সিভিকের রক্তদান কিশোরীকে। নিজস্ব চিত্র
রক্ত নেই। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত নাবালিকা পলি খাতুনের হিমোগ্লোবিন নেমে এসেছে ৩.৬গ্রাম /ডেসিলিটার মাত্রায়। বাবা মৃত। বাড়িতে মায়ের চলাফেরার শক্তি নেই। শেষ পর্যন্ত এক প্রতিবেশী সম্পর্কে ভাইঝি মাজিরা খাতুন শ্বশুরবাড়িতে পলির বোন বেলির কাছে মিল্কি গ্রামে খবর পাঠান।দু’জনে মিলেই তাকে ভর্তি করেন সাগরদিঘি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মঙ্গলবার দুপুরে।রক্তের গ্রুপও সহজলভ্য। কিন্তু হাসপাতাল রক্তশূন্য। হন্যে হয়ে ঘুরেও রক্ত মেলেনি, মেলেনি রক্তদাতাও। শেষ পর্যন্ত খবর পেয়ে রোজার সময় রক্ত দিতে এগিয়ে এলেন সাগরদিঘি থানারই সিভিক কর্মী বীরভূম লাগোয়া তাঁতিবিড়োল গ্রামের উদাউল ইসলাম। বুধবার দুপুরে খবর পেয়েই রক্ত দিতে হাজির উদাউল হাসপাতালে। এদিনই সন্ধ্যায় ল্যাবে রক্ত পরীক্ষার পর সে রক্ত দেওয়া হতেই রাতেই অনেকটাই সুস্থ পলি। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল পরিবার ও প্রতিবেশীরা।
বছর ৩০ বয়সের সিভিক কর্মী উদাউল বলছেন, “মঙ্গলবার রোজা শুরু হয়েছে। সবাই রোজা রেখেছে বাড়িতে। আমিও। বুধবার বেলা যখন প্রায় ১টা, গ্রামের মসজিদে বেরোচ্ছি নামাজ পড়তে। হঠাতই ফোন। ফোন ধরতেই একটি রক্তদাতা সংস্থার কর্মীর আর্জি। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক কিশোরীর হিমোগ্লোবিন নেমেছে ৩.৬-তে। এই মুহূর্তে হাসপাতালে নেই বি পজ়িটিভ রক্ত। ভাঁড়ার শূন্য। তাই রক্ত দিতে হবে এখনই। ফোন পেতেই আর দেরি করিনি। রক্ত দেওয়াটাই আগে জরুরি। বাইক নিয়ে সোজা ১৫ কিলোমিটার দূরে হাসপাতালে। ওই কিশোরীকে আমি চিনি না। রক্ত দিয়ে বাড়ি ফিরলাম বেলা ৪টে নাগাদ।”
রক্ত পেয়ে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন পলির পরিবারও। মাজিরা বলছেন, “দু’দিন থেকে অসুস্থ পলি। দেখার কেউ নেই। শেষ পর্যন্ত রোজা রেখেই এক সিভিক কর্মী এগিয়ে আসেন রক্ত দিতে। এ যাত্রা বিপদ কাটে পলির।”
এই নিয়ে ২৭ বার রক্ত দিলেন উদাউল। বলছেন,“আমার একমাত্র মেয়ে টোটোতে আসার সময় মারাত্মক দুর্ঘটনায় পড়ে গ্রামে। কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মেয়ের অপারেশনের জন্য দরকার পড়ে রক্তের। হাসপাতালেই এগিয়ে আসেন এক রোগীর আত্মীয়। সেদিনের সেই রক্তদান হাসি ফুটিয়েছিল আমার পরিবারের মুখে। সেই থেকেই ঠিক করি কারও বিপদে ডাক পেলেই সব কাজ ফেলে রক্ত দেব।” সাগরদিঘির ইমাম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘‘এই যুবক ঠিক কাজই করেছেন। মানবিক কাজ করেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy