ডেঙ্গি নিয়ে হইচই হচ্ছে রাজ্য জুড়ে। কিন্তু নদিয়া-মুর্শিদাবাদে ম্যালেরিয়াও কিছু কম যাচ্ছে না। সরকারি হিসেবে, মুর্শিদাবাদে এখনও ডেঙ্গিতে কারও মৃত্যু না হলেও ম্যালেরিয়ায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক হাজার। নদিয়াতেও ম্যালেরিয়ায় এক জনের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্ত ৪৩৭ জন। ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার জো়ড়া আক্রমণে অতিষ্ঠ পিঠোপিঠি দুই জেলার মানুষ।
মুর্শিদাবাদের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস বলছেন, “ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দফতর মানুষকে সচেতন করছে। এ ছাড়াও জেলা প্রশাসনের সাথে যৌথ ভাবে মশার আঁতুড়ঘর ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, মশা-সহ পতঙ্গবাহিত রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে বাসিন্দাদের আরও সচেতন করা হবে। তার জন্য স্কুল-কলেজের পাশাপাশি গ্রাম-শহরে গিয়ে সচেতন করা হচ্ছে, মশার হাসা ভাঙা হচ্ছে। ইমাম-মোয়াজ্জেনদের সাহায্যেও ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে প্রচার করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, সোমবার বহরমপুরের পঞ্চাননতলায় জুম্মা মসজিদে জেলার ২৬টি ব্লকের ইমাম-মোয়াজ্জেনদের প্রতিনিধিদের নিয়ে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। এ বারে ইমাম মোয়াজ্জেনরা এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করবেন। নমাজের পরেও মসজিদে এ বিষয়ে সচেতন করা হবে। নদিয়ার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়ও বলেন, “ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বাসিন্দাদের নিয়মিত সচেতন করছি আমরা।”
মুর্শিদাবাদ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, গত জানুয়ারি মাস থেকে এখনও পর্যন্ত ১০৬০ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। গত এপ্রিলে বড়ঞায় এক জন, মে ও জুলাই মাসে জঙ্গিপুরে একটি করে মৃত্যু হয়েছে ম্যালেরিয়ায়। অন্য দিকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৬৩ জন। জাপানি এনসেফেলাইটিসেও আক্রান্ত চার জন। তবে ডেঙ্গিতে এখনও জেলায় কারও মৃত্যু হয়নি বলে প্রশাসনের দাবি। মুর্শিদাবাদে ডেঙ্গি মূলত জঙ্গিপুর মহকুমা এলাকায় বেশি হয়। জঙ্গিপুর, সাগরদিঘি, সুতি, সমশেরগঞ্জ, ফরাক্কা এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি। অন্য দিকে ভগবানগোলা ১ ও ২ ব্লক, নবগ্রাম, জিয়াগঞ্জ ও হরিহরপাড়া ব্লকে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেশি। ভগবানগোলা ২ ব্লকে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ওই ব্লকে ১৭৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ভগবানগোলা ১ ব্লকে ৯০ জন, সাগরদিঘিতে ৭৭ জন, বেলডাঙা ১ ব্লকে ৬০ জন, নবগ্রামে ৫৭ জন, মুর্শিদাবাদ জিয়াগঞ্জ ব্লকে ৪৪ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।
মুর্শিদাবাদ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের দাবি, এই জেলার বহু লোক ভিন্ রাজ্যে কাজে যান। তাঁরা অনেক সময়ে জ্বর নিয়ে ফিরে আসেন। চলতি বছরে যে তিন জন মারা গিয়েছেন, তাঁরা ওডিশায় কাজে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে জ্বর নিয়ে ফিরেছিলেন। পরে তাঁদের মৃত্যু হয়। ম্যালেরিয়া রুখতে বিভিন্ন এলাকায় মশা মারার তেল স্প্রে করা হচ্ছে। বাসিন্দাদের সচেতন করা হচ্ছে।
নদিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় চলতি বছরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন ২৩৫০ জন। তবে সেখানেও ডেঙ্গিতে কারও মৃত্যু হয়নি বলে প্রশাসনের কর্তাদের দাবি। নদিয়ায় চলতি বছরে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩৭ জন। কল্যাণী জওহরলাল নেহেরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় এক জনের। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, মৃতের ম্যালেরিয়ার পাশাপাশি ক্যানসার এবং ডায়াবেটিস ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy