অধীর চৌধুরী, সভাপতি, প্রদেশ কংগ্রেস। — ফাইল চিত্র।
ভোটে হারার পর ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনার মাঝেই কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের ডাকে সাড়া দিয়ে কংগ্রেসের বর্ধিত কার্যকরী কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি চললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। যাওয়ার আগে হারের কারণ নিয়ে আবার আক্রমণ শানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে।
হারলে বাদাম বিক্রি করবেন বলে ভোটের আগে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়ে দিয়েছিলেন অধীর। এখনও পর্যন্ত পেশাবদলের তেমন কোনও ইঙ্গিত নেই। তারই মধ্যে শনিবার দিল্লিতে কংগ্রেসের বর্ধিত কার্যকরী কমিটির বৈঠকে হাজির থাকতে অধীর রওনা দিলেন দিল্লি। শুক্রবারই বহরমপুর ছেড়ে দিল্লি রওনা দেন প্রদেশ সভাপতি। যাওয়ার আগে আক্রমণ শানান তৃণমূলের বিরুদ্ধে। টানা বহরমপুর থেকে জিতে আসা অধীর এ বার পরাস্ত হয়েছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের কাছে। তার পর থেকেই বহরমপুরের বাতাসে ভাসছে বিভিন্ন ‘খবর’। কখনও খবর আসছে, বনিবনা হচ্ছে না, অধীর দলবদল করতে চলেছেন। আবার কখনও রাজনীতিকে পাকাপাকি ভাবে বিদায় জানানোর জল্পনা। দিল্লি রওনা হওয়ার ঠিক আগে তা নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করলেন অধীর। জানিয়ে দিলেন, কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর কোনও দূরত্ব নেই। এ প্রসঙ্গে অধীর বলেন, ‘‘মল্লিকার্জুন খড়্গে আমাকে ডেকেছেন। আমি শনিবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছি। দিল্লির লোকেরা গুজব ছড়াচ্ছেন যে, আমি দল থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। তবে, দলের সর্বোচ্চ স্তরের নেতারা আমাকে ডেকেছেন। আমি দিল্লির বৈঠকে যাচ্ছি। যদি কেউ আমার সঙ্গে দেখা করতে চান, তবে তাঁরা আসতে পারেন।’’ পাশাপাশি, অধীর আক্রমণ করলেন মমতাকেও। প্রসঙ্গত, ইউসুফকে বহরমপুরে প্রার্থী ঘোষণা করার পরেই অধীরের লড়াই কঠিন হয়ে যায়। অধীরের অভিযোগ, মমতা কেবলমাত্র তাঁকে হারাতেই বহরমপুরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক জনকে প্রার্থী করেছেন। কারণ, বহরমপুর লোকসভায় বাস করেন ৬৬ শতাংশ সংখ্যালঘু মানুষ। এই সূত্রেই মমতার বিরুদ্ধে ‘সাম্প্রদায়িক কার্ড’ খেলার অভিযোগও করেন তিনি। অধীরের দাবি, মমতা এক দিকে সংখ্যালঘু প্রার্থী দিয়ে বহরমপুরের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটে ভাগ বসিয়েছেন। অন্য দিকে, সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে গিয়ে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অধীরের অভিযোগ, হিন্দু এবং মুসলিম— দুই সম্প্রদায়ের ভোটের ভাগাভাগিতেই হেরেছেন তিনি। আর ভাগাভাগির সম্পূর্ণ দায় তিনি চাপিয়েছেন তৃণমূলের উপর। অধীর বলেন, ‘‘বিজেপির হিন্দু ভোট আড়াই গুণ বেড়েছে। এই কারণেই আমি হেরে গেলাম। আগের মতো হিন্দুদের ভোট আমার কাছে থাকলে হারতাম না। এটাই দিদির খেলা। দিদির উদ্দেশ্য সফল হল। আর কী বলব বলুন! হার স্বীকার করেছি। ইউসুফ পাঠানকে আগামিদিনের জন্য শুভেচ্ছা!’’
ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে অধীরকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এটাই তো পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি হয়ে উঠেছে। দিদি এত কিছু পেয়েও খুশি না। এ বার মারতে আরম্ভ করে দিয়েছে। আমি তো সেটাই বলেছিলাম, বাংলায় সবই তো হল, এ বার হিংসাটা বন্ধ হোক! দিদি প্রধানমন্ত্রী হবেন, খোকাবাবু মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তার প্রচেষ্টাও শুরু হয়ে গিয়েছে। এর পর আর কী চাই আপনাদের? সাধারণ ভোটার ও কর্মীদের উপর হামলা করে কী লাভ হবে?’’ ভোট পরবর্তী হিংসা রোখার একটি দাওয়াইও নিজের মতো করেই বাতলে দিয়েছেন অধীর। তাঁর দাবি, কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা করার চেয়ে নেতাদের জেলে ভরে দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তা হলেই ঝামেলা মিটে যাবে বলে দাবি বহরমপুরে বিজিত প্রার্থীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy