জটিল অস্ত্রোপচারে দৃষ্টিশক্তি বাঁচল চার মাসের একটি শিশুর। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
রানিনগর থানার কালীনগর গ্রামের বাসিন্দা শেফালি খাতুনের চার মাসের ছেলে আহমেদ আলির যখন ২৪ দিন বয়স, সেই সময় তার চোখে আঘাত লেগেছিল। তারপরই তার চোখ ফুলতে শুরু করে। এক সময় শিশুটির দু’চোখই বন্ধ হয়ে যাওয়ায়সেকিছু দেখতে পারছিল না। পরিবারের লোকজন জানান, শিশুটি সর্বক্ষণ কাঁদত। শিশুটিকে ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে মাসখানেকের শিশুটির রক্তপরীক্ষা, সিটি স্ক্যান করেও রোগ ধরা পড়েনি। পরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কলকাতার কয়েকটি হাসপাতালে তাকে দেখানো হলেও সুরাহা হয়নি। এরপর হতাশ বাড়ির লোক মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফের ছেলেকে ভর্তি করেন। হাসপাতালের শিশুবিশেষজ্ঞ ভোলানাথ আইচের চিকিৎসায় কিছুটা সাড়া দেয় আহমেদ। তার চোখের বাঁদিকের ফোলা কমতে থাকে। কিন্তু নতুন করে শিশুটির চোখের নীচ থেকে পুঁজ বেরোতে থাকে। ভোলানাথবাবু হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রণব শিকদারের কাছে পাঠান শিশুটিকে। প্রণববাবু শিশুটিকে পরীক্ষার পর হাসপাতালের নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ গৌতম বিশ্বাসের কাছে পাঠান। গৌতমবাবু বুধবার বলেন, “সিটি স্ক্যানের রিপোর্টে স্পষ্ট, উঁচু জায়গা থেকে পড়ে বাচ্চাটির মাথায় আঘাত লেগেছিল। সেসময় চোখের ভিতর কিছু ঢুকে গিয়েছিল। তা থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে।’’ তিনি জানান, শিশুটির মস্তিষ্কের কিছুটা ক্ষতি হয়েছিল। তবে তার চোখের সংক্রমণ হওয়া অংশে অস্ত্রোপচার না করলে তার দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু অজ্ঞান করে অস্ত্রোপচারেও ঝুঁকি ছিল। গৌতমবাবু জানান, জ্ঞান ফেরার পরেও একরত্তি শিশুর প্রাণসংশয় থেকে যায়। হাসপাতালের চিকিৎসক তপোব্রত মিশ্র, হাবিবুর রহমান, চন্দ্রিকা মণ্ডল, চক্ষুবিশেষজ্ঞ প্রণব শিকদারদের নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করেন গৌতম বিশ্বাস। পরে তিনি বলেন, “অস্ত্রোপচার করে শিশুটির চোখের নীচের অংশ থেকে ফরেন বডি বের করে দেওয়া হয়েছে। আপাতত শিশুটি ভাল আছে।’’ হাসপাতালের সুপার অমিয়কুমার বেরা বলেন, “আমাদের হাসপাতালে নিউরো-মেডিসিনের চিকিৎসক নেই। শিশুটির মস্তিষ্কে আঘাত লেগেছিল। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন ছিল বলে কলকাতার হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছিল। ওঁরা পরামর্শ নিয়ে ফিরে এলে এত হয়রান হতে হত না। অস্ত্রোপচার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy