Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Murshidabad Mystery Death

সর্ষেক্ষেতে মেলে চোখ উপড়ানো দেহ, বহরমপুরে ছাত্রীমৃত্যুর ঘটনায় বিশেষ নির্দেশ দিল হাই কোর্ট

গত ২৭ জানুয়ারি বহরমপুরের হরিহরপাড়ায় এক ছাত্রীর দেহ পাওয়া যায় সর্ষের ক্ষেতে। ওই ঘটনায় দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিল হাই কোর্ট।

Death

প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:৫১
Share: Save:

সর্ষের ক্ষেতে মিলেছিল স্কুলছাত্রীর ক্ষতবিক্ষত দেহ। শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন, গলায় ফাঁসের দাগ আর উপড়ে নেওয়া হয়েছিল দুটি চোখ। নিহত কিশোরীর পরিবারের করা অভিযোগের ভিত্তিতে দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের মামলাও রুজু করে পুলিশ। পাশাপাশি দেহ পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। কিন্তু, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকের করা সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ কিংবা পুলিশি রিপোর্টের কোনও মিল নেই। চিকিৎসক এবং পুলিশের রিপোর্টের বিস্তর ফারাক থাকায় কলকাতা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল নাবালিকার পরিবার। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত দ্বিতীয় বার ওই কিশোরীর ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিলেন। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকদের দিয়ে ময়নাতদন্ত শেষ করে আগামী ৬ মার্চের মধ্যে ওই রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় পুলিশকে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা এবং পকসো আইনে মামলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার জন্য হাই কোর্টে আবেদন জানান মৃতের পরিবারের আইনজীবী।

মৃতার পরিবারের আইনজীবীদের সূত্রে খবর, ইনকোয়েস্ট রিপোর্ট এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন জানান তাঁদের আইনজীবীরা।

উল্লেখ্য, যে কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার ক্ষেত্রে পুলিশ দেহ উদ্ধারের সময় সরজমিনে তদন্ত করে একটি রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়। সেখানে উল্লেখ থাকে কী অবস্থায় দেহটি পাওয়া গিয়েছে। আর পারিপার্শ্বিক অবস্থা তখন কী ছিল, তার একটি বিস্তারিত উল্লেখ থাকে রিপোর্টে। এটাই ইনকোয়েস্ট রিপোর্ট। ওই রিপোর্টে দেহে বাহ্যিক আঘাতের চিহ্ন, কোনও ক্ষত কিংবা পোশাকের অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা থাকে। কিছু দিন আগে বহরমপুরের হরিহরপাড়ায় কিশোরীর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শরীরে একাধিক ক্ষত, গলায় ফাঁসের দাগ এবং ধর্ষণের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল ইনকোয়েস্ট রিপোর্টে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে থাকে মৃত্যুর কারণ। কী কারণে মৃত্যু হয়েছে, তা খুঁজতে করা হয় দেহের ময়নাতদন্ত। সেখানে উল্লেখ থাকে শরীরের আঘাতের কথা। ধর্ষণ হয়ে থাকলে তার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় সেই রিপোর্টে।

অপ্রত্যাশিত ভাবে দুই রিপোর্টের বিস্তর ফারাকের কারণে এসএসকেএমের চিকিৎসকদের দিয়ে কিশোরীর দেহের পুনর্বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি।

গত ২৬ জানুয়ারি রাত ৮টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল কিশোরী। তার পর আর ফেরেনি। আত্মীয় এবং বন্ধুদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পায়নি। যে ঘরে ওই কিশোরী থাকত, সেখানে একটি চিরকুট মেলে। তাতে লেখা ছিল, ‘চিন্তা কোরো না’। পরদিন অর্থাৎ, শনিবার দুপুরে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি সর্ষের ক্ষেতে নিখোঁজ ওই কিশোরীর দেহ মিলল। পরিবার অভিযোগ করে তাদের মেয়েকে বাড়ি থেকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে। প্রথমে তদন্তে নেমে এক জনকে আটক করে পুলিশ।

ঘটনাক্রমে মৃতার দেহ নিয়ে যাওয়া হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। তার পর ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় এক তরুণ বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই কিশোরীকে বাড়ি থেকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। পুলিশের কাছে ওই তরুণের নামও জানান মৃতার পরিবারের সদস্যেরা। এমনকি, বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় মেয়েটি ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায় বলে দাবি করে পরিবার।

অন্য বিষয়গুলি:

Murshidabad Death Case Calcutta High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy