কানে এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে ফারাক্কার আগে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের শাঁকারি গ্রাম পঞ্চায়েতের কেশবপুরের গ্রাম উপপ্রধানের বিরুদ্ধে একই রকম ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন খোদ তৃণমূলের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকেরাই। অভিযোগ ছিল, পঞ্চায়েতের উপপ্রধান চোখধাঁধানো চার তলা বাড়ির মালিক হওয়া সত্ত্বেও তাঁর স্ত্রীর নাম আবাস যোজনার সদ্য প্রকাশিত তালিকায় রয়েছে। উপপ্রধানের প্রয়াত বাবারও নাম ওই তালিকায় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল।
গত মাসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে সতর্ক করার পরেও একই মাসে এই নিয়ে এই ধরনের দ্বিতীয় ঘটনা ঘটল। দলনেত্রী মমতা প্রশাসনিক কর্তাদের বলেছিলেন, ‘‘যার চার তলা বাড়ি রয়েছে, সে বাংলার বাড়ি পেয়ে গেল, আর যার কিছু নেই, সে পেল না। এটা চলবে না।’’ অথচ আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দাবি, সমীক্ষা করতে গিয়ে এই একই ছবি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠে আসছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy