জালের মতো ছড়ানো তার। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। নিজস্ব চিত্র
রাস্তার দু’দিকে দোকান। দোকানের সামনে ঝুলছে হরেক জিনিস। নীচেও জিনিস থরে থরে সাজানো। ফলে সরু রাস্তা আরও সরু হয়েছে। পুরবাসীদের একাংশের আশঙ্কা, কোনও ভাবে বাজারে এক বার আগুন লাগে তা হলে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার থাকবে না। দমকলও সেই আশঙ্কায় সিলমোহর দিয়েছে। কর্তারা জানান, রাস্তা যেমন সরু, তেমনই খামতি রয়েছে আগুন নেভানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাতেও। বিষয়টি ভাবিয়েছে ব্যবসায়ীদেরও। তবে পুরসভা এ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি।
পুরবাসীদের একাংশ জানান, চাকদহ রেলস্টেশন ছেড়ে বড় রাস্তায় যাওয়ার পথে সার দিয়ে রয়েছে দোকান। মাঝে এক ফালি পাকা রাস্তা। তা এতই অপরিসর যে ঠিক মতো চলাচল করা যায় না। খুঁটিতে বিদ্যুতের তার জালের মতো বিছিয়ে রয়েছে। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের ধারণা, এক বার আগুন লাগলে রক্ষে থাকবে না। শহরের সবচেয়ে জনবহুল এলাকা ৮ নম্বর ওয়ার্ড। শহরের প্রাণকেন্দ্র বললে ভুল হবে না। রয়েছে চালের বাজার থেকে শুরু করে আনাজের বাজার, মাছের বাজার। থানার মোড় থেকে সিংহেরহাট হয়ে রাস্তা চলে গিয়েছে রানাঘাট কোর্টমোড়। সেই রাস্তার দু’ধারেও রয়েছে দোকান। বসন্ত স্মৃতি পাঠাগারের পাশ দিয়ে একটি রাস্তা লক্ষ্মী সিনেমা হলের দিকে চলে গিয়েছে। সেই রাস্তার ধারেও রয়েছে প্রচুর দোকান। সেই সব রাস্তা এত সরু যে দমকলের গাড়ি ঢুকবে তার জো নেই।
বাজারে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা সে ভাবে না থাকার বিষয়টি ভাবিয়েছে ব্যবসায়ীদের। শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও পেশায় ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, “অনেকে রাস্তার উপরে জিনিসপত্র এমন ভাবে রেখে দেন যে, আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি সহজে ঢুকতে পারবে না।” আর এক ব্যবসায়ী অশোক বিশ্বাস বলেন, “আগুন লাগা নিয়ে আমরা ভয়ে থাকি।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় চাকদহে কোনও দমকল কেন্দ্র ছিল না। কোথাও আগুন লাগলে কম পক্ষে ১৫ কিলোমিটার দূরে রানাঘাট দমকল কেন্দ্র বা প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে কল্যাণী দমকল কেন্দ্র থেকে ইঞ্জিন আসত। ২০১৯ সালে রাজ্য সরকার চাকদহ শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে দমকল কেন্দ্র গড়ে। তাতে ও সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি।
চাকদহ দমকল কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তাপস সাহা জানান, সরু রাস্তার জন্য দমকলের গাড়ি না-নিয়ে যেতে পারার সমস্যা তো আছেই। সমস্যা রয়েছে জলেরও। শহরে বিভিন্ন জায়গায় পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা নেই। দমকলের আনা জল ফুরোলে আরও জলের দরকার হয়। সে জন্য এলাকায় রিজার্ভার দরকার হয়। তাঁর দাবি, শহরে সে রকম কোনও রিজার্ভার নেই। তাই সঙ্গে পাম্প নিয়ে গেলেও কোনও কাজে আসে না। তিনি বলেন, ‘‘এমন হলে আমরা আগুন নেভাতে জল পাই কোথায়? আমরা পুরসভার কাছে এক লক্ষ লিটার অথবা ৫০ হাজার লিটার জলের রিজারভার বানানোর আবেদন জানাব। রিজার্ভার করে দিলে আগুন নেভাতে সহজ হয়। ক্ষয়ক্ষতি কমে।”
প্রাক্তন কাউন্সিলরদের একাংশ অবশ্য দুষছেন মানুষের সচেতনতাকে। তাঁদের দাবি, অনেকে দমকলের গাড়িকে রাস্তা ছাড়তে চান না। ব্যবসায়ীদের একাংশও দোকানে পর্যাপ্ত আগুন নেভানো ব্যবস্থা রাখেন না। প্রাক্তন পুরপ্রধান দীপক চক্রবর্তীর সঙ্গে এ ব্যপারে যোগাযোগ করা হলে তাঁর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘‘শহরের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে কিছু বলব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy