Advertisement
E-Paper

বড়দিনে দেবতার ভোগে কেকও

ইংরেজি নতুন বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মঠমন্দিরে সেই স্পেশাল কেক সকালে বা সন্ধ্যার ভোগে দেওয়া হয়। গোলাপের পাঁপড়ি ছড়ানো, সুস্বাদু দেবভোগ্য সেই কেক তাবড় কোম্পানি থেকে কোনও অংশে কম যায় না।  

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:১২
Share
Save

বড়দিন এলে দেবতার ভোগেও থাকে কেক। মহাপ্রভু কিংবা রাধাকৃষ্ণের উদ্দেশে নিবেদিত সেই কেকের নির্মাণ পদ্ধতি বা রেসিপি জানলে তাক লেগে যাবে। ময়দা, চিনি, মাখন, শুকনো ফল দিয়ে নামীদামি কোম্পানি বা স্থানীয় বেকারির কেক তৈরির চেনা পদ্ধতির সঙ্গে এ সব দেবভোগ্য কেকের আকাশ পাতাল ফারাক!

খাঁটি নলেন গুড়ের সঙ্গে টাটকা দুধ মিশিয়ে অল্প আঁচে ফুটিয়ে তৈরি করা হয় ক্ষীর। তার সঙ্গে সুজি, কখনও ছানা, কাজু, কিসমিস, পেস্তা,বাদাম ইত্যাদি মিশিয়ে ‘ঘুঁটের’ চুল্লিতে সারারাত ‘বেক’ করে তৈরি করা হয় দেবভোগ্য কেক। ঘুঁটের চুল্লিও বিশেষ কৌশলে গড়া হয়। বড়দিন থেকে শুরু করে ইংরেজি নতুন বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মঠমন্দিরে সেই স্পেশাল কেক সকালে বা সন্ধ্যার ভোগে দেওয়া হয়। গোলাপের পাঁপড়ি ছড়ানো, সুস্বাদু দেবভোগ্য সেই কেক তাবড় কোম্পানি থেকে কোনও অংশে কম যায় না।

মঠ-মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়দিনের মরশুমে নদিয়ার মঠ-মন্দিরে দেবতাদের ভোগে কেকের উপস্থিতি অবশ্য খুব বেশি দিনের নয়। সাতের দশকে মায়াপুরে ‘সাহেব মঠ’ তথা ইস্কন প্রতিষ্ঠার পর থেকে সাগর পারের হাওয়া বইতে শুরু করে গঙ্গার দু’পারে। পরবর্তী অর্ধশতক ধরে মায়াপুরে একের পর এক মঠ গড়ে উঠতে শুরু করে। পাশাপাশি গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে নবদ্বীপে এমন কিছু নতুন মঠমন্দির গড়ে ওঠে যাদের ভক্তবৃন্দের বেশির ভাগই বিদেশি। তাঁরাই বড়দিন বা ইংরেজি নতুন বছরে তাঁদের মন্দিরে বিগ্রহের ভোগে কেক নিবেদন করতেন। দেখাদেখি পরবর্তী কালে নবদ্বীপের অন্যান্য মঠমন্দিরের ভক্তেরাও তা শুরু করেন। এখন এটি প্রায় প্রথায় পরিণত হয়েছে।

প্রাচীন মায়াপুরের চৈতন্য জন্মস্থান আশ্রমের প্রধান ও গৌড়ীয় বৈষ্ণবসমাজের সম্পাদক অদ্বৈত দাস মহারাজের মতে, “নবদ্বীপে আত্মবৎ সেবা প্রচলিত। সেই নিয়মে ভক্ত বড়দিনের কেক ইষ্টকে নিবেদন করে খাবেন। আটের দশক থেকে কেক বেশি করে জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। নবদ্বীপের মঠমন্দিরে ভোগেও কেক দেখা যাচ্ছে।” নবদ্বীপের চৈতন্য জন্মস্থান আশ্রম, মহাপ্রভু মন্দির, বলদেব মন্দির, মদনমোহন মন্দিরের মতো প্রাচীন মন্দিরের পাকশালায় এই সময়ে বেশ কয়েক রকমের কেক তৈরি হয়। মহাপ্রভু মন্দিরের পরিচালন সমিতির সম্পাদক জয়ন্ত গোস্বামী বলেন “আমাদের মন্দিরে গোস্বামী পরিবারের মহিলারা নিজেরা কেক তৈরি করে মহাপ্রভুকে নিবেদন করেন।” বলদেব জিউ মন্দিরের কিশোর গোস্বামী জানান “শুধু বড়দিন নয় ঝুলন পূর্ণিমায় বলদেবের জন্মতিথিতেও কেক দেওয়া হয়। বাঘনাপাড়া থেকে এক ধরনের সুস্বাদু ছানার কেক ভক্তেরা আনেন। বিগ্রহের কেক সাধারণত ছানার তৈরি হয়।” মায়াপুরের ইস্কন মন্দির বা নবদ্বীপ কোলের ডাঙায় সারস্বত গৌড়ীয় মঠ বা কেশবজী গৌড়ীয় মঠের মতো বিদেশি ভক্ত প্রধান মন্দির-সহ নবদ্বীপের সব মঠমন্দিরে বিপুল চাহিদা বুঝে শহরের ছোটবড় সব মিষ্টির দোকানেই এসময় তৈরি হয় ছানা, ক্ষীরের নানা কেক। এই সময় এমন কিছু কেক তৈরি হয় যা শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট মন্দিরেই পাওয়া যায়।

এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ মায়াপুরের ইস্কন মন্দির। ইস্কনের জন সংযোগ আধিকারিক রমেশ দাস বলেন, “আমাদের এখানে বড়দিন বা নিউ ইয়ার বলে নয় সারা বছরই ভোগে কেক দেওয়া হয়। ইস্কনের নিজস্ব বেকারিতে ভক্তরাই সে সব কেক তৈরি করেন। আমাদের বিদেশি ভক্তদের অনেকেই কেক তৈরিতে খুব দক্ষ। নানা রকমের ফ্রুট কেক, যেমন ব্যানানা কেক, মিক্সড ফ্রুট কেক, স্ট্রবেরি কেকের পাশাপাশি নানা রকমের চকোলেট কেক বড়দিনের সময় বেশি করে তৈরি করা হয়। দর্শনার্থীদের কাছে কেক প্রসাদ হিসেবে খুব জনপ্রিয়। কেন না মন্দিরের বাইরে কোথাও মিলবে না এই কেক।” তিরিশ টাকা থেকে শুরু হয় ইস্কনের কেক। নিজস্ব বেকারিতে তৈরি ৩৫০- ৫০০ টাকা পর্যন্ত পাউন্ডের কেকও মিলবে। ইস্কনের যে কোনও উৎসব যেমন জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমী বা দোলে তৈরি করা হয় নজরকাড়া কেক। বিশালাকার সেসব কেকের দাম দশ-বিশ হাজার

Cajes offerings Christmas

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}