শ্মশানঘাটের কাছে এই মাটি কাটা ঘিরেই বেঁধেছে বিতর্ক। বুধবার নবদ্বীপে। নিজস্ব চিত্র
নবদ্বীপ শ্মশানঘাট সংলগ্ন গঙ্গার পাড় ঘেঁষে মাটি কাটছে যন্ত্র। ট্রাক্টর বোঝাই হয়ে সেই মাটি শ্মশানের দক্ষিণ দিকের রাস্তা বরাবর চলে যাচ্ছে। সেই ট্রাক্টর অনুসরণ করে গিয়ে দেখা গেল তাদের গন্তব্য খানিক দূরে মণিপুর ঘাটরোডে অবস্থিত এক বৈষ্ণব সমাধিস্থল। নবদ্বীপের প্রাচীন ওই বৈষ্ণব সমাধিস্থলে চলছে নির্মাণ কার্য। মাটি সেখানেই যাচ্ছে।
শ্মশানঘাটে এই মাটি কাটা ঘিরেই বেঁধেছে বিতর্ক। এ নিয়ে বিজেপি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। বিষয়টি অবিলম্বে বন্ধ করে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিজেপির নেতারা। বিজেপির নবদ্বীপ দক্ষিণ মণ্ডল কমিটির পক্ষে শশধর নন্দীর করা ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে নবদ্বীপ শ্মশানের কাঠের চুল্লির সংলগ্ন গঙ্গার তীরের মাটি কিছু অসাধু ব্যক্তি অবৈধ ভাবে কেটে বিক্রি করছে। এর ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে এবং ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন শশধর। শশধর বলেন “নবদ্বীপ পুরসভার মদতেই এই কাজ হচ্ছে। প্রশাসন দেখেও দেখছে না। আমরা দোষীদের শাস্তি চাই।” তবে মাটি কাটা সংক্রান্ত লিখিত পত্রে তিনি পুরসভার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেননি।
অভিযোগ নস্যাৎ করে নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেছেন, “অবৈধ ভাবে মাটি কাটার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। নবদ্বীপ শ্মশান ঘাটের ওই অংশটি বাঁধানো হবে। চওড়া করা হবে। তারই কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে অবৈধ ভাবে মাটি কাটার প্রশ্ন আসছে কেন?’’
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যে বৈষ্ণব সমাধিস্থলে মাটি ফেলা হচ্ছে সেটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত হয়ে পড়েছিল। ওই সমাধিস্থলটি সম্প্রতি শ্রীশ্রী তিনকড়ি গোস্বামী মহারাজ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট এবং পুরসভার যৌথ চেষ্টায় সেজে উঠছে। ট্রাস্টের তরফে সদাহরি দাস বলেন, “সমাধিক্ষেত্রটি রাস্তা থেকে নিচু হওয়ায় সেখানে মাটি ফেলে উঁচু করা দরকার ছিল। পাশেই গঙ্গার ঘাট সংস্কারের কাজ হচ্ছে দেখে আমরা পুরসভাকে আবেদন জানিয়ে ছিলাম যদি কিছু মাটি পাওয়া যায়। ইতিমধ্যে পুরো ক্ষেত্রটি পুরসভার সহায়তায় পাঁচিল দিয়ে ঘেরা হয়েছে। এ বারও পুরসভা মাটি দিয়ে সাহায্য করেছে।”
পুরপ্রধানের দাবি, “এখন মাটি কাটার মিথ্যা অভিযোগ তুলে বৈষ্ণব সমাধিস্থল সংস্কারে কাজ বন্ধ করতে চাইছে বিজেপি।” কিন্তু গঙ্গার পাড় ঘেঁষে পুরসভা মাটি কাটছে কী ভাবে? কার অনুমতি নিয়ে? জবাবে পুরপ্রধান বলেন, “কোথাও মাটি কাটা হচ্ছে না। গঙ্গার ঘাট সংস্কারের কাজ চলছে। এর জন্য যথাযথ অনুমতি নেওয়া হয়েছে।”
বিষয়টি নিয়ে নদিয়ার ভূমি সংস্কার দফতরের অতিরিক্ত জেলাশাসক নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, “উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্রে অনেকে আবেদন জানিয়ে কাজ শুরু করে দেন। আমরা অনুমতিও দিয়ে দিই। তবে এ ক্ষেত্রে পুরসভা অনুমতি নিয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। আর মাটি কাটার ব্যাপারে এখনও কেউ কোনও অভিযোগ করেননি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy