জল জমেছে নবদ্বীপের প্রতাপনগরে। নিজস্ব চিত্র।
এক দিকে, ফুলেফেঁপে ওঠা নদী, অন্য দিকে, দফায় দফায় ভারী বৃষ্টি জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে নবদ্বীপ পুরসভার বেশ কিছু অঞ্চল। গঙ্গার জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েক বছর পর ফের বন্ধ করতে হয়েছে শহরের নিকাশি ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছাড়াগঙ্গার ‘লকগেট’।
জুলাই মাসের শেষ দিন থেকে শুরু হওয়া নিম্নচাপের বৃষ্টি দাপট এখনও কমেনি। প্রায় প্রতিদিন দিনে বেশ কয়েক বার জোরালো বৃষ্টি হচ্ছে। সর্বত্র ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হওয়ায় দ্রুত বাড়ছে নবদ্বীপের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গঙ্গা এবং জলঙ্গির জল। শহরের ভূমিস্তর থেকে খানিকটা উপর দিয়ে এই মুহূর্তে গঙ্গার জলস্তর যে উচ্চতায় বইছে তাতে ওই লকগেট বন্ধ না-করলে উল্টে গঙ্গার জল ঢুকে শহরের বেশ কিছু এলাকা ভাসিয়ে দিতে পারে। নবদ্বীপ শহরের উত্তর, পূর্ব এবং কিছুটা পশ্চিম অঞ্চলের অতিরিক্ত জল ওই পরিত্যক্ত খাত বেয়েই গঙ্গায় যায়। তবে সেই ছাড়াগঙ্গার লকগেট বন্ধ হওয়ায় শহরের বিস্তীর্ণ অংশে বৃষ্টির জমা জল বেরোনোর পথ বন্ধ।
এই পরিস্থিতিতে এক এক দফায় বৃষ্টি নামছে আর শহরের তুলনামূলক ভাবে নিচু অঞ্চল বাড়ছে জমা জলের দুর্ভোগ। ইতিমধ্যে শহরের প্রাচীন মায়াপুর, রানিরচড়া, প্রতাপনগরের বিভিন্ন এলাকায় জল জমেছে। পুরসভার ১, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু ছাঁড়িয়েছে জমা জল। ১ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি বৃন্দাবন মণ্ডল জানান, চন্দ্র কলোনি, পালপাড়া এবং চটির মাঠের কিছু এলাকায় বাড়ির উঠোনে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। সোম এবং মঙ্গলবারের জোরালো বৃষ্টির জেরে আরও বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল জমার এলাকা বাড়ছে। উত্তর এবং পূর্ব দিকের ৫, ৬, ৭ এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি সুজিত সাহা বলেন, “প্রাচীনমায়াপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার জল আনন্দকানন লেক হয়ে ছাড়াগঙ্গা দিয়ে গঙ্গায় চলে যেত। তবে লকগেট বন্ধ থাকায় বৃষ্টির সব জলটাই এখন শহরে থেকে যাচ্ছে।” জল জমেছে রানীরচড়ার পশ্চিম অ্যাথলেটিক ক্লাবের মাঠ, প্যাকের মাঠ এবং উদয়ন সঙ্ঘের মাঠ। বন্ধ খেলাধূলা।
তবে সবথেকে বেশি এলাকা জলমগ্ন হয়েছে প্রতাপনগরে। স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি ঝন্টুলাল দাস বলেন, “বড়প্লট থেকে বরিশাল পাড়া পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বৃষ্টির জল জমেছে। অবস্থা যা তাতে করে আজকালের মধ্যে বেশ কিছু পরিবারকে অন্যত্র সরানো ছাড়া উপায় নেই। অনেকের ঘরে জল ঢুকে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। তাঁদের বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।”
নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “যে সব জায়গায় ইতিমধ্যে জল জমেছে সেখানে পাম্পের ব্যবস্থা হচ্ছে। তবে আবহাওয়া দফতর বুধবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।”
জেলা সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার সব নদীর জলস্তরই বাড়ছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় স্বরূপগঞ্জে গঙ্গা এবং জলঙ্গির জলস্তরের উচ্চতা ছিল ৮.২৫ মিটার। যা বিপদসীমার (৮.৪৪ মিটার) থেকে ১৯ সেন্টিমিটার নীচে। হাঁসখালিতে চূর্ণীর উচ্চতা ছিল ৫.২৭ মিটার (বিপদসীমা ৭.৫৩ মিটার) এবং মাজদিয়ায় ৫.৮৬ মিটার। মাথাভাঙার জলস্তর ছিল ৫.৩৭ মিটার (বিপদসীমা ৭.৫৩ মিটার)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy