Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

আউটডোর সচল ফুলিয়া থেকে করিমপুর

মৌখিক ভাবে আউটডোর বন্ধ থাকার কথা বলা হলেও সোমবার হাসপাতালে আসা কোনও রাগীকেই বিনা চিকিৎসায় ফিরতে হয়নি।

শুশ্রূষা: করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা পেতে ভিড় রোগীদের। সোমবার। ছবি: কল্লোল প্রামাণিক

শুশ্রূষা: করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা পেতে ভিড় রোগীদের। সোমবার। ছবি: কল্লোল প্রামাণিক

নিজস্ব প্রতিবেদন
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৯ ০০:০৪
Share: Save:

আন্দোলন সত্ত্বেও আউটডোর পরিষেবা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে সোমবার কল্যাণী জেএনএম -এর পথেই হেঁটেছে ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কালীগঞ্জ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র।

শান্তিপুরের গ্রামীণ এলাকার রোগীদের কথা ভেবেই এ দিন ফুলিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগ সচল রেখেছিলেন চিকিৎসকেরা। দিন কয়েক আগে ডাক্তারদের কর্মবিরতির সময়েও এখানে মাত্র ঘন্টা দুয়েকের জন্য প্রতীকী কর্মবিরতি ছিল। পরে তা সচল হয়। শান্তিপুর ব্লকের ফুলিয়া টাউনশিপ, নবলা পঞ্চায়েত ছাড়াও আরবান্দি ১, আরবান্দি ২ এবং বেলগড়িয়া ১ ও বেলগড়িয়া ২ পঞ্চায়েতের একটি বড় অংশের মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরেই নির্ভর করেন। এ ছাড়াও তাহেরপুর থানার বারাসাত পঞ্চায়েতেরও একটি অংশের মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন। প্রতিদিন গড়ে এখানে ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী আউটডোরে আসেন। দু’ জন করে চিকিৎসক আউটডোরে বসেন। এ দিনও দু’জনই আফটডোরে রোগী দেখেছেন। শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের দূরত্ব এখান থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার। আবার রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় দশ কিলোমিটারের মতো। ফলে সোমবার আউটডোর খোলা থাকায় দূরে রেফার হওয়ার হাত থেকে বহু রোগী বেঁচে গিয়েছেন।

একই ভাবে এ দিন পরিষেবা চালু ছিল কালীগঞ্জ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। মৌখিক ভাবে আউটডোর বন্ধ থাকার কথা বলা হলেও সোমবার হাসপাতালে আসা কোনও রাগীকেই বিনা চিকিৎসায় ফিরতে হয়নি। একটি ঘরে দুই জন ডাক্তার বসেছেন। সেখানেই রোগীরা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে একে একে দেখিয়েছেন ও প্রেসক্রিপশন নিয়েছেন। তবে ওষুধ দেওয়া হয়নি। একমাত্র জরুরি বিভাগ থেকে মাত্র এক দিন বা দুই দিনের ওষুধ মিলেছে গুরুতর অসুস্থদের জন্য। দেওয়া হচ্ছিল। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের খোলা চত্বরে দাঁড়িয়েও কিছু চিকিৎসক রোগী দেখেছেন। এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘রোগীরা যদি চলে আসেন তা হলে তো ফেরানো যায় না। তাই আন্দোলন সমর্থন করেও রোগী দেখেছি।’’ হাসপাতাল সূত্রের খবর, ‘‘ এ দিন প্রায় ৫০০ রোগীর চিকিৎসা হয়েছে।’’ এক রোগী উদয় হালদারের কথায়, ‘‘ঠাণ্ডা লেগেছিল বলে হাসপাতালে এসেছিলাম। আজ আউটডোরে কোনও টিকিট দেওয়া হয়নি। তবে ডাক্তারবাবুরা দেখে ওষুধ দিয়েছেন।

পলাশিপাড়া প্রীতিময়ী গ্রামীণ হাসপাতাল ও করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকরা এ দিন বহির্বিভাগে আসা রোগীদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা করেছেন। নতিডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালেও ছিল একই ছবি। করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে পিয়ালি সরকার বলেন, “গত শুক্রবার সকালে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে এখানে এসেছিলাম। ওই দিন দুপুরেই চিকিৎসকরা সিজার করেন। কিছু দিনের মধ্যেই ছুটি হবে। চিকিৎসায় কোনও সমস্যা হয়নি।” করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার মনীষা মণ্ডল বলেন, “বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপর আঘাত নেমে আসছে। প্রতিবাদ-আন্দোলন আমাদের সমর্থন রয়েছে, তবে হাসপাতালের পরিষেবা বন্ধ হতে দিইনি।’’

শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের আউটডোরে এ দিন অবশ্য ডাক্তারদের দেখা মেলেনি। হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে রোগীদের। জেলা সদর হাসপাতালেও ছিল একই চিত্র। ধুবুলিয়া থেকে এসেছিলেন ইনসান আলি। বলেন, “পেটের ব্যথায় ভুগছি। তাই আজ জেলা হাসপাতালে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখছি বন্ধ!’’ চাপড়া থেকে এসেছিলেন গৃহবধূ ফতেমা বিবি। তাঁর কথায়, “সদর হাসপাতালে দেখাচ্ছি কয়েক মাস ধরে। আজ এসে দেখি, আউটডোর বন্ধ। দিনটাই নষ্ট হল।” ইমার্জেন্সি অবশ্য চালু ছিল। রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের আউটডোরও এ দিন বন্ধ ছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Bengal Doctors Strike Nadia Krishnagar Shantipur Karimpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy