আগামী ১০ জুলাই রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিও দিয়ে দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। উপ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে রাজনৈতিক দলগুলি প্রস্তুতিও শুরু করেছে। তৃণমূল ও সিপিএমের তরফে প্রার্থী ঘোষণা হলেও রবিবার রাত পর্যন্ত বিজেপি তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। যদিও এবার লোকসভা নির্বাচনে এই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রায় ৩৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে তৃণমূলকে পিছনে ফেলে এগিয়ে বিজেপি। তবে উপনির্বাচনে সেই ভোট ধরে রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে যেমন মাথা ঘামাচ্ছে বিজেপি। তেমনই ঘাটতি মিটিয়ে উপনির্বাচনের বৈতরণী পার করতে মরিয়া তৃণমূলও।
রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের অধীনে রয়েছে রানাঘাট-২ ব্লকের আটটি ও রানাঘাট-১ ব্লকের ছটি পঞ্চায়েত। এছাড়াও রয়েছে কুপার্স নোটিফায়েড এলাকা। এই কেন্দ্র আবার উদ্বাস্তু ও মতুয়া বলয় বলেও পরিচিত। রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন, উদ্বাস্তু ও মতুয়ারা সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির দিকে ঝুঁকেছিল। আবার ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটেই জয়ী হয়েছিলেন লোকসভায় এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী। বিধানসভা তাঁর জয়ের ব্যবধান ছিল ১৬,৫১৫। উপনির্বাচনে উদ্বাস্তু ও মতুয়া ভোট ফুল পরিবর্তন করবে কিনা সেই অঙ্কই কষছে বিজেপি এবং তৃণমূল।
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, উপনির্বাচনের ফল রাজ্যের শাসক দলের পক্ষে গিয়েছে। আবার বিজেপি এই বিধানসভা উপনির্বাচনে নিজেদের জয় ধরে রেখে প্রমাণ দিতে চায়, মতুয়া সমাজ তাদের দিকেই রয়েছে। রানাঘাট লোকসভা নির্বাচনে হারের পর্যালোচনায় তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, লোকসভার প্রার্থী মুকুটমণিকে দলের একাংশ মানতে পারেনি। দলের মধ্যে উদাসীনতা, বৈষম্যও লোকসভায় তৃণমূলের হারের অন্যতম কারণ।
তবে এর পরেও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুটমণিকেই রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে প্রার্থী করেছেন। কিন্তু লোকসভার মতো দলের মধ্যে মতানৈক্য, ঠান্ডা লড়াই মুকুটের জয়ের ক্ষেত্রে এবারও বাধা হয়ে দাঁড়াবে না তো?
মুকুটমণির বক্তব্য, "দল যে দায়িত্ব দিয়েছে তা পালনের চেষ্টা করছি। সকলকে একসঙ্গে নিয়ে উপ নির্বাচনে লড়াইয়ে নেমেছি। আশা করছি, রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভার মানুষ এবার আমাদের প্রত্যাখ্যান করবে না।"
বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের কে প্রার্থী হবেন, তা বড় বিষয় নয়। মতুয়া ও উদ্বাস্তু মানুষ লোকসভায় আমাদের উপরে আস্থা রেখেছেন। এ বারও রাখবেন। শান্তিপূর্ণ ও অবাধ ভোট হলে আমরাই জিতব।"
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)