Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Ration Commodity

মেলেনি রেশন সামগ্রী, স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন

খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, ডিজিটাল রেশন কার্ড চালু হওয়ার পর অনেককেই ডিলার পরিবর্তিত হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়। অনেক গ্রাহকের রেশন ডিলার পরিবর্তন হওয়াকে কেন্দ্র করে চরম সমস্যার মধ্য পরতে হয়েছিল গ্রাহকদের।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

সন্দীপ পাল 
কালীগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৪৫
Share: Save:

পেশায় গরিব দিনমজুর সোহরাব হোসেন। পরিবারে পাঁচ সদস্য। সকলেই তাঁর উপার্জনের উপর নির্ভরশীল।দীর্ঘ লকডাউনের সময় কোনও রোজগার না-থাকায় চরম সমস্যায় পড়তে হয়েছিল কালীগঞ্জের পানিঘাটার এই বাসিন্দাকে। রেশন কার্ড ছিল তাঁর। তবুও সরকারের তরফ থেকে দেওয়া বিনা পয়সার রেশন তিনি পাননি। তাঁর অভিযোগ, এ ব্যাপারে ’দিদিকে বলো’-তে ফোন করে জানালে সেখান থেকে বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও কিছুই হয়নি।

হতাশ হয়ে জেলাশাসক, ব্লক আধিকারিক, ব্লক খাদ্য জফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। সেইসঙ্গে জেলাশাসকের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘রোজগার ছাড়া, রেশন ছাড়া এ ভাবে তো বাঁচা যায় না। তাই আমার মরাই ভাল।’’ কালীগঞ্জ ব্লক খাদ্য আধিকারিক দিবাকর সাহা বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার পর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।’’ আর কালীগঞ্জের বিডিও নাজির হোসেনের বক্তব্য, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করার কথা বলা হয়েছে। আশা করছি সপ্তাহখানেকের মধ্যে সব মিটে যাবে।’’সোহরাবের কথায়, ২০১৬ সালে ডিজিটাল রেশন কার্ড পাওয়ার পর তিনি দেখেন, তাঁর ডিলার পরিবর্তন হয়েছে। নতুন ডিলার পাশের গ্রাম রাধাকান্তপুরের বাসিন্দা সফিউল হক। কিন্তু ওই ডিলার প্রথম কয়েক সপ্তাহ রেশন দেওয়ার পরে জানিয়ে দেন, সোহরাবকে আগের ডিলারের কাছ থেকেই ফের রেশন নিতে। তিনি সেখানে গেলে ওই ডিলার আবার বলেন, তাঁর তালিকায় সোহরাবের নাম নেই। ফলে তিনি রেশন দিতে পারবেন না। চোখে অন্ধকার দেখেন সোহরাব হোসেন। আবার রাধাকান্তপুরের ডিলারের কাছে গেলে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তখন তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েতে জানান, কিন্তু লাভ হয় না।

খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, ডিজিটাল রেশন কার্ড চালু হওয়ার পর অনেককেই ডিলার পরিবর্তিত হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়। অনেক গ্রাহকের রেশন ডিলার পরিবর্তন হওয়াকে কেন্দ্র করে চরম সমস্যার মধ্য পরতে হয়েছিল গ্রাহকদের। গ্রাহকদের নির্দিষ্ট আবেদনপত্রে আবেদন করে ডিলার পরিবর্তন করে নিতে বলা হয়। সেই সময় অনেকের সমস্যা মিটলেও কিছু গ্রাহকের সমস্যা রয়ে যায়। ‘নেট অ্যালোটমেণ্ট’ চালু হওয়ার পর থেকে চিত্রটা একেবারে বদলে যায়। ওই নিয়ম অনুযায়ী, যে ডিলারের তালিকায় যে গ্রাহকের নাম রয়েছে একমাত্র সেই ডিলারের থেকেই সেই ব্যক্তি রেশন নিতে পারবেন। যে ডিলারের কাছে যে গ্রাহকের রেশন কার্ড আছে সেই গ্রাহককে রেশন দিতে বাধ্য সেই ডিলার। তা হলে প্রশ্ন, রাধাকান্তপুরের ডিলার সফিউল হকের কাছে সোহরাবের নাম থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি রেশন সামগ্রী পাচ্ছে না? অভিযুক্ত ডিলার সফিউল হক বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি আমার কাছে এক-দু’বার এসেছেন। তার পর আসেননি। গ্রাহক না আসলে রেশন কী ভাবে দেব? ওঁর রেশন সামগ্রী ধরা আছে। এলেই পাবেন।’’

কিন্তু, নিয়ম অনুসারে মাস শেষ গ্রাহক যদি রেশন না নেন সেই ক্ষেত্রে ওই গ্রাহকের সামগ্রীর স্টক রিটার্ন দেখাতে হয়। সেই অর্থে সোহরাবের রেশন বেশ কয়েক মাস জমা থাকার কথা। সে ক্ষেত্রে যাঁরা নজরদারি চালাচ্ছেন তাঁদের চোখে বিষয়টি পড়ার কথা। কেন এই গ্রাহকের রেশন মাসের পর মাস জমা হচ্ছে, কেন খরচ হচ্ছে না, সেটাও তাঁদের খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। কিন্তু সে সব কিছুই হয়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

Euthanasia Ration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy