কর্মিসভায় আব্বাস সিদ্দিকি। বুধবার চাপড়ায়। নিজস্ব চিত্র।
জল্পনাটা চলছিল কিছুদিন ধরেই। বুধবার সরাসরি না বললেও কথার ভাঁজে আব্বাস সিদ্দিকি ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন, সংখ্যালঘু প্রধান চাপড়া কেন্দ্রে প্রার্থী দিতে উৎসাহী তাঁর দল আইএসএফ।
চাপড়ায় মুসলিম ভোটারের সংখ্যা মোট ভোটের প্রায় ৭০ শতাংশ। তার জোরেই গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে পঞ্চাশ হাজার ভোট লিড পেয়েছিল তৃণমূল। ফলে এ বারও এই আসনটি তৃণমূলের বলে ধরে নিচ্ছেন অনেকেই। সেই সহজ সমীকরণ যে পাল্টে যেতে পারে, এ দিন তারই আঁচ মিলেছে আব্বাসের কথায়।
এ দিন চাপড়ার কর্মিসভা করতে এসে সাংবাদিকদের সামনে আব্বাস দাবি করেন, “চাপড়ার মানুষ ভালবেসে ডেকেছে তাই এসেছি।“ চাপড়ায় কি প্রার্থী দিচ্ছেন আপনারা? আব্বাসের কৌশলী উত্তর, “মানুষ যদি মনে করে তা হলে দেব। অনেক দিন ধরেই এখানে কাজ চলছে, আমাদের ভাল প্রভাব আছে। কর্মীদের বলছি ভাল ভাবে কাজ করতে।” এ দিনই এক জনকে চাপড়ায় আহ্বায়ক করে কমিটি তৈরির নির্দেশ দিয়ে যান তিনি।
আব্বাস সরাসরি না বললেও তাঁর সংগঠনের লোকজন দাবি করতে শুরু করেছেন, জোট হোক বা না হোক চাপড়ায় প্রার্থী দেবে আইএসএফ। আর তাতে অঙ্ক অনেকটাই পাল্টে যাবে। জোটের মধ্যে চাপড়া আসনটি সিপিএম ও কংগ্রেস দু’পক্ষই দাবি করছে। তৃণমূলের আগে এখানে শেষ বিধায়ক ছিল সিপিএমের। কিন্তু বরাবরই এটা কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ছিল। শেষের দিকে পঞ্চায়েত সমিতি থেকে শুরু করে বড় সংখ্যক গ্রাম পঞ্চায়েত ছিল কংগ্রেসের দখলে। দুই পক্ষই প্রার্থী দেওয়ার দাবিদার। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল আইএসএফ-ও।
কর্মিসভায় আব্বাস জানান, তাঁরা রাজ্যে ৭০ থেকে ৮০টি আসন চান। জোটের স্বার্থে দু’পাঁচটি আসন এ দিক ও দিক হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাঁরা যেখানে প্রার্থী দেবেন না সেখানে জোটসঙ্গীকে সমর্থন করবেন তাঁরা। কোনও সমঝোতা না হলে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি তাঁরা একা লড়াই করার কথা ঘোষণা করে দেবেন। বাম-কংগ্রেস জোটের অভিপ্রায় প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, “যত দিন যাচ্ছে ততই মনে হচ্ছে আমাদের বোকা বানানো হচ্ছে। একটা ফয়সালা হওয়া দরকার।” তাঁর মতে, “জোট হওয়াটা খুবই প্রয়োজন, যাতে ভোট ভাগ না হয়।” আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় মিছিল করার কথাও ঘোষণা করেন তিনি। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মিছিল ভরানোর জন্য বাম-কংগ্রেস তাঁকে সঙ্গে চাইছে বলেও দাবি করেন।
অনেকেরই ধারণা, আইএসএফ যদি চাপড়ায় প্রার্থী দেয়, মুসলিম ভোটের একটা বড় অংশ তাদের দিকে চলে আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার তৃণমূলের পক্ষে লড়াই অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়তে পারে। কিন্তু জোট যদি না হয় তবে তারা নিজের নাক কেটে তৃণমূল এবং জোট দুই পক্ষেরই যাত্রাভঙ্গ করতে পারে, এমন অঙ্ক কষতে শুরু করেছে বিজেপি শিবির।
এ দিন চাপড়ার একটি লজে আব্বাসের নবগঠিত দলের কর্মিসভায় কিন্তু লোক বেশি ছিল না, মেরেকেটে শ’দুয়েক। তবে আব্বাস দাবি করেন, দীর্ঘ দিন কাজ করার সুবাদে তাঁর একটা জনভিত্তি তৈরি হয়ে আছে। চাপড়ার পাশাপাশি নদিয়ায় মুসলিম অধ্যুষিত আরও একাধিক আসন তাঁদের তালিকায় আছে বলে দলীয় সূত্রে
জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy