যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডু। —ফাইল চিত্র।
ভিন্ন সময়ে বাড়িতে এসে অনেকেই দেখেছেন শান্ত স্বভাবের লাজুক ছেলেটিকে। বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আশাকর্মী মা স্বপ্না কুণ্ডুরর পাশে পাশে দেখে অনেকেই মজা করে বলতেন, “ছেলেটা বড্ড মায়ের ন্যাওটা।” সেই স্বপ্নদীপ আজ আর নেই। শান্ত স্বভাবের মুখচোরা ছেলেটার অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তাঁর মায়ের সহকর্মীরা। শোকে স্তম্ভিত তাঁর মায়ের এক সহকর্মী বলেন, “এই তো সেদিন, বি.এল.ও ডিউটির খাতা পৌঁছে দিতে গিয়ে ছেলেটাকে বাড়িতে দেখে এলাম।” স্বপ্নদীপের মৃত্যুতে চোখের জল যেন বাঁধ মানছে না নদিয়ার বগুলার চেনা-অচেনা কয়েকশো আশাকর্মীর। তাঁদের প্রত্যেকের একটাই দাবি - ‘বিচার’। এই অকাল মৃত্যুর পিছনে জড়িত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। স্বপ্নদীপের মৃত্যুর বিচার চেয়ে শনিবার বিকেলে প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হন মা স্বপ্না কুণ্ডুর সহকর্মীর। কাউকে জেঠিমা, কাউকে কাকিমা আবার কাউকে মাসিমা বলে ডাকতেন স্বপ্নদীপ। আবার হয়তো এদের কারও সাথে কোনওদিন দেখাই হয়নি তাঁর।
শনিবার বিকেলে বগুলা হাসপাতাল থেকে বগুলা বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বগুলা হাসপাতালের বিএমওএইচ অরুণ মজুমদার। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন প্রতিবাদী আশাকর্মীরা। তাঁদের দাবি, এই ঘটনায় দোষীদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে। এখনও যাদের গ্রেফতার করা হয়নি, তাঁদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে।
বুধবার রাতে যাদবপুরের হস্টেলের এ-২ ব্লকের তিন তলার বারান্দা থেকে নীচে পড়ে যান স্বপ্নদীপ। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর মৃত্যু হয়। বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। নদিয়া থেকে যাদবপুরে বাংলা পড়তে গিয়েছিলেন। তিন দিন মাত্র হস্টেলে ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে হস্টেলের সিনিয়রদের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। খুনের অভিযোগ তুলেছে মৃতের পরিবার। ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী তথা মেন হস্টেলের আবাসিক সৌরভ চৌধুরিকে গ্রেফতার করেছে।
পরিচিতরা অনেকেই স্বপ্নদীপের স্মৃতি রোমন্থন করছেন। অনেকের চোখে ভাসছে ছেলেটার লাজুক হাসি। হাঁসখালীর আশাকর্মী সুদীপা বিশ্বাস জানান “মায়ের সঙ্গে কতবার দেখেছি ছেলেটাকে। সব সময় মায়ের আঁচল ধরে ঘুরতো। মজা করে ওকে মায়ের ন্যাওটা বলতাম।” অনেকে আবার ফুঁসছেন ক্ষোভে। রমলা হালদার নামে জনৈক এক আশাকর্মী বলেন, “এভাবে ফুট ফুটে একটা ছেলেকে খুন করা হল। বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসুত্রিকার সুযোগ নিয়ে যেন দোষীরা বেঁচে না যায়। বিশেষ আইন তৈরি করে দোষীদের দ্রুত ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy