ম্যানেজার, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (দৌলতাবাদ শাখা)
নভেম্বরের ৮ তারিখের পরে জীবনের ছাঁচটাই বদলে গিয়েছে যেন! তবে, মানিয়ে নিতে সময় লাগেনি, বরং বলা ভাল, না মানিয়ে উপায় আছে?
আমার রুটিনটা একটু বলি— বহরমপুর থেকে সকাল সাড়ে আটটায় বেরিয়ে পড়ি। বাস ধরে দৌলতাবাদে পৌঁছতে সাড়ে ন’টা। আরা দিনভর গালমন্দ, মানুষের রোষ-তাপ-বকুনি-ধমক খেয়ে বিধ্বস্ত হয়ে ঘরে ফেরা সেই রাত সাড়ে ’টায়। রোজ।
অনেক সময়ে রাতের শেষ বাস ধরতে না পারলে, মোটরবাইকে অথবা রাস্তায় হাত দেখিয়ে গাড়ি থামিয়ে একটু লিফট চাই। নিশ্চিন্তে যে ঘুমোবো, তারও উপায় নেই। সারাক্ষণ মনে হচ্ছে, এই বুঝি গ্রাহকেরা খেপে গেলেন। ওঁদেরও দোষ দেওয়া যায় না।
আমার অনেক সহকর্মী বলছেন, রাতে ঘুমের মধ্যে তাড়া তাড়া নোট দেখছেন। আমার কানে মানুষের আর্তি ভাসছে। কেউ তাঁর মেয়ের বিয়ের কার্ড হাতে, কেউ আবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের জন্য, বেসরকারি হাসপাতালে কারও অস্ত্রোপচার হয়েছে—সকলেই চান বাড়তি কিছু টাকা। সারা দিন ওঁদের মধ্যে থাকি। রাতেও ওঁদের কথাই মনে পড়ে। কিন্তু আমাদের যে হাত পা বাঁধা।
দৌলতবাদ এলাকায় প্রায় আড়াইশো স্বয়ম্বর গোষ্ঠী রয়েছে। ঋণ দানের মধ্যে দিয়ে তাঁদের গোষ্ঠীগুলিকে যে উজ্জীবিত যে করব, তাও পারছি না। অন্য সময়ে যেমন অনাদায়ী ঋণ আদায়ের জন্য ব্যাঙ্ক থেকে প্রতি দিন ২-৩ ঘন্টার জন্য বেরিয়ে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে বেড়াতাম। কিন্তু নোট বাতিলের পরে ওই সব কাজ শিকেয় উঠেছে।
আর বাড়ি? শেষ কবে থলে হাতে বাজার করে ফিরেছি মনে নেই। আটপৌরে জীবনটাই বদলে গিয়েছে যে! আর হ্যাঁ, এরই মধ্যে মা চলে গেলেন! খুব আফশোস হয় জানেন, শেষ দু’দিন মায়ের সঙ্গে কথাই হল না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy