দুপুরে প্রচার সেরে বাড়ি ফিরে মোবাইলে দলের এক কর্মীকে জরুরি নির্দেশ দিচ্ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী তথা শান্তিপুর পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান অজয় দে। কথার মাঝপথেই লাইন গেল কেটে! কিন্তু, কথাটা শেষ করা জরুরি। কয়েকবারের চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত লাইনটা মিললেও কথা কাটা কাটা, অস্পষ্ট।
আর মাত্র দু’দিন—শনিবারই পুরভোট। তার আগে বিএসএনএলের কর্মীদের ধর্মঘটের জেরে যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন প্রার্থীরা। বেহাল অবস্থা ল্যান্ড ফোনেরও। জরুরি পরিষেবার মতো আদালত, স্বাস্থ্য এবং দমকলের দফতরও চরম বিপাকে পড়েছেন। দিশাহারা অবস্থা নদিয়া-মুর্শিদাবাদের কয়েক হাজার উপভোক্তার। বিপাকে পড়ে অন্য সংস্থার নতুন সংযোগ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে অনেকেরই। এ দিকে, এ দিনও সংস্থার কোনও কর্তাই বেহাল পরিস্থিতি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
শান্তিপুর পুরসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএম প্রার্থী সৌমেন মাহাতো বিএসএনএল-এর নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন না। তাঁর কথায়, ‘‘তাতেও আর রক্ষে কই? দলের অনেকেরই বিএসএনএল-এর নেটওয়ার্ক রয়েছে। প্রতি মুহূর্তে সমস্যা হচ্ছে।’’ কেউবা উগরে দিয়েছেন ক্ষোভ। মুর্শিদাবাদ পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী কংগ্রেসের ললিতা দাস বলেন, “সকাল থেকেই বিএসএনএলের মোবাইলে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। ভোট প্রচারে বের হওয়ার আগে পাড়ার মহিলাদের ফোন করে ডাকব, তা করতে পারেনি। পরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মহিলাদের ডেকে জড়ো করে প্রচারে বের হতে হয়েছে। এতে বাড়তি সময় ব্যয় হয়েছে।”
মুর্শিদাবাদ পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী অনিন্দিতা হালদার দলীয় কর্মীদের ফোনে না পেয়ে সরাসরি স্কুটি চালিয়ে বা কারও মোটর বাইকের পিছনে বসে প্রচার চালিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের মুখে হাজারো কাজ রয়েছে। এখন ফোনের যুগ। সব জায়গায় গিয়ে তো কাজ করা সম্ভব নয়। ভীষণ অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।’’ ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সুস্মিতা মণ্ডলও একই রকম বিপাকে। তাঁর কথায়, ‘‘পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হলেই মঙ্গল।’’
জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী লিপিকা দাস জানালেন, দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। তেমনি কর্মীদেরও ফোনে পাচ্ছি না। বাড়িতে বসে ভোটারদের সঙ্গে ভোট বিষয়ে কথা বলব, তারও উপায় নেই। পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী কংগ্রেসের প্রসেনজিত্ বাহালিয়া বলেন, “এলাকার বাইরে কিছু ভোটার রয়েছে। ভোটের দিন ঠিক সময়ে আসার জন্য অনুরোধ করব—কিন্তু যোগাযোগ করতে পারছি কই।” পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়েছে বলছেন জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী জলি দাস হালদার।
কিন্তু কেন এমনটা হচ্ছে? কৃষ্ণনগর টেলিফোন জেলার ম্যানেজার পি অ্যান্টনি রাজ-এর মোবাইল সংযোগটিও বিএসএনএল-এর। বলাবাহুল্য, নেটওয়ার্ক বিভ্রাটে তার সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy