Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Woman Arrested

শিশুকে গলা টিপে খুন মায়ের, গ্রেফতার

এ দিন সকালে নছিমা স্বামী আনোয়ারের জন্য মাঠে ভাত নিয়ে গিয়েছিল। ঘণ্টাদুয়েক পর নছিমাই আবার মাঠে এসে আনোয়ারকে জানায়, ছোট ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাপড়া শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:২৬
Share: Save:

তিন বছরের ছেলেকে গলা টিপে খুনের অভিযোগে মাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম নছিমা বিবি। বাড়ি চাপড়ার উত্তর লক্ষ্মীপুর এলাকায়।

বৃহস্পতিবার সকালে ওই মহিলা নিজের পঞ্চম শিশুসন্তান আহাদ মণ্ডলকে গলা টিপে, শ্বাসরোধ করে খুন করে বলে অভিযোগ। এর পরে বাড়ির কাছেই একটি পুকুরের ধারে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়, এমনটাই দাবি। শিশুর মৃতদেহ মেলার বেশ কিছু সময় পরে পুলিশ পাশের গ্রাম থেকে অভিযুক্ত মাকে আটক করে। পরে ওই শিশুর বাবা আনোয়ার মণ্ডলের নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শিশুর মাকে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত মহিলা জেরায় সন্তানকে গলা টিপে খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশের দাবি। তবে ঠিক কী কারণে ওই মা নিজের সন্তানকে খুন করেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। শিশুর মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার শক্তিনগর পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

কেন সন্তানকে খুন করল নছিমা, সে কারণ আনোয়ারের কাছেও স্পষ্ট নয়। আনোয়ারের কথায়, “স্ত্রীর মাথার কোনও সমস্যা নেই যে, এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটাবে। তবে হঠাৎ করে রেগে যাওয়ার স্বভাব আছে।”

কিন্তু নছিমাই যে ছেলেকে খুন করেছে, সেটা কেন মনে হল? আনোয়ারের দাবি, “যদি ও খুন না করে থাকে, তা হলে কেন পালিয়ে গেল? অন্যায় না করলে কেউ পালায় না।”

এ দিন সকালে নছিমা স্বামী আনোয়ারের জন্য মাঠে ভাত নিয়ে গিয়েছিল। ঘণ্টাদুয়েক পর নছিমাই আবার মাঠে এসে আনোয়ারকে জানায়, ছোট ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না। আনোয়ারের খুড়তুতো ভাই মিজানুর রহমান মণ্ডলের দাবি, ‘‘নছিমাই জানায় আহাদকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সকলে মিলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। আনোয়ারও মাঠ থেকে এসে খোঁজাখুঁজি করছিল। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর নছিমাই প্রতিবেশী এক মহিলাকে বলে, ইসমাইলের পুকুরে ছেলের খোঁজ করতে।”

দম্পতির বাড়ির পাশেই ইসমাইলের পুকুর। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরের পাশে ঝোপের দিকে শিশুটি জলে পড়ে আছে। ওই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে শিশুকে চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। এরই মধ্যে শিশুর মা বেপাত্তা হয়ে যায়। কিছু সময় পরে পুলিশের কাছে খবর আসে নছিমা পাশের গোয়ালডাঙা গ্রামে জমসুর মণ্ডল নামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে আছে। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে। পুলিশের দাবি, মহিলা ওই আত্মীয়কে জানিয়েছিল যে, জমি-জায়গা সংক্রান্ত গন্ডগোলের কারণে গ্রামের কয়েক জন তাকে ধর্ষণ করতে চায়। সেই কারণেই নছিমা আত্মগোপন করে আছে।

শিশুর মাকে থানায় নিয়ে আসার পরে পুলিশ তাকে জেরা করে। জেরায় নছিমা সন্তান-খুনের কথা স্বীকার করে নেয় বলে পুলিশের দাবি। তবে ঠিক কী কারণে এমন ঘটনা, তা এখনও পরিষ্কার নয়। পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় ওই মহিলা জানিয়েছে, ছেলে সকাল থেকে নানা কারণে বায়না করছিল। রাগের মাথায় সে ঘরের ভিতরেই শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। তার পর কোলে করে পুকুরপাড়ে গিয়ে জলে ফেলে দিয়ে আসে। এমনকি, যাতে তাকে কেউ সন্দেহ না করে, তার জন্য সেই সকলকে ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায় এবং খোঁজাখুজি করে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, নেহাতই রাগের বসে সন্তানকে খুন, না কি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

chapra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy