n শমসেরগঞ্জের প্রচারে তৃণমূলের তারকা নেতারা। ছবি: জীবন সরকার।
ভোটের আগে শেষ রবিবারে জঙ্গিপুরে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ভোট প্রচারে ছুটে বেড়ালেন দুই মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি ও বাম প্রার্থী। নির্বিঘ্নে প্রচার সারলেন তাঁরা। প্রার্থী নিজে না বেরোলেও তৃণমূলের প্রচারে অবশ্য এদিন নিজের নিজের এলাকায় ঘুরেছেন দলের ছোট বড় নেতারা।
শমসেরগঞ্জ অবশ্য প্রচারে দিনভর চলল তৃণমূল ও কংগ্রেস প্রার্থীদের মধ্যে একে অন্যকে আক্রমণ। এমনকী সে আক্রমণ নেমে এল ব্যক্তিগত স্তরেও।
শেষ রবিবাসরীয় প্রচার এ দিন এক দিকে জঙ্গিপুরে শান্তিপূর্ণ ভোটের বার্তা দিলেও বুঝিয়ে দিয়েছে শমসেরগঞ্জে ক্রমশ চড়ছে উত্তেজনার পারদ।
শমসেরগঞ্জে গত দু’দিনে সিপিএম ও তৃণমূলের দুই নেতার বাড়িতে বোমা পড়েছে, যাতে অভিযোগ উঠেছে তাদের পরস্পরের বিরুদ্ধে।
দুর্গাপুজোর আর হাতে গোনা কয়েকটি দিন বাকি। কিন্তু ধুলিয়ান এবং রঘুনাথগঞ্জ ভোটের দুই শহরেই বাজার হাট প্রায় ফাঁকা। সেই ফাঁকা হাটেই রঘুনাথগঞ্জ শহরের সদরঘাটে সাত সকালেই বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মালা দিয়ে প্রচার শুরু করেন বিজেপি প্রার্থী সুজিত দাস। সুজিতবাবুর আশা, “মানুষ বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন। আমরা আশাবাদী। প্রকাশ্য বড় সভা আর নয়। ঘরে ঘরে প্রচার চলছে এখন আমাদের সর্বত্র। নির্বাচন নিয়ে বড় অশান্তির আশঙ্কা করছি না।” বাম প্রার্থী আরএসপির জানে আলম মিঞা চষে ফেলেছেন পশ্চিমে মিঞাপুর ও উমরপুর। একসময় এই এলাকা সিপিএমের দুর্গ থাকলেও এখন তা তলানিতে ঠেকেছে। তবু জানে আলম তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকে সামনে রেখেই প্রচার চালাচ্ছেন। বেশির ভাগ জায়গায় প্রচারে তিনি প্রায় একাই, নিঃসঙ্গ। তবে রবিবারের প্রচারে সঙ্গী ছিলেন বেশ কিছু বাম কর্মী।
জানে আলম বলছেন, “রবিবার উমরপুরে বিশাল পশু হাট বসে। বহু প্লাস্টিক কারখানা রয়েছে এলাকায়। হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সেই কারণেই শেষ রবিবারে এই এলাকায় প্রচারে আসা । বহু মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ হবে এই আশায়।”
জানে আলম বলছেন, “প্রচারে মূলত বিড়ি মজুরি, শ্রমিকদের নানা সমস্যাকেই তুলে ধরা হচ্ছে। জঙ্গিপুর হাসপাতালে যে ভাবে রোগীর চাপ বেড়েছে তাতে এটাকে মেডিক্যাল কলেজে রূপান্তরিত করার দাবিও তুলেছি আমরা। মুর্শিদাবাদ জেলার বিভাজনকে ত্বরাণ্বিত করার কথাও বলছি নির্বাচনী প্রচারে। ভীষণ সাড়া পাচ্ছি।”
দুই প্রতিদ্বন্দ্বী যখন শেষ রবিবারের প্রচারে ঘুরছেন তখন তৃণমূল প্রার্থী জাকির হোসেন নিজের বাড়িতেই বিশ্রাম নিয়েছেন রবিবার সারাদিন। কদিনের ঠাসা প্রচারে বেরিয়ে পায়ের ব্যথাটা বেড়েছে।
বলছেন, “সব দায়িত্ব এলাকার কর্মীরাই সামলাচ্ছেন। আমি পায়ের জন্য সর্বত্র যেতে পারছি না। বিকেলে সদরঘাটের সভাতেও যেতে পারিনি অসুস্থতার কারণেই।”
তবে শেষ রবিবাসরীয় প্রচারে জমজমাট শমসেরগঞ্জের ভোট যুদ্ধ। তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল এদিন ধুলিয়ানের বুকে বড়সড় সভা করেছেন দলের তিন সিনেমা জগতের তারকা বিধায়ক জুঁই মালিয়া, রাজ চক্রবর্তী ও সোহমকে নিয়ে। সিনেমার তারকাদের দেখতে এ দিন কমিশনের এক হাজার জনের জমায়েতের বিধিনিষেধ ছাড়িয়ে গেছিল অন্তত ৪ গুণ।
কংগ্রেস প্রার্থী জইদুর রহমান এ দিন চষে বেরিয়েছেন ঝাড়খণ্ড লাগোয়া নওপাড়া, অদ্বৈতনগর, সাখারঘাট গ্রামগুলিতে।
তিনি বলছেন, “প্রচারে সাড়া পাচ্ছি। মানুষ নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তৃণমূলের স্থানীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট দেবেন। তোলাবাজি, কাটমানির শিকার শমসেরগঞ্জের প্রায় সকলেই। সেটাই সকলকে আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। মানুষের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটাই কাটাতে অভয় দিচ্ছি। এখনও প্রচারে দুদিন আছে।”
বামফ্রন্টের মহম্মদ সেলিম শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পথসভা করেছেন। চলছে প্রার্থীকে নিয়ে ঘরে ঘরে প্রচার।
এ দিন অবশ্য শমসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর কোথাও প্রচারে বের হননি তৃণমূলের জঙ্গিপুরের জেলা সভাপতি সাংসদ খলিলুর রহমান। বাড়ি থেকে বলা হয়, তিনি অসুস্থ। তাই বিশ্রাম নিচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy