মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল ছবি।
বুধবার মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে প্রশাসনিক সভা করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বছর খানেক পর তাঁর মুর্শিদাবাদে আমগণ উপলক্ষে সেজে উঠছে নবাবের ‘দেশ’। বহরমপুর স্টেডিয়ামে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ। তবে, গত বারের সঙ্গে লক্ষণীয় একটি পার্থক্যও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তা হল, মঞ্চের বহর। গত প্রশাসনিক বৈঠকের সময় যে আকারের মঞ্চ তৈরি হয়েছিল, এ বার তা বহরে অনেকটাই কম। প্রশাসন সূত্রে খবর, মূলত খরচ কমানোর লক্ষ্যেই ছোট হয়েছে মঞ্চ। কাটছাঁট করা হয়েছে আনুষঙ্গিক আরও অনেক কিছুতেই। অধীর-গড়ে মমতার মঞ্চের বহরে কাটছাঁট রাতারাতি হয়ে উঠেছে রাজনীতির ‘হট টপিক’। কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনা সত্ত্বেও রাজ্যবাসীকে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এই ব্যয় সংকোচ বলে দাবি তৃণমূলের। যাকে ভোটের আগে নাটক বলে কটাক্ষ বিজেপির।
ইদানীং, রাজনৈতিক বা সরকারি কোনও সভার জন্য নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে মঞ্চ তৈরি হয়। অর্থাৎ, বাঁশ আর কাঠের পাটাতনের বদলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্টিলের পাত এবং লোহার বিম দিয়ে অস্থায়ী তাবু বা প্যান্ডেল তৈরি হচ্ছে। তাতে সময়ও লাগছে কম, আবার ভার বহনের ক্ষেত্রে তা আগের বাঁশ, কাঠের তক্তার মঞ্চের তুলনায় অনেক বেশি টেকসই। পরিভাষায় যার নাম ‘হ্যাঙার’। প্রশাসন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর গতবারের প্রশাসনিক বৈঠকে মঞ্চের বহরের তুলনায় এ বার তা খানিকটা ছোট হচ্ছে। এ জন্য মঞ্চ বাবদ খরচ কমে যাবে এক তৃতীয়াংশ। ‘অপ্রয়োজনীয়’ খরচেও লাগাম পরানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভার খরচ বিগত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ কমিয়ে ফেলা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্র খবর।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো সভার বহর কমিয়ে ফেলা হয়েছে। এর আগের বছর মুখ্যমন্ত্রীর সভায় শুধু প্যান্ডেল খরচই আড়াই কোটির ঘরে চলে গিয়েছিল। সঙ্গে ছিল ভিআইপিদের থাকা খাওয়ার খরচ।” প্রশাসনের ওই শীর্ষ কর্তা আরও বলেন, “এ বার অধিকাংশ খরচই ছেঁটে ফেলা হয়েছে। কোথাও তিন ভাগের এক ভাগ, কোথাও খরচ অর্ধেক করার নির্দেশ ছিল। সেই মতোই সব ব্যবস্থা হয়েছে।” মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর এ বছরের প্রশাসনিক সভায় অপ্রয়োজনীয় খরচ যাতে না হয় সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই থাকছে। মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দফতরের পরামর্শ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।’’
খরচ কমানোর সিদ্ধান্ত হলেও নিরাপত্তাব্যবস্থা অবশ্য একই রকম। বহরমপুর স্টেডিয়ামে তৈরি হয়েছে অস্থায়ী হেলিপ্যাড। বেশ কয়েক বার ‘মক ড্রিল’ করেছে হেলিকপ্টার সংস্থা। হেলিপ্যাড ও তাকে ঘিরে তৈরি হওয়া নিরাপত্তা বলয় নিজে এসে পরখ করে গিয়েছেন পুলিশ সুপার সূর্যপ্রকাশ যাদব। পরিদর্শনে এসেছিলেন জেলাশাসকও। মুখ্যমন্ত্রীর সভার আগে কাজ করছে জরুরিভিত্তিক আইটি সেল। সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হচ্ছে চৌহদ্দি।
মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য বাতিল করা হয়েছে প্রায় সব দফতরের কর্মীদের ছুটি। জরুরি কারণ থাকলেই একমাত্র ছুটি মঞ্জুর করা হচ্ছে সরকারি কর্মীদের। এখনও মাঠে তদারকি করছেন পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা। সভাস্থল ও হেলিপ্যাডের নিরাপত্তার দায়িত্বে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার কোথায় শেষ মুহূর্তে অবতরণ করবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। তাই ব্যারাক স্কোয়ারের হেলিপ্যাডটিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সার্কিট হাউসেও চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সভার প্রায় ২৪ ঘণ্টা আগে থেকে বিশেষ অনুমতি ছাড়া কাউকে মাঠে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy