তৃণমূলের পতাকা। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন সরকারি জায়গায় অবৈধ নির্মাণ নিয়ে কড়া বার্তা দিচ্ছেন, ঠিক সেই সময়ে ডোমকলের ধুলাউড়ি এলাকায় একটি মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্রের জমি দখল করে তৈরি হয়েছে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়। দিন কয়েক আগে সেই কার্যালয়ের উদ্বোধন করেছেন রানিনগরের বিধায়ক তৃণমূলের সৌমিক হোসেন।
এখন সেই কার্যালয় নিয়ে উঠে গিয়েছে বড় প্রশ্ন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শিক্ষা কেন্দ্রের জমিকে দখল করে রীতিমতো গায়ের জোরে ওই দলীয় কার্যালয় করা হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ বাধা দিলেও লাভ হয়নি। এমনকি প্রশাসনের সর্বস্তরে অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি বলেই দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের। যদিও প্রশাসনের তরফে দাবি, তাদের কাছে এই সময়ে কোনও অভিযোগ করা হয়নি। ডোমকলের মহকুমা শাসক শুভঙ্কর বালা বলেন, ‘‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি আমার কাছে। তবে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
তবে দলীয় এই কার্যালয় তৈরিকে ঘিরে রীতিমতো অস্বস্তিতে শাসক দল। শাসক দলের স্থানীয় তৃণমূল নেতা আসাদুল ইসলামের নেতৃত্বে ওই কার্যালয় তৈরি হয়েছে বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশের। দলের নিচু তলায় একটা অংশের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ ছিল বলেও জানা গিয়েছে তৃণমূল সূত্রে। আসাদুল ইসলামের দাবি, ‘‘ওটা খাস জমি বলেই আমরা জানি। কিছুটা আছে পূর্ত দফতরের। স্কুলের সামান্য কিছু অংশ থাকলেও থাকতে পারে।’’
তা হলে এমন জমিতে দলীয় কার্যালয় করলেন কেন?
তাঁর দাবি, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরেই এখানে পাড়ার ছেলেরা ওঠা বসা করত। তাদের বসার জন্যই একটা ঘর তৈরি হয়েছিল। পরে সেটাকেই দলীয় কার্যালয় করা হয়েছে।’’ রানিনগরের বিধায়ক তৃণমূলের সৌমিক হোসেন বলেন, ‘‘ওই কার্যালয় যে স্কুলের জমিতে তৈরি হয়েছে সে খবর বিন্দুমাত্র আমার কাছে ছিল না। এমনকি স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাকে কিছুই জানাননি। এই ঘটনা চরম নিন্দনীয়, দলীয় ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
মাস কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী সরকারি জমিতে দখলদারি নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছিলেন। প্রশাসনকেও বলেছিলেন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য। তার পরে বেশ কিছু জায়গা থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে অবৈধ নির্মাণ। আর ঠিক সেই সময়ে ডোমকলের ধুলাউড়ি এলাকায় রাধাকান্তপুর এসএম মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্রের জমি দখল করে তৈরি হয়েছে তৃণমূলের কার্যালয়। বিরোধীদের দাবি, তৃণমূল এখন সরকারি সমস্ত জায়গা প্রতিষ্ঠানকেই নিজেদের দলের সম্পদ মনে করছে। তা ছাড়া, প্রশাসন এতটাই দলদাসে পরিণত হয়েছে যে, তাদের কাছে অভিযোগ করার পরেও কোনও লাভ হয়নি। সিপিএমের ডোমকল এরিয়া কমিটির সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘গোটা রাজ্যটাই এখন তৃণমূলের জমিদারিতে পরিণত হয়েছে। আর পুলিশ থেকে প্রশাসন শাসক দলের নেতাকর্মীর ভূমিকা পালন করছে। তার ফলেই সকলের চোখের সামনে স্কুলের জমি দখল করে হয়ে গেল দলীয় কার্যালয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy