শুধুই শূন্যতা, বাহালনগরে
শীতের মুখে, কিছু বাড়তি আয়ের মুখ দেখতে ভূস্বর্গে পাড়ি দেওয়া বাহালনগরের কয়েক ঘর
মানুষের কাছে এখন প্রায় দস্তুর হয়ে উঠেছে।
কেরল থেকে রাজস্থান— মুর্শিদাবাদের এই অভাবী মানুষজনের রুজির টানে ঘর ছেড়ে পরিযায়ী হয়ে ওঠার এই পরিক্রমায় কাশ্মীর এল কী করে? গ্রামেরই এক পুরনো বাসিন্দা জানান, বছর ত্রিশ আগে কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই কাশ্মীরে গিয়েছিলেন গ্রামের এক দল যুবক। আপেল বাগানে কাজ। গাছ থেকে আপেল পেরে তা পিচবোর্ডের কার্টুনে ভরে চালান দেওয়াই ছিল তাঁদের কাজ। সে সময়ে তাঁদের আয় দেখে পরের মরসুমেই রুজির টানে ভেসে পড়েছিলেন আরও অনেকে। তার পর যেন ধারাবাহির হয়ে গিয়েছে নিয়মটা।
মিলন মোল্লা, গত পনেরো বছর ধরে কাশ্মীরে য়াচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘কাজটা আপাত ভাবে খুব কঠিন নয়। তবে খুব যত্ন নিয়ে করতে হয়।’’ তিনি জানান, আপেল গাছের
উচ্চতা তেমন বেশি নয়। তাই কম উচ্চতার মানুষজন টুল নিয়েও গাছের মগ ডাল থেকে আপেল পাড়তে পারেন। প্রয়োজনে তাঁদের মই-ও দেওয়া হয়।
আপেল পাড়ার পরে একটি টুকরিতে সেটি রাখতে হয়। তার পর টুকরি ভরে গেলে। তাকে পালিশ করে সযত্নে তুলে রাখতে হয় ওই কার্টুনে। তিনি বলেন, ‘‘তবে কাজটা করতে হয় একেবারে অপত্যস্নেহে। খুব নরম জিনিস তো!’’
মিলন বলেন, ‘‘আমাদের আপেল খেতেও কোনও বাধা নেই। কিন্তু কত আপেল খাব। তিন মাসের কাজ। তাই দিন পনেরোর মধ্যেই এক ঘেয়ে হয়ে যায়। তখন অমন দামী আপেলের উপরেও অনীহা ধরে যায়।’’ আপেলের পাশাপাশি অনেকেই কাজ করেন আখরোটের বাগানেও। আয়ের পরিমাণ প্রায় একই। কাজও একই ধরনের।
সেজরুল শেখ জানান, তিনিও গত বছর কাশ্মীরে গিয়েছিলেন। ছিলেন পহেলগাঁও-এর কটরসুর জমজমাট এলাকার একটি দোতলা বাড়ির দোতলায়। চার মাথার মোড়ের কাছে ওই বাড়ির নীচের তলায় দোকানপাট রয়েছে। পাশেই রয়েছে ব্যাঙ্ক-ডাকঘর। একটু দূরেই একটি স্কুলও রয়েছে। জায়গাটি পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের সীমান্ত লাগোয়া জায়গায়। ওই বাড়ির সামনেই রয়েছে ফাঁকা মাঠের মতো জায়গা। ভাই সাদের সরকার এখনও কাশ্মীরে রয়েছেন। ফলে চিন্তায় দাদা নাদের সরকার। বলছেন, ‘‘না করি কী করে, অভাবের সংসারে আয় তো একটা বড় কথা, তাই না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy