প্রতীকী ছবি।
মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে আগেই শূন্যে মিলিয়ে গেছে কংগ্রেস। আশা জিইয়ে ছিল শমসেরগঞ্জ। এ বার সেখানেও যথেষ্ট বেকায়দায় পড়ল কংগ্রেস।
নির্বাচন স্থগিতের আগে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করলেও এখন শমসেরগঞ্জে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দিতা থেকে কার্যত সরে দাঁড়াতে চাইছেন জইদুর রহমান।
বিড়ি ব্যবসায়ী জইদুর সম্পর্কে জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমানের সহোদর ভাই। এলাকায় ওই পরিবারের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। তা ভেবেই কংগ্রেস তাকে দলীয় প্রার্থী করে এবং গত ২৬ এপ্রিল তিনি কংগ্রেসের হয়ে মনোনয়নও দাখিল করেন। ১৬ মে সেখানে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় সে নির্বাচন স্থগিত করে রেখেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের নোটিসে করোনা মহামারী পরিস্থিতি মূল্যায়নের পরে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করার কথাও বলা হয়েছে। এখনও এ রাজ্য থেকে করোনার বিধি নিষেধ তুলে নেওয়া হয়নি। বরং ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছে করোনার তৃতীয় স্রোত অক্টোবর মাস নাগাদ প্রবল আকার নিতে পারে। সেক্ষেত্রে স্থগিত হয়ে যাওয়া শমসেরগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে তা এখনও অনিশ্চিত।
শমসেরগঞ্জে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ২৬ এপ্রিল। সেই মত মনোনয়নও জমা পড়েছিল। কংগ্রেস প্রার্থী হন রেজাউল হক ওরফে মন্টু বিশ্বাস। করোনায় মৃত্যু হয় তাঁর। স্থগিত হয় নির্বাচন। ফের কংগ্রেসের হয়ে মনোনয়ন জমা দেন জইদুর রহমান। কিন্তু দু দুবার ভোটের দিন বদল করে নির্বাচন কমিশন। ১৩ মে, পরে ১৬ মে। করোনার অতিমারিতে তাও স্থগিত করে দেওয়া হয় অনির্দিষ্টকালের জন্য।
২০১৬ সালে ত্রিমুখী লড়াইয়ে মাত্র ১৭৮০ ভোটের ব্যবধানে শমসেরগঞ্জে জয়ী হয় তৃণমূল। সেই তৃণমূল এখন যথেষ্ট শক্তিশালী শমসেরগঞ্জে। যদিও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে শমসেরগঞ্জে প্রায় ৮ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল কংগ্রেস। কাজেই রাজনৈতিক দিক দিয়ে কংগ্রেসের ভাল সংখ্যায় ভোট রয়েছে শমসেরগঞ্জ কেন্দ্রে। জইদুরকে প্রার্থী করায় শমসেরগঞ্জ থেকে ফের জেলায় ঘুরে দাঁড়াবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে কংগ্রেস। কিন্তু রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শমসেরগঞ্জের নির্বাচনী লড়াই এই মুহূর্তে গুরুত্ব হারিয়েছে বুঝেই সম্ভবত প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াতে চাইছেন জইদুর।
জইদুর এদিন বলেন, “প্রার্থী হয়েছিলাম ঠিকই। কিন্তু এখন আর লড়ব কিনা ভাবছি। ৫০- ৫০ হয়ে আছে মন। তবে এতে কংগ্রেস কোনও অসুবিধেয় পড়বে না। কারণ যত দূর জানি শমসেরগঞ্জেও আবার মনোনয়ন পত্র দাখিল থেকেই নতুন করে শুরু হবে নির্বাচন পর্ব।”
কিন্তু জঙ্গিপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অমূল্য সরকার জানান, শমসেরগঞ্জের বিধানসভা নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। কাজেই যে অবস্থায় স্থগিত হয়েছে সেখান থেকেই শুরু হওয়ার কথা নির্বাচন কর্মসূচি।
একই কথা বলেন কংগ্রেসের জেলা মুখপাত্র জয়ন্ত দাসও। তিনি বলেন, “মনোনয়ন পর্ব যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে জইদুর রহমান দলের প্রার্থী হিসেবে লড়তে না চাইলে কংগ্রেস সমস্যায় পড়বে তো বটেই। জইদুর ভাল মানুষ। শমসেরগঞ্জে যথেষ্ট প্রভাবও রয়েছে। ফলে শমসেরগঞ্জে কংগ্রেস ভাল লড়াই দিতে পারবে। শমসেরগঞ্জ থেকেই ফের রাজ্যে ঘুরে দাঁড়াবার চেষ্টা করত কংগ্রেস। দেখা যাক তিনি কী সিদ্ধান্ত নেন।”
দলের এই অস্বস্তির মাঝেই শমসেরগঞ্জে কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি হবিবুর রহমান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও পদত্যাগ পত্র জমা দেননি জেলা কংগ্রেসের কাছে।
হবিবুর এদিন বলেন, “বয়স হয়েছে, তাই আর টেনশন নিতে পারছি না। জেলা কংগ্রেস নেতাদের জানিয়েছি দলের সভাপতি পদে আর থাকতে চাই না। দলের তরুণ কোনও নেতাকে দায়িত্ব দিন। অধীর চৌধুরী অবশ্য এখনই লিখিত ভাবে পদত্যাগ না করতে অনুরোধ করেছেন। তবে পদে থাকি বা না থাকি কংগ্রেসে আছি, থাকবও।”
তিনি জানান, ‘‘শূন্য থেকে শুরু করতে হবে কংগ্রেসকে। নির্বাচনে হারজিত আছেই। তাই রাজনীতিতে হতাশার কোনও জায়গা নেই। কিন্তু এই মুহূর্তে কিছুটা সমস্যায় রয়েছি আমরা প্রার্থী নিয়ে। কংগ্রেস চায়, প্রার্থী জইদুর রহমানকে সামনে রেখেই শমসেরগঞ্জে লড়াই করতে। কিন্তু চাপ আসছে নানা দিক থেকেই। তাই তাকে নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন যদি শমসেরগঞ্জে ফের নতুন করে নির্বাচন করার বিজ্ঞপ্তি দেয় এবং জইদুর রহমান যদি না দাঁড়াতে চান তবে ফরাক্কার প্রাক্তন বিধায়ক মইনুল হককে প্রার্থী করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।’’
মইনুল হক অবশ্য এদিন বলেন,“ দল থেকে আমাকে শমসেরগঞ্জে দাঁড়াবার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দলকে জানিয়ে দিয়েছি এটা সম্ভব নয়। নিজের জায়গা ছেড়ে আমি কোথাও যাব না।হারি জিতি ফরাক্কাকে ছেড়ে যাব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy