Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee and Rahul Gandhi

মমতার বৈঠকের জন্য বহরমপুর স্টেডিয়াম পাচ্ছেন না রাহুল! ক্ষুব্ধ অধীর বললেন, ‘ষড়যন্ত্র’

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বহরমপুরে থাকার কথা রাহুল গান্ধীর। তার আগের দিন অর্থাৎ, ৩১ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও প্রশাসনিক সভা রয়েছে বহরমপুর স্টেডিয়ামে।

Mamata Banerjee, Rahul Gandhi and Adhir Chowdhury

(বাঁ দিক থেকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গান্ধী এবং অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৪৪
Share: Save:

শিলিগুড়িতে রাহুল গান্ধীর সভার অনুমতি না-পাওয়া নিয়ে বিজেপি শাসিত দুই রাজ্যের সরকারের সঙ্গে বাংলার তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। এ বার অধীরের লোকসভা কেন্দ্রেই রাহুলের সভায় ‘বাধা’ এল। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি যা নিয়ে ক্ষুব্ধ অধীর বলছেন, ‘‘এটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।’’

ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা নিয়ে আবার ২৮ জানুয়ারি বাংলায় আসবেন রাহুল। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বহরমপুরে থাকার কথা তাঁর। তার আগের দিন অর্থাৎ, ৩১ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও প্রশাসনিক সভা রয়েছে বহরমপুর স্টেডিয়ামে। অন্য দিকে, রাহুল-সহ কংগ্রেস নেতৃত্বের রাত্রিবাসের জন্য বহরমপুর স্টেডিয়াম চাওয়া হয়েছিল। সেই অনুমতি প্রশাসন বাতিল করে দিয়েছে। জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারের সভা পূর্ব নির্ধারিত। কংগ্রেসের একটি সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক বৃহস্পতিবার তাদের জানিয়ে দিয়েছে বহরমপুর স্টেডিয়াম দেওয়া যাবে না। বিকল্প হিসাবে নিকটবর্তী এফইউসি মাঠ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু কংগ্রেসের দাবি, ওই মাঠে রাহুল এবং তাঁর গোটা টিমের রাত্রিবাসের জন্য পর্যাপ্ত জায়গাই নেই। অধীরদের অভিযোগ, রাজ্যের শাসকদল কোনও একটি অপ্রকাশিত কারণে কংগ্রেসের বিরোধিতা করছে। এক কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘‘সব রাজ্যেই বিজেপি সহযোগী দলের তরফে বাধা পেয়েছে রাহুল গান্ধীর ভারতজড়ো ন্যায় যাত্রা। তবে বাংলার ক্ষেত্রে এ রকম আচরণ আমরা প্রত্যাশা করিনি।’’

বস্তুত, মণিপুরে রাহুল গান্ধীর ‘ন্যায় যাত্রা’র একটি সভা পুলিশি অনুমতি না পেয়ে ভেস্তে গিয়েছিল। অসমেও পুলিশ ও বিজেপির সঙ্গে দফায় দফায় সংঘাত হয়েছে রাহুলের যাত্রার। অসম পেরিয়ে রাহুলের কর্মসূচি যখন বাংলার মাটি ছুঁয়েছে, তখন শিলিগুড়িতে রাহুলের সভার অনুমতি না-পাওয়া নিয়ে চাপানউতর তৈরি হয়। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের হাসিমারায় প্রবেশ করার পর রাহুল দিল্লি ফিরে যান। আগামী ২৮ জানুয়ারি আবার যাত্রা শুরু করবেন। তার মধ্যে বহরমপুরে এই জটিলতা নিয়ে কার্যত ক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর বলেন, ‘‘স্টেডিয়ামের ব্যাপারে অনেক আগে থেকে প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল। কর্মসূচির দু’এক দিন আগে হঠাৎ করে এ ভাবে অনুমতি বাতিলের ঘটনা নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিচ্ছে।’’ যদিও অধীরের অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছে শাসকদল। তৃণমূল নেতা অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি পূর্ব নির্ধারিত। অন্য কে কোথায় সভা করবেন, সেটা তাঁদের দলীয় ব্যাপার।’’

বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হবে কি না, তা নিয়ে জটিলতা অব্যাহত। বুধবার তৃণমূল নেত্রী মমতা জানিয়ে দেন, আগামী লোকসভা ভোটে বাংলায় তৃণমূল একাই লড়াই করবে। কংগ্রেসকে প্রথমে যে প্রস্তাব তিনি দিয়েছিলেন, তা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। তার পর আর কোনও কথা এগোয়নি। তার আগের দিন রাহুল বলেছিলেন, মমতার সঙ্গে তাঁর এবং তাঁর দলের সম্পর্ক ভাল। মমতা বাংলায় জোট নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করার পরও কংগ্রেস অবশ্য ‘ইন্ডিয়া’ নিয়ে আশাবাদী। হাত শিবির জানিয়ে দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া ইন্ডিয়া ভাবাই যায় না। তৃণমূল বিজেপি-বিরোধী জোটের অন্যতম স্তম্ভ। বৃহস্পতিবার তৃণমূলনেত্রীকে ফোন করেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। এই টানাপড়েনের জন্য আবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকেই দায়ী করেছে তৃণমূল। ওই দলের রাজ্য সভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের কথায়, ‘‘বাংলায় কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট ভেস্তে দেওয়ার প্রথম কারণ অধীর চৌধুরী, দ্বিতীয় কারণ অধীর চৌধুরী, তৃতীয় কারণও অধীর চৌধুরী।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE