— ফাইল চিত্র।
বিজেপির গড় থেকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারের শেষ দৌড় শুরু করে দিলেন তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকালে বাদকুল্লার অনামী ক্লাবের মাঠে তিনি কখনও তুলেছেন কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রসঙ্গ, বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।গত কয়েক বছরে দু’টি বড় ভোটে দক্ষিণ নদিয়ায় বিজেপির কাছে পিছু হটতে হয়েছে তৃণমূলকে। এ দিন সেখানেই কৃষ্ণগঞ্জ কেন্দ্রের অন্তর্গত বাদকুল্লায় জনসভা করতে এসে হারানো ভোট পুনরুদ্ধারের বার্তাই দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সপ্তাহ দুয়েক আগে ‘নবজোয়ার যাত্রা’র সময়ে এই মাঠেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অভিষেকের সভা বাতিল হয়ে গিয়েছিল। এ দিনও সভার আগে বৃষ্টি হয়েছে। অভিষেক দাবি করেন, “যাঁরা ঝড়-জল বৃষ্টি উপেক্ষা করে, বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এই সভাস্থলে এসে উপস্থিত হয়েছেন, তাঁরা শুধু বক্তব্য শুনতে আসেননি। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েই এসেছেন।”
গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে দক্ষিণ নদিয়ায় বিপুল সাফল্য পেয়েছিল বিজেপি। সভায় অভিষেক বলেন, “আপনারা ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীদের জিতিয়েছেন। এক বারের জন্যও তাদের পাশে পেয়েছেন? প্রশ্ন করুন নিজেদের। যারা ‘অচ্ছে দিন’-এর গল্প দিয়ে আপনাদের ভোট নিয়েছিল, আপনাদের ভুল বুঝিয়ে আপনাদের ভাঁওতা দিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করেছিল, আপদে-বিপদে এক বারও তাদের পাশে পেয়েছেন?”
মতুয়া-গড়ে এসে এ দিন মতুয়া এবং উদ্বাস্তু আবেগও উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেন অভিষেক। সিএএ-প্রসঙ্গ তুলে তাঁর প্রশ্ন, “যাঁরা নাগরিক, যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁদের আবার প্রমাণ দিতে হবে?” তাঁর দাবি, “আগে প্রধানমন্ত্রী ’৭২ সালের আগের কাগজ দেখান। ক্ষমতায় আছেন বলে হাতির পাঁচ পা দেখেননি!”
সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে গেলে বিজেপির তরফে তাঁকে বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে অভিষেক বলেন, “ঠাকুরবাড়িতে গিয়েছিলাম। গেট বন্ধ করে দিল। বিরোধী দলনেতা বললেন, অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া গিয়েছে! ঠাকুরের কাছে যাব, প্রণাম করব, ঠাকুর দর্শন করব, তার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট লাগবে?” তাঁর দাবি, “কী ধরনের হিন্দুত্ব এরা স্থাপন করতে চাইছে, এটা তার নিদর্শন। বহিরাগতদের পা চেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যাদের হাতে গোধরার রক্ত লেগে।”
রানাঘাটের বিজেপি সাংসদের নাম করে অভিষেক এ দিন বলেন, “প্রায় ২ লক্ষ ৩৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে আপনারা জগন্নাথ সরকারকে জেতান। উন্নয়নের স্বার্থে তিনি কী করেছেন? কোনও এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে রানাঘাটে এনে উন্নয়নের জন্য একটা বৈঠক করেছেন? তার প্রমাণ দেখান। একটা নিদর্শন দেখাতে পারলে রানাঘাটে আর পা রাখব না।” নদিয়ার দক্ষিণে বিজেপির উত্থানের প্রসঙ্গ তুলে অভিষেক বলেন, “চার বছরে ওরা কী কাজ করেছে, তার রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আসুক।”
কর্মসংস্থান প্রসঙ্গ তুলে অভিষেকের কটাক্ষ, “১৮টা ছেলেকে দেখান যাদের হাতে জগন্নাথ সরকার নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছেন। হ্যাঁ, ওঁরা চাকরি দিয়েছেন বঙ্কিম ঘোষের ছেলের বৌকে!” জগন্নাথের পাল্টা দাবি, “হারের ভয়ে ওঁরা উল্টোপাল্টা বলছেন। আসলে ওঁরা তো বোমা শিল্প নিয়েই ব্যস্ত। তাই অন্য কিছুর খোঁজ রাখেন না। তা না হলে জানতেন, রেলের সঙ্গে কথা বলে বিশেষ ট্রেন চালু করা থেকে শুরু করে চূর্ণী সংস্কারের প্রস্তাব-সহ নানা কাজ হয়েছে।”
পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হতে না-পারা নিয়ে দলের একাংশের ক্ষোভের আবহেই অভিষেক এ দিন বলেন, “আপনাদের মত নিয়ে মানুষের মত নিয়ে প্রার্থী স্থির করা হয়েছে। তাদের জেতানোর দায়িত্ব মানুষের, আপনাদের।” তাঁর হুঁশিয়ারি, “কারও বিরুদ্ধে যদি কোনও অভিযোগ আসে, তিনি যত বড় নেতার ছত্রচ্ছায়ায় থাকুন না কেন, বহিষ্কার করা হবে। প্রতি তিন-চার মাস অন্তর জনপ্রতিনিধিদের কাজের পর্যালোচনা করা হবে। কাজ না করলে পদ হারাতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy