প্রতীকী ছবি।
একেবারে শেষ মুহূর্তে বদলে গেল হরিণঘাটার পুরপ্রধানের নাম। সোমবার নবগঠিত পুরবোর্ডের প্রথম বৈঠকে পুরপ্রধান নির্বাচিত হলেন প্রাক্তন মুখ্য পুর প্রশাসক দেবাশিস বসু। উপ-পুরপ্রধান হলেন প্রাক্তন উপ-পুর প্রশাসক সঞ্জীব রাম। প্রাক্তন পুরপ্রধান রাজীব দালাল দুই শীর্যপদের কোনওটিতেই রইলেন না।
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, রবিবার দুপুর থেকেই পুরপ্রধানের পদ নিয়ে টানাপড়েন চলছিল। রবিবার রাতে দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে নির্দেশ আসে, বিগত পুর প্রশাসন পর্ষদের মুখ্য এবং উপ-প্রশাসকই যথাক্রমে পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধান হিসাবে কাজ চালাবেন। এর আগে দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে পুরপ্পরধান হিসেবে সঞ্জীব রাম এবং উপ-পুরপ্রধান পদে রাজীব দালালের নাম জানানো হয়েছিল। বিগত পুরবোর্ডে সঞ্জীব রাম উপ-পুরপ্রধান ছিলেন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিতেই দল এই রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দলের জেলা নেতৃত্বের একাংশের। তৃণমূলের একাধিক সূত্রের দাবি, হরিণঘাটায় দলের দু’টি গোষ্ঠী সক্রিয়। এক দিকে দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী রত্না ঘোষের গোষ্ঠী, অন্য দিকে হরিণঘাটা ব্লক সভাপতি চঞ্চল দেবনাথের গোষ্ঠী। চঞ্চল ব্লকের নেতা হলেও পুর এলাকায় তাঁর ভাল প্রভাব রয়েছে। নব-নির্বাচিত কাউন্সিলরদেরও বেশির ভাগই তাঁরই গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত। নবনির্বাচিত পুরপ্রধান দেবাশিস বসু এবং প্রাক্তন পুরপ্রধান রাজীব দালালও তা-ই। গত ১৭ মার্চ পুরপ্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে একাধিক নাম উঠে আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। ভোটাভুটি হওয়ারও সম্ভাবনা ছিল। সে ক্ষেত্রে রত্না শিবিরের সঞ্জীব রামের পুরপ্রধান হিসাবে জয়লাভ কঠিন ছিল।
সে দিন ‘প্রশাসনিক কারণে’ নবগঠিত পুরবোর্ডের প্রথম বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়। যদিও সে দিন কাউন্সিলরদের শপথগ্রহণ হয়ে গিয়েছিল। এর পর থেকে হিসেব বদলে যাচ্ছিল। কয়েক দিন আগেই কল্যাণীতে একটি সরকারি কর্মসূচিতে আসেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সরকারি কর্মসূচির পরে তিনি দলীয় নেতৃত্ব এবং কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথাও বলেন। দলীয় সূত্রে জানা যায়, প্রধান ও উপপ্রধান পদে পূর্বঘোষিত নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে না। যদিও এ রকম কোনও আলোচনার কথা অস্বীকার করে জেলা তৃণমূল। এ দিন পুরপ্রধান হিসাবে শপথ নেওয়ার পর দেবাশিস বসু দাবি করেন, “আগে রাজ্যস্তর থেকে অন্য কারও নাম পাঠানো হয়েছিল কি না তা আমাদের জানা নেই।” যদিও হরিণঘাটা শহর তৃণমূল সভাপতি, রত্না-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত উত্তম সাহা বলছেন অন্য কথা। তাঁর দাবি, “রবিবার রাত সাড়ে ১০টার নাগাদ আমাদের কাছে খবর আসে, পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধান পরিবর্তন করা হল। নতুন এক জনকে পুরপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। দলের শহর সভাপতি হিসাবে দলের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছি। তবে আমার মনে হচ্ছে, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্ত নয়।” পদ-হারা রাজীব দালালেরও বক্তব্য, “দলের সিদ্ধান্ত নতমস্তকে মেনে নিলাম।”
তবে রত্না ঘোষের দাবি, “হরিণঘাটায় কারও আলাদা শিবির বলে কিছু নেই। বোর্ড গঠনের আগে দল একটা নির্দেশ পাঠায়। সেই নির্দেশ কার্যকারী করাটাই আমাদের মূল দায়িত্ব। সেটা আমরা পালন করেছি।” আর চঞ্চল দেবনাথ বলছেন, “নতুন পুরপ্রধান সমস্ত কাউন্সিলরদের নিয়ে সমন্বয়ের ভিত্তিতে পুরসভা চালান, এটাই আমরা চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy