—প্রতীকী ছবি।
নদিয়ার তেহট্টে গুলিবিদ্ধ হলেন এক তৃণমূল নেতা। শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ আক্রান্ত হওয়া ওই তৃণমূল নেতার নাম গোপাল ভাঙ্গারী। এলাকায় তিনি অত্যন্ত ‘প্রভাবশালী’ বলেই পরিচিত। জমির দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন গোপাল— এমনটাই অভিযোগ করতে শুরু করেছে বিজেপি। যদিও বিজেপির এই অভিযোগ কার্যত নস্যাৎ করেছে শাসকদল।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে গোপাল নিজের কৃষিজমিতে সেচ দিচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় গোপালকে লক্ষ্য করে পর পর তিন রাউন্ড গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। এর পরই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন গোপাল। গুলির শব্দ শুনে এলাকার মানুষ তড়িঘড়ি ছুটে এসে গোপালকে উদ্ধার করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আপাতত সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। বর্তমানে ওই তৃণমূল নেতার অবস্থা স্থিতিশীল। জানা গিয়েছে, একটি গুলি গোপালের হাত ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। এই ঘটনার পরেই এলাকায় শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
স্থানীয় সূত্রে খবর, তেহট্ট থানার দেবনাথপুর এলাকার ‘প্রভাবশালী’ তৃণমূল নেতা গোপাল সরকার এলাকায় গোপাল ভাঙ্গারী নামে পরিচিত। নাটনা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাঘাখালি, শিরিষখালি-সহ একাধিক উদ্বাস্তু অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে বাম আমলে সরকারি খাস জমি দখল করে বসবাস শুরু করেন উদ্বাস্তু মানুষজন। অভিযোগ, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে গোপাল সেই সমস্ত জমি থেকে উদ্বাস্তুদের উচ্ছেদ করে নিজের কব্জায় নিতে শুরু করেন। একের পর এক সরকারি জমির দখল করে তা মোটা অঙ্কের বিনিময়ে বিক্রি করেন গোপাল। কৃষিজমি থেকে রাতের অন্ধকারে মাটি কেটে বিক্রি করা, সরকারি জমিতে পুকুর কাটা, পুকুর মালিকদের কাছ থেকে তোলা আদায় করা এবং দেবোত্তর সম্পত্তি বেনামে দখল করার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে গোপালের বিরুদ্ধে। ২০২২ সালে একটি সরকারি জমির দখলদারি নিয়ে মামলা হয় গোপালের বিরুদ্ধে। একাধিক ব্যক্তিকে জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। তৎকালীন মহকুমাশাসক ব্লক ভূমি রাজস্ব (বিএলআরও) আধিকারিককে গোপালের বিরুদ্ধে এফআইআর করে তদন্তের নির্দেশ দেন। শুরু হয় তদন্তও। কিন্তু মাস খানেক পর কোনও অজ্ঞাত কারণে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় তদন্তপ্রক্রিয়া। স্থানীয়দের দাবি, শাসকদলের ‘প্রভাবশালী’ নেতাদের সঙ্গে গোপালের ঘনিষ্ঠতার কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করার সাহস পাননি।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বিজেপি নেতা রবিন ঘোষ বলেন, “শাসকদলের প্রভাব খাটিয়ে গোপাল এলাকা জুড়ে জমি দখল, সন্ত্রাস ও তোলাবাজি চালিয়ে গিয়েছে। গোপালের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করতে গেলে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
যদিও তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা বলেন, “কোনও রকম বেআইনি কার্যকলাপকে দল কিংবা প্রশাসন প্রশ্রয় দেয় না। আইন আইনের পথে চলবে।” স্থানীয় বাসিন্দা মায়ারানি সরকারের দাবি, শুধু জমি নয় স্থানীয় মহিলাদের প্রতিও কুনজর ছিল গোপালের। তিনি বলেন, “আমরা কিছু বলতে গেলেই বাড়িতে মস্তানবাহিনী চড়াও হত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy