Advertisement
২১ নভেম্বর ২০২৪
TMC

TMC MLA: ১৬ কোটি নিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক, চিঠি অভিষেককে, অভিযুক্ত বলছেন, প্রমাণে ইস্তফা

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে যে চিঠি অভিযোগকারীরা পাঠিয়েছেন, তার বিষয়, ‘বিধায়ক তাপস সাহার হাত হইতে আমাদেরকে বাঁচান’।

চাকরি দেওয়ার নাম করেে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে।

চাকরি দেওয়ার নাম করেে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তেহট্ট শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২২ ১৫:৫৯
Share: Save:

চাকরি দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। নদিয়ার তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার নামে অভিযোগ জানিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই মর্মে তিনটি চিঠি পাঠালেন অভিযোগকারীরা। একটি চিঠি গিয়েছে পলাশিপাড়া বিধানসভা এলাকা থেকে। অন্য দু’টি তেহট্ট এবং করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের। বিধায়ক যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি বিধায়ক পদ ছেড়ে দেবেন বলে মন্তব্য করেছেন আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে।
সম্প্রতি অভিষেকের দফতরে তিনটি চিঠি পাঠিয়েছেন নদিয়ার কয়েক জন বাসিন্দা। তিনটি চিঠিতেই ‘বিষয়’ হিসাবে লেখা হয়েছে, ‘বিধায়ক তাপস সাহার হাত হইতে আমাদেরকে বাঁচান’। পলাশিপাড়া থেকে যে চিঠি গিয়েছে, সেখানে লেখা হয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০২১ পর্যন্ত পলাশিপাড়ার বিধায়ক থাকাকালীন চাকরি দেওয়ার নাম করে তাপস ৫০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু টাকা দিয়েও কারও চাকরি হয়নি বলেও চিঠিতে জানানো হয়েছে। এর পর সেই টাকা ফেরত চান অভিযোগকারীরা। কিন্তু বার বার চাওয়া সত্ত্বেও তাপস এখনও পর্যন্ত এক কানাকড়িও ফেরত দেননি বলে অভিযোগ। টাকা ফেরত না পেলে অভিযোগকারীরা আত্মহত্যা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই চিঠিতে। আরও অভিযোগ, পলাশিপাড়া, তেহট্ট এবং করিমপুরের বিভিন্ন জনকে চাকরি করে দেওয়া বা লাইসেন্স করে দেওয়ার নাম করে ১৬ কোটি টাকা তুলেছেন তাপস।

চাকরিপ্রার্থীরা জন্য কে কত টাকা দিয়েছেন তার তালিকাও জুড়ে দেওয়া হয়েছে অভিযোগপত্র তিনটির সঙ্গে। অভিযোগকারীরা নিজেদের নাম, ঠিকানা এবং ফোন নম্বরও জানিয়েছেন অভিষেককে। তাপস ২০১৬ সালে নদিয়ারই পলাশিপাড়া কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন। একুশের নীলবাড়ির লড়াইয়ে তাঁকে দল টিকিট দেয় তেহট্ট বিধানসভায়। সেখান থেকেও জেতেন তাপস। তাঁর পুরনো বিধানসভা কেন্দ্র পলাশিপাড়ায় বাড়ি আশিস বিশ্বাসের। আনন্দবাজার অনলাইনকে সোমবার আশিস বলেন, ‘‘আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারছি না। এখন আমার দেওয়া ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত পেলেই বাঁচি।’’

অভিষেককে পাঠানো চিঠিতে নাম থাকা পলাশিপাড়ারই বাসিন্দা ভবেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘বিধায়ক তাপস এবং প্রবীর কয়াল নামে তাঁর এক দালালকে জমি-বাড়ি বিক্রি করে, বাড়ির মহিলাদের গয়না বন্ধক দিয়ে চাকরির জন্য ২ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। এখন দেখছি, চাকরি তো দূর অস্ত্, পয়সা পর্যন্ত ফেরত দিচ্ছেন না।’’

করিমপুর বিধানসভা এলাকায় বাড়ি একেন মণ্ডলের। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলে আলমগির-সহ আরও কয়েক জনের চাকরি করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিধায়ক। আমি সে জন্য ওঁর হাতে ৩৬ লাখ টাকা তুলে দিয়েছিলাম। কারও চাকরি হয়নি। এমনকি, ওই টাকা ফেরতও দেওয়া হয়নি আমাকে।’’

এ বিষয়ে সোমবার যোগাযোগ করা হয় তাপসের সঙ্গে। তিনি যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘এই সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁরা আগে প্রমাণ করুন। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তা হলে আমি বিধায়ক পদ তো বটেই, রাজনীতিও ছেড়ে দেব।’’

অন্য দিকে, আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে সোমবার একাধিক বার যোগাযোগ করা হয় অভিযুক্ত প্রবীর কয়ালের সঙ্গে। তবে তাঁর মোবাইল বেজে গিয়েছে। তিনি ফোন ধরেননি।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC TMC MLA Bribe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy