গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাঁটাতারহীন এলাকা দিয়ে সারা বছরই পাচার হয় গরু, মাদক, জাল নোট থেকে জামদানি। তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে এখন মুর্শিদাবাদ সীমান্তে পাচারের নতুন ‘ট্রেন্ড’ গর্ভনিরোধক বড়ি! বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে মহিলাদের বিনামূল্যে বিলি হওয়া ওই ট্যাবলেট ছেয়ে গিয়েছে এ রাজ্যের বাজার।
মুর্শিদাবাদে লোকসভা নির্বাচন মিটতেই সেই পাচারচক্র আবার সক্রিয় হয়েছে বলে খবর। চলতি মাসেই মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে কুড়ি হাজারেরও বেশি গর্ভনিরোধক ট্যাবলেটের পাতা উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে বিএসএফের একটি সূত্র মারফত। বিষয়টি জানানো হয়েছে বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড (বিজিবি)-কেও।
বিএসএফ সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের রানিতলা সীমান্তের টিকলিচর, আহমদিয়া, সুতি এবং লালবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে কুড়ি হাজার গর্ভনিরোধক ট্যাবলেটের পাতা উদ্ধার করা হয়েছে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি সূত্র মারফত খবর, ওই দেশের পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রকের আওতায় থাকা বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালগুলিতে বিনামূল্যে ১০টি ট্যাবলেটের একটি পাতাযুক্ত গর্ভনিরোধক বড়ি দেওয়া হয়। কিন্তু, সেই ওষুধই পাচারকারীদের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে।
এই বড়ি পাচারের কারণ হিসাবে জানা যাচ্ছে, ভারতের সীমান্ত লগোয়া জেলাগুলিতে বাংলাদেশি গর্ভনিরোধক ট্যাবলেটের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির এক ওষুধ বিক্রেতা অমরেশ সাহা বলেন, ‘‘ভারতে ভাল মানের ২১টি কন্ট্রাসেপটিভ পিলের (গর্ভনিরোধক বড়ি) দাম পাতা প্রতি যেখানে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, সীমান্ত পেরিয়ে আসা ওই একই মানের গর্ভনিরোধক ওষুধ পাওয়া যায় ২০ থেকে ৩০ টাকায়।’’
বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের গোয়েন্দা আধিকারিকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি থেকে বিনামূল্যে ওষুধগুলি সংগ্রহ করে পাচারকারীরা কাঁটাতার টপকে এ দেশে ছুড়ে দেয়। ঘন জঙ্গল থাকায় সুবিধা হয় পাচারকারীদের। এর পর ভারতীয় পাচারকারীরা সেগুলি সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। এ ভাবেই চলছে এই চক্র। ইতিমধ্যে এ সম্পর্কে গোয়েন্দা বিভাগ তথ্য সংগ্রহ করে বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে পাচারের আগেই গর্ভনিরোধক ওষুধগুলি বাজেয়াপ্ত করেছে। তবে এই চক্রটিকে ধরার জন্য চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি এ কে আর্য। তিনি বলেন, ‘‘ওষুধের বাজারের কাজে যুক্ত সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। কোনও অবস্থাতেই সীমান্তের কাঁটাতার এলাকাকে পাচারকারীদের ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy