দোল উৎসবে মাতলেন গ্রামবাসীরা। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
রবিবার দোল খেলল হিলোড়া। গ্রাম জুড়ে রং হাতে নিয়ে পথে নামলেন মহিলারাও। বাংলা জুড়ে দোল উৎসব পেরিয়েছে গত মঙ্গলবারই। সেদিন ছিল হিলোড়া রংহীন। নিয়ম মেনে পাঁচ দিন পর পঞ্চম দোলেই লাল, সবুজ, নীল, গোলাপী রঙে মেতে উঠল গ্রাম। দোলকে ঘিরে গ্রাম জুড়ে বসানো হল কড়া পুলিশ পাহারা।
মুর্শিদাবাদে বহু প্রাচীন ও পরিচিত গ্রাম হিলোড়া। এই গ্রামেই রয়েছে প্রায় ৩০০ বছরের প্রাচীণ শ্যামচাঁদদেবের মন্দির। সেই শ্যামচাঁদের বিগ্রহকে ঘিরেই এই পঞ্চম দোলের আয়োজন হয়ে আসছে পরম্পরায়। বিত্তশালী এই দেব বিগ্রহের কয়েক কোটি টাকার ধন সম্পদ রয়েছে বলে সূত্রের খবর। প্রচুর পরিমাণে সোনার গয়না রয়েছে ব্যাঙ্কের লকারে। ৪৮ বিঘে ধানি জমি ও পুকুর রয়েছে। রয়েছে ২২ বিঘে জমির উপর বিশাল মন্দির। মন্দিরের নিরাপত্তায় একাধিক সিসি ক্যামেরা বসানো রয়েছে। রয়েছে ২ জন করে নৈশ প্রহরী ও ২ জন সিভিক কর্মী।
মন্দিরে পুজোর জন্য রয়েছেন সাত জন পুরোহিত। শ্যামচাঁদদেব সাধারণ ভাবে এই সময় মন্দিরে থাকেন না। ভক্তদের বাড়ি বাড়ি পুজোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। দোল উৎসবের জন্যই মন্দিরে এসেছেন শনিবার। রবিবার দোল সেরে মঙ্গলবার ফের বেরিয়ে পড়বেন ভক্তদের বাড়িতে।
বিগ্রহকে ঘিরে রয়েছে একটি ট্রাস্টি বোর্ড। তাদের অধীনেই চলে সব কিছুর পরিচালনা।এই ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য প্রবীণ সুজিত দাস বলেন, ‘‘এই গ্রামে এই পঞ্চম দোলের আয়োজন হয় এই বিগ্রহকে ঘিরেই। আবির খেলায় গ্রাম ঘোরেন পুরুষ-মহিলারা। গ্রামবাসীরা ছাড়াও এই দোল উৎসবে যোগ দিতে হিলোড়া গ্রামে এদিন আশপাশের গ্রাম থেকেও আসেন বহু মানুষ। দিনভর রান্নার আয়োজন চলে মন্দিরে। প্রসাদ পেতে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে।’’ তিনি বলেন, ‘‘মন্দির প্রতিষ্ঠার পর ১১৬৮ বাংলা সন থেকেই চলে আসছে এই পঞ্চম দোল উতসব। রাত পর্যন্ত এর রেশ চলে গ্রামে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বয়স্কদের পায়ে আবির মাখানো রেওয়াজ আজও চলে আসছে।’’
তবে এখন এই দোলকে ঘিরে তরুণ ও কিশোরদের মধ্যে উচ্ছ্বাস বেড়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে, সুতির বাজিতপুর গ্রামে বলরাম, সর্বেশ্বর, মদনমোহন ও শ্যামচাঁদের মন্দির গড়ে ওঠে। তিন ভাইয়ের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত শ্যামচাঁদদেব সে মন্দির ছাড়েন। রামজীবন মোহান্ত দাস তখন সুতিরই হিলোড়া গ্রামে নির্মিত মন্দিরে নিয়ে আসেন শ্যামচাঁদকে। সেই থেকে শ্যামচাঁদকে ঘিরে পরিচিতি পায় হিলোড়া। অন্য তিন ভাই অবশ্য রয়ে গিয়েছেন বাজিতপুরের সেই মন্দিরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy