Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Higher Secondary Exam 2024

প্রসব যন্ত্রণা নিয়েই হাসপাতালে পরীক্ষা

১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। ইসলামপুর থানার বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দা জেসমিনা এত দিন ঠিকঠাক পরীক্ষা দিতে পারলেও বৃহস্পতিবার রাত থেকেই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় তার।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডোমকল শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৫:৫৯
Share: Save:

প্রসব যন্ত্রণা নিয়েই পরীক্ষা দিল ছাত্রী। ইসলামপুর থানার হুদাহেরামপুর উচ্চতর বিদ্যালয়ের এ বারের উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী জেসমিনা খাতুনের পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল ইসলামপুরের চক এসসিএম হাই স্কুলে। এত দিন সেখানে পরীক্ষা দিলেও শুক্রবার দর্শন পরীক্ষার দিন তার পক্ষে পরীক্ষাকেন্দ্রে বসে আর পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়নি। যন্ত্রণায় কাতর অবস্থায় ডোমকল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।

ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা বিষয়টি প্রশাসনকে জানানোর পরে মহাকুমা প্রশাসনের কর্তাদের উদ্যোগে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং ডোমকল মহাকুমা হাসপাতালেই চিকিৎসারত অবস্থায় পরীক্ষা দেয় সে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসব বেদনা নিয়ে ওই ছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছে। গোটা বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতেই হয়। চিকিৎসকেরাও নিয়মিত নজর রাখছে তার উপরে।

১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। ইসলামপুর থানার বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দা জেসমিনা এত দিন ঠিকঠাক পরীক্ষা দিতে পারলেও বৃহস্পতিবার রাত থেকেই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় তার। শেষ পর্যন্ত তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় মহাকুমা প্রশাসনের কাছে। প্রশাসনের তরফেই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে সেখান থেকে ব্যবস্থা হয় পরীক্ষা নেওয়ার। ছাত্রীর বাবা জমসেদ আলি মণ্ডল বলছেন, ‘‘প্রশাসন উদ্যোগ না নিলে মেয়ের হয়তো এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষা দেওয়া হতো না। তবে যন্ত্রণা নিয়েও যে মেয়ে পরীক্ষা দিতে বসেছে মেয়ে তার জন্য বাবা হিসেবে গর্বিত আমি।’’ তবে এই ঘটনা নিয়ে ছাত্রীর পরিবারের দিকেও আঙুল উঠেছে। প্রশাসন থেকে চিকিৎসক মহল ও শিক্ষকদের একটা অংশের দাবি, কম বয়সে বিয়ে না দিলে হয়তো আজকে তার পরীক্ষাটা সুস্থ ভাবেই সে দিতে পারত। এই ঘটনা থেকে বাবা-মায়েদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।

জেসমিনার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে বিয়ে হয়েছে তার। বিয়ের পরেও লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে সে। লেখাপড়ার প্রতি তার আগ্রহ দেখে বাহবা দিচ্ছেন অনেকেই। তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জীবকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েও যে সে পরীক্ষা দিচ্ছে এর জন্য যেমন তাকে বাহবা দেব। ঠিক তেমন ভাবেই ওই ছাত্রী এবং তার অভিভাবকদের বলব, এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে। কম বয়সে বিয়ে দেওয়ার জন্যই আজকে একটি জটিল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে তাকে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটা পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।’’

ডোমকল মহকুমা ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার অর্জুন হালদার বলছেন, ‘‘এক জন ছাত্রী প্রসব বেদনা নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রশাসনের তরফে তার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের চিকিৎসকেরাও তার দিকে নজর রেখেছেন সর্বদা। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও যেন সে পরীক্ষাটা দিতে পারে তার যাবতীয় ব্যবস্থা আমরা করেছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Domkal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy