—নিজস্ব চিত্র।
প্রধান নির্বাচিত হওয়ার পর দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য। সেই মিছিল থেকেই আচমকাই উধাও তিনি! এই ঘটনার পরেই শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রধানকে ‘অপহরণের’ অভিযোগ তুলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিজেপির কর্মীরা। ঠিক সেই সময়েই প্রকাশ্যে এল একটি ভিডিয়ো (সেটির সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি)। তাতে দেখা গেল, ‘অপহৃত’ সেই প্রধান হাজির হয়েছেন তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে। পরনের সাদা পাঞ্জাবিতে গেরুয়া রং তখনও মুছে যায়নি। মুখে লেগে থাকা গেরুয়া আবির কোনও রকম জলে ধুয়ে সবুজে আবিরে রাঙা হয়ে যোগ দিলেন শাসক শিবিরে। প্রধান হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে ‘দলবদলে’ তত ক্ষণে শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলায়। পরে সন্ধ্যায় সেই পঞ্চায়েত প্রধান উদ্ধার হলেন অসুস্থ অবস্থায়! বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েতর বোর্ড গঠনের দিনে এমনই নাটকীয়তার সাক্ষী থাকল নদিয়ার কৃষ্ণনগর ২ ব্লকের ধুবুলিয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা।
ধুবুলিয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ২১। সেখানে ১১টি আসনে জেতে বিজেপি। তৃণমূল যেতে আটটি আসনে। দু’টি আসনের জয় পায় সিপিএম। বৃহস্পতিবার বোর্ড গঠন প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই উত্তেজনা ছিল পঞ্চায়েত কার্যালয় চত্বর জুড়ে। বোর্ড গঠনে সিপিএমের দুই সদস্য অংশগ্রহণ না করায় উপস্থিত সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯। অর্থাৎ, প্রধান পদে নির্বাচিত হতে দরকার ১০টি ভোট। বিজেপির দাবি, ভোটাভুটিতে প্রধান নির্বাচিত হন বিজেপির গৌতম সরকার। এর পর পঞ্চায়েত অফিস থেকে বেরিয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে মিছিলে হাঁটছিলেন তিনি। সেই তাঁকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ। অবিলম্বে গৌতমকে মুক্তির দাবিতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতা-কর্মীরা। বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস। ঠিক তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কৃষ্ণনগরের তৃণমূল কার্যালয়ে গৌতমকে শাসকদলে যোগদান করানো হয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। প্রকাশ্যে আসে একটি ভিডিয়োও। তাতে দেখা যায়, গৌতম তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এই ঘটনার কিছু পরেই সন্ধ্যায় অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার হন সদ্য নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধান। বর্তমানে তিনি শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পরে গৌতম দাবি করেন, মিছিল থেকে তাঁকে টেনেহেঁচড়ে গাড়িতে তোলা হয়েছিল। কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তিনি তা জানেন না। গৌতমের কথায়, ‘‘আমি বিজেপি থেকে প্রধান নির্বাচিত হওয়ার পরেই কয়েক জন আমাকে জোর করে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তোলে। তার পরে আমি কিছু জানি না। আমি বাড়ি যেতে চাই।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি অর্জুন দাবি করেন, ‘‘গৌতম সরকারকে অপহরণ করে ভয় দেখিয়ে দলবদল করতে বাধ্য করা হয়েছে। অবিলম্বে তাঁকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’’ পাল্টা রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘‘কেউ স্বেচ্ছায় তৃণমূলে যোগ দিতে চাইলে অবশ্যই তাঁকে স্বাগত জানাবে দল। এ ক্ষেত্রে বিজেপির বাড়তি নাটকের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy