সেই হেলিপ্যাড।—নিজস্ব চিত্র।
ভিভিআইপি-দের নিরাপত্তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ নাকি পরিবেশ এবং ‘হেরিটেজ’ সম্পত্তিকে রক্ষা করা—এই বিতর্ক আবার নতুন করে উস্কে দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর আসন্ন মুর্শিদাবাদ সফর।
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি মমতা আসছেন বলে শহরের ঐতিহ্যবাহী ব্যারাক স্কোয়্যার ময়দানে অস্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি করছে জেলা প্রশাসন। এতেই অযথা, অপ্রয়োজনে পরিবেশ এবং ঐতিহাসিক স্থানের ক্ষতি করার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। বহরমপুর স্টেডিয়ামে স্থায়ী হেলিপ্যাড থাকা সত্ত্বেও কেন ব্যারাক স্কোয়্যারের সবুজ ধ্বংস করে অস্থায়ী হেলিপ্যাড গ়়ড়া হবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বহরমপুরে একটি সেনা ছাউনি গড়তে চেয়েছিল। তার জন্য তারা মিরজাফরের দ্বারস্থ হয়। মিরজাফর ৪০০ বিঘা জমি দেন। তার সঙ্গে আরও কিছু জমি যোগ করে বাস্তুকার কর্নেল এ ক্যাম্পবেলের তত্ত্বাবধানে ১৭৬৭ সালে তৈরি হয় সেনানিবাস, যা এখনকার ব্যারাক স্কোয়্যার। সেই মাঠের সবুজ ঘাসের উপরে এখন ট্রাক্টরে করে মোরাম এনে ফেলা হচ্ছে। তার উপরে রোলার চালিয়ে অস্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি চলছে গত কয়েক দিন ধরে। এর বিরোধিতা করে শুক্রবার মুর্শিদাবাদের জেলাশাসকের অফিসে স্মারকলিপি জমা দেন বহরমপুর শহর কংগ্রেসের পাঁচ প্রতিনিধি। জেলাশাসক পি উলগানাথন প্রশাসনিক কাজে বহরমপুরের বাইরে থাকায় তাঁর হাতে স্মারকলিপি জমা দিতে পারেননি তাঁরা।
বহরমপুর শহর কংগ্রেসের সভাপতি অতীশ সিংহের কথায়, (কাল্টু) ‘‘ গত ২৯ জানুয়ারি বালিরঘাটে বাস দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেলিকপ্টারে এসেছিলেন। নেমেছিলেন বহরমপুর স্টেডিয়ামের স্থায়ী হেলিপ্যাডে। সেই হেলিপ্যাড থাকা সত্ত্বেও পরিবেশ ও টাকা নষ্ট করে আবার মুখ্যমন্ত্রীর জন্য অস্থায়ী হেলিপ্যাড নির্মাণের যৌক্তিকতা কোথায়!’’ এর আগে এক বার ময়দানের সবুজ ধ্বংসের প্রতিবাদে তৎকালীন কংগ্রেস নেতা অশোক দাসের নেতৃত্বে মিছিল ও বিক্ষোভ হয়েছিল। সেই অশোক দাস এখন শিবির বদল করে শাসক দলে। অস্থায়ী হেলিপ্যাড প্রসঙ্গে এখন তিনি বলছেন, ‘‘পায়ের তলার মাটি হারিয়ে অধীর চৌধুরী দিশেহারা। তাই যে কোনও তুচ্ছ বিষয় নিয়ে লাইমলাইটে থাকার জন্যই তাঁর কথাতেই কংগ্রেস এই প্রতিবাদ জানাচ্ছে।’’ প্রসঙ্গত, বছর আড়াই আগে প্রণব মুখোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন ডোমকলে একটি কলেজের উদ্বোধনে এসেছিলেন। সেই সময় সেখানকার স্পোর্টস কমপ্লেক্স মাঠে তিনটি অস্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি হয় নিরাপত্তার জন্য। খোঁড়াখুঁড়িতে মাঠের শোচনীয় অবস্থা হয় এবং সেই ভাবে মাঠ পড়েছিল প্রায় বছরখানেক। তা নিয়ে অনেক প্রতিবাদ, রাস্তা অবরোধও হয়। বছরখানেক আগে ডোমকলে প্রশাসনিক বৈঠকে আসেন মমতা। তখন আবার স্পোর্টস কমপ্লেক্স খুঁড়ে হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছিল, তবে কিছুদিনের ভিতরেই সেই ‘ক্ষত’ সারিয়ে মাঠের রূপ ফেরানো হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy