E-Paper

অসুস্থ বৃদ্ধের পরিচয়ে বিভ্রান্তি

গত ২৩ মার্চ মাঝ রাতে এক বৃদ্ধকে কোনও এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি করে যান সংজ্ঞাহীন অবস্থায়। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি হিসেবেই ভর্তি করা হয় তাঁকে।

A Photograph of an old man

হাসপাতালে ভর্তি এক বৃদ্ধের পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি শুরু হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:২৮
Share
Save

হাসপাতালে ভর্তি এক বৃদ্ধের পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি শুরু হয়েছে। অনেকটা ভাওয়ালের সন্ন্যাসী রাজার কাহিনিই তাতে মনে পড়ছে অনেকের।

জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৩ মার্চ মাঝ রাতে ওই বৃদ্ধকে কোনও এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি করে যান সংজ্ঞাহীন অবস্থায়। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি হিসেবেই ভর্তি করা হয় তাঁকে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বৃদ্ধের ছবি এবং অবস্থার কথা প্রকাশ পেতেই অনেকে জানান, বৃদ্ধকে তাঁরা চিনতে পেরেছেন। তাঁদের মতে, বৃদ্ধের বাড়ি সুতির একটি গ্রামে। সেখানেই যান কিছু স্বেচ্ছাসেবী কর্মী। গ্রামবাসীরাও ছবি দেখে বৃদ্ধকে শনাক্ত করেন সুকুমার সাহা বলে। সুকুমারবাবু পেশায় গ্রামীণ চিকিৎসক। তাঁর বাড়ি কলকাতার কাছে বিরাটিতে। কিন্তু ঘরজামাই হিসেবে সুতির গ্রামেই বাস করেন তিনি দীর্ঘ দিন। কিন্তু বাড়িতে যেতেই ওই বাড়ির দুই মহিলার বক্তব্য, এই বৃদ্ধকে তাঁরা চেনেনই না।

এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক সাহাদাত হোসেন বলেন, “গোটা গ্রাম যাঁকে শনাক্ত করছেন সুকুমার সাহা বলে এবং তাঁর বাড়িও দেখিয়ে দিচ্ছেন, সেখানে ওই বাড়িরই দুই মহিলা সুকুমারবাবুকে চিনতে অস্বীকার করেন।’’ সাহাদাত বলেন, ‘‘গ্রামবাসীরা জানান, ওই দুই মহিলার এক জন সুকুমারবাবুর স্ত্রী, অন্য জন তাঁর মেয়ে। বৃদ্ধ এখনও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন এবং তাঁর চিকিৎসা চলছে। বিষয়টি লিখিত ভাবে মহকুমা শাসকের কাছে জানানো হয়েছে।” জঙ্গিপুরের মহকুমা শাসক সিঞ্জন শেখর বলেন, ‘‘আমরা আজ ঘটনাটা জানতে পেরেছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা তদন্ত করব। তার পরে আইন মতো যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেওয়া হবে।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই বৃদ্ধ ভালই আয় করতেন। ভোটার তালিকায় নামও রয়েছে তাঁর ও পরিবারের। ওই স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি করলে দুই মহিলা আসেন। তাঁদের ওই বৃদ্ধের ছবি দেখানো হতেই ‘এঁকে চিনি না’ বলে সপাটে দরজা বন্ধ করে দেন এক মহিলা। প্রতিবেশীরা এলে শোরগোল শুরু হয়ে যায়। দুই মহিলা এরপর ছাদে উঠে চিৎকার করে জানিয়ে দেন, এই বৃদ্ধকে চেনেন না তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন দু’জন পুলিশকর্মীও। তাঁদেরও বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। বাড়িতে ঢোকার ঝুঁকি নেয়নি পুলিশও।

সাহাদাত বলেন, ‘‘বাড়ির দু’জনেই বৃদ্ধকে চিনতে অস্বীকার করছেন। কেন করছেন সেটা তাঁরাই বলতে পারবেন।’’

পাকা বাড়ি। বেশ কিছু জমাজমিও রয়েছে তার। তার স্ত্রী আইসিডিএস কর্মী। তার মেয়ে নার্সিং প্রশিক্ষণরত। তিন ছেলের দুজন বাইরে পড়াশুনো করে। এক ছেলে কোথাও গ্রামীণ চিকিতসক হিসেবে কাজ করে।গ্রামবাসীদের অভিযোগ,“ তারা শুনেছেন বৃদ্ধের যাবতীয় বিষয় সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখিয়ে নিয়ে ওই বৃদ্ধকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন তার পরিবারের লোকেরাই কিছু দিন আগে।”কেন তা অবশ্য তারা জানেন না।এমনকি বৃদ্ধকে জঙ্গিপুর হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাও জানা নেই তাদের। তবে ছবি দেখে প্রতিবেশিরা নিশ্চিত তার নাম সুকুমার সাহা, সাদিকপুরেরই বাসিন্দা।ভোটার তালিকায় নামও রয়েছে তার ও পরিবারের। এরপর ওই স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা যান তার বাড়িতে।ডাকাডাকিতে বাড়ির দরজা খুললে তার স্ত্রী ও মেয়েকে ওই বৃদ্ধের ছবি দেখানো হতেই একে চিনি না বলে সপাটে দরজা বন্ধ করে দেন স্ত্রী। এরপর প্রতিবেশিদের জমায়েত বাড়তে থাকে। সোরগোল শুরু হয়ে যায়।তার মেয়ে ও স্ত্রী এরপর ছাদে উঠে চিতকার করে জানিয়ে দেন এই বৃদ্ধকে চেনেন না তারা। সঙ্গে ছিল দুজন পুলিশ কর্মীও।তাদেরও বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। যেহেতূ দুজনেই মহিলা ও বার বার প্রতিবাদ করছিলেন তাই বাড়িতে ঢোকার ঝুঁকি নেয় নি পুলিশ।এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক সাহাদাত হোসেন বলেন,“ গোটা গ্রাম যাকে সনাক্ত করছেন সুকুমার সাহা বলে এবং এটাই তার বাড়ি।ওই মহিলা তার স্ত্রী ও পাশের জন তার মেয়ে।কিন্তু তারা দুজনেই বৃদ্ধকে চিনতে অস্বীকার করছে।কেন করছে সেটা তারাই বলতে পারবে। ওই বৃদ্ধ এখনও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন এবং তার চিকিতসা চলছে। মানবিকতার খাতিরে চেষ্টা করেছি ওই বৃদ্ধকে তার বাড়িতে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে।কিন্তু আইনগত সমস্যা হতে পারে ভেবেই বিষয়টি লিখিতভাবে মহকুমা শাসকের কাছে জানানো হয়েছে।”

এক মহিলা তার স্ত্রী ও পাশের জন তার মেয়ে। কিন্তু তারা দুজনেই বৃদ্ধকে চিনতে অস্বীকার করছে। কেন করছে সেটা তারাই বলতে পারবে। ওই বৃদ্ধ এখনও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন এবং তার চিকিতসা চলছে। মানবিকতার খাতিরে চেষ্টা করেছি ওই বৃদ্ধকে তার বাড়িতে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে। কিন্তু আইনগত সমস্যা হতে পারে ভেবেই বিষয়টি লিখিতভাবে মহকুমা শাসকের কাছে জানানো হয়েছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Identity Crisis Old Age Suti

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।