Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Cauliflower

আমিষের গন্ধ ঢেকেছে কপি-পালং কুয়াশায়

ট্রেন চলতে শুরু করায় স্টেশনে হারানো ব্যস্ততা স্বল্প হলেও ফিরছিল। শীত এসে তা যেন নতুন করে উস্কে দিয়েছে।

শীতের প্রস্তুতি: বানানো হচ্ছে লেপ, দোকানে হাজির শীতের পোশাক। নওদায়। ছবি: মফিদুল ইসলাম

শীতের প্রস্তুতি: বানানো হচ্ছে লেপ, দোকানে হাজির শীতের পোশাক। নওদায়। ছবি: মফিদুল ইসলাম

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২০ ০২:৫৫
Share: Save:

বাজারে ফুলকপির ভিড়, নরম পালংশাকের পাতায় শিশিরের ফোঁটা, আনাজের গন্ধে আমিষ মুখ ঢাকছে। শীত এসে গিয়েছে। তা যে একেবারে নভেম্বরের গা ঘেঁষে অপেক্ষা করছিল, মুখ ভারী আকাশ কিঞ্চিৎ ফর্সা হতেই তা একেবারে দাঁত-নখ বের করে নেমে এসে বুঝিয়ে দিয়েছে।

রাতারাতি ন্যাপথলিনের গন্ধ মাখা সোয়েটার-শাল বেরিয়ে পড়েছে ট্রাঙ্ক থেকে। তাক থেকে নেমে এসেছে বালাপোশ। জেলা জুড়ে গত দু’দিনে শীত যেন কোভিডের চেয়েও দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে এবং করোনার গ্রাস থেকে কেউ বা রেহাই পেলেও গত দু’দিনের এই নভেম্বরের শীতে রেহাই মেলেনি কারও!

ট্রেন চলতে শুরু করায় স্টেশনে হারানো ব্যস্ততা স্বল্প হলেও ফিরছিল। শীত এসে তা যেন নতুন করে উস্কে দিয়েছে। ভোরের উনুন জ্বেলে পুরনো কালের মতোই ফের সকালের গরম চা, প্ল্যাটফর্মের স্টলে কেক-বিস্কুটের জন্য জবুথুবু মানুষের আনাগোনা মনে করিয়ে দিচ্ছে হারানো শীতের কথা। বহরমপুরের রাস্তায় আগের মতো না হলেও ইতি-উতি চোখে পড়ছে কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের আনাগোনা। এলেন কী করে? তাঁদেরই এক জন জানালেন, আসেননি বরং বলা ভাল ফিরতেই পারেননি তিনি। পুরনো সামগ্রী নিয়ে শীত পড়তেই ফিরি করতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন তিনি। রুজি বড় বালাই! পেটের টানে দেশে ফিরতে না পারা মানুষটা বুঝি শীতের অপেক্ষাতেই ছিলেন। তবে তাঁর সঙ্গীদের অনেকেই অবশ্য মার্চে লকডাউনের ধাক্কায় ‘বন্দি’ হয়ে গেলেও মে-জুন মাসে উড়ান চালু হলে ধারদেনা করে ট্রেনের বদলে বিমানেই পাড়ি দিয়েছিলেন। তবে পৌঁছেই আবার নেমে এসেছেন। না এলে উপায় কী!

তবে এই প্রথম শীতে এখনও দেখা নেই ভুটানি সোয়েটার বিক্রেতাদের। উল কিংবা সোয়েটার নিয়ে তাঁদের ঝলমলে রঙিন পসরায় যেন সেজে ওঠে বহরমপুর। বিশেষ করে রানিবাগান বাসস্ট্যাণ্ড ইয়ংস কর্ণারের মাঠে আর এফইউসি ক্লাবের মাঠখানা। এ বার এখনও তাঁরা এ শহরে পা রাখতে পারেননি। শীতের অঙ্গ সেই ভুটিয়াদের লকডাউন কিংবা কোভিড ভীতি দূরে ঠেলে রেখেছে এখনও। বহরমপুরের এক পুরনো বাসিন্দা বলছেন, উলের সেই গোলাগুলোই যেন শীত বয়ে আনে। এ বার শীত এসে গেল ওঁরা নেই দেখে একটু মনখারাপই হচ্ছে।

তবে এরই মধ্যে সাইকেল কিংবা পায়ে হেঁটে ধুনুরি ইদ্রিশ মিঞারা বেরিয়ে পড়েছেন। তাঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘সারা বছর তোষক, বালিশ হয় ঠিকই কিন্তু শীত এলে আমাদের রুজির দরজা অনেকটা খুলে যায়। এখন অনেকেই দোকান থেকে কম্বল কেনেন ঠিকই তবে শীতের লেপের আমেজ আলাদা!’’

তবু এমন নব্য মরসুমে একটা সুক্ষ্ম বয়ও লুকিয়ে আছে বুঝি— এই শীতে আবার কোভিডের দাঁত প্রবল হয়ে উঠবে না তো! চিকিৎসকেরা বলছেন, ‘‘শীতে ভাইরাসজনিত ব্যধি বাড়ে। সেক্ষেত্রে ঠাণ্ডা না-লাগানো, খুব জরুরি। ফলে শীতের আমেজ নিয়েও সেই পুরনো কথা, একটু সতর্ক থাকাই ভাল।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cauliflower Spinach Winter season
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy