Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
গ্রেফতার দু’পক্ষের ১০
BJP

বোমা ফাটায় ভাঙচুর, ফের ধৃত আশরফ

আবার আশরফের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আশরফ ঘরামি

আশরফ ঘরামি

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাপড়া শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২১ ০৮:২১
Share: Save:

জেল থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার দশ দিনের মাথাতেই ফের গ্রেফতার হলেন তৃণমূল নেতা আশরফ ঘরামি। তাঁর চার ঘনিষ্ঠকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর বাড়িতে বোমা বাঁধা হচ্ছিল। সেই সময় বিকট শব্দে একটি বোমা ফেটে যায়। স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জেনেছে, বিস্ফোরণে এক জন গুরুতর জখম হয়। কিন্তু পুলিশ পৌঁছনোর আগেই তাকে মোটরবাইকে চাপিয়ে সরিয়ে ফেলা হয়। বুধবার রাত পর্যন্ত তার কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।

আবার আশরফের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই পাঁচজনই দলের ভিতরে আশরফের প্রবল বিরোধী ফয়েজ শেখের অনুগামী বলে পরিচিত। ওই হামলার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ফয়েজ অবশ্য পলাতক। এ দিকে, পুলিশের বিরুদ্ধে ফয়েজ শেখ-সহ একধিক গ্রামবাসীর বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।

গত বছর ব্রহ্মনগরে তৃণমূলেরই এক কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল আশরফের বিরুদ্ধে। তিনি তখন ছিলেন দলের হৃদয়পুর অঞ্চল সভাপতি। তাঁর স্ত্রী আলেয়া বিবি প্রাক্তন প্রধান ও বর্তমানে উপপ্রধান। একদা দোর্দন্ডপ্রতাপ আশরফকে ওই ঘটনায় গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ৯ জানুয়ারি তিনি জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন। তার পরেই তিনি গোষ্ঠী বদল করে বিধায়ক রুকবানুর রহমানের কাছে থেকে সরে এসে ব্লক সভাপতি জেবের শেখের হাত ধরেন। এবং গ্রামবাসীদের একাংশের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও পুলিশি প্রহরায় পরের দিন তাঁকে গ্রামে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু তলায় তলায় নতুন করে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হচ্ছিল। স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জেনেছে, আশরফকে গ্রামছাড়া করার জন্য সব রকম প্রস্তুতি নিতে থাকেন ফয়েজ শেখেরা। আবার আশরফও ঘনিষ্ঠদের এক জায়গায় করে বোমা-বন্দুক মজুত করতে থাকে। সোমবার রাতে গ্রামে আবার বোমাবাজি হয়, দু’রাউন্ড গুলিও চলে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ গেলে তাদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামের মহিলারা। ওই গোলমালের রেশ কাটতে না কাটতে মঙ্গলবার দুপুরে আশরফের বাড়িতে বোমা ফাটে। তার পরেই কিছু লোকজন তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোলমালের খবর পেয়ে তারা গিয়ে লোকজনকে হটিয়ে আশরফের বাড়ির ভিতর থেকে প্রচুর পরিমাণ বোমার মশলা উদ্ধার করে। গ্রামের লোকজন ফের পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায়। আশরফের আত্মীয়ের বাড়িতেও ভাঙচুর হয়। রাতে আবার বোমাবাজি হয় বেতবেড়িয়ায়। এর পরেই মঙ্গলবার রাতে পুলিশ আশরফ-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে আশরফ ও তিন জনকে বুধবার কৃষ্ণনগর আদালতে হাজির করানো হলে তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবার ফয়েজ শেখ-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ করেছিলেন আশরফের স্ত্রী আলেয়া বিবি। ফয়েজকে ধরতে না পারলেও পুলিশ পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে চার জনকে এ দিন আদালতে হাজির করানো হলে তাদের দু’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গ্রামে পুলিশি টহল চলছে। বিধায়ক রুকবানুরের দাবি, “আমি প্রথম থেকেই বলেছিলাম, আশরফকে গ্রামে ঢুকতে দিলে গোলমাল হবে। দ্রুত ব্য়বস্তা নেওয়ার জন্য পুলি‌শকে ধন্যবাদ।” কিন্তু অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্ব। ব্লক সভাপতি জেবের শেখের দাবি, “ঠিক কী ঘটেছে তা আমার জানা নেই। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে যা বলার বলব।” কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলছেন,“আশরফ-সহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ওই গ্রামে কিছুতেই আর অশান্তি করতে দেওয়া হবে না।”

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC chapra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy